Thikana News
০১ নভেম্বর ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫





 

৩৭ হাজার রাজাকারের তালিকা প্রকাশ হচ্ছে

৩৭ হাজার রাজাকারের তালিকা প্রকাশ হচ্ছে





 
একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের নিরীহ শান্তিপ্রিয় অসহায় মানুষকে হত্যা, নির্যাতন, বসতবাড়ি ত্যাগে বাধ্য করা এবং হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীকে সক্রিয় সহযোগিতা করেছে, এমন ব্যক্তিদের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তারা দেশে রাজাকার হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিকামী বাঙালির কাছে আজও চরম ঘৃণার পাত্র হয়ে আছে। বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকারী আলবদর বাহিনীর সদস্যদেরও পৃথক তালিকা করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) সূত্রে জানা যায়, সক্রিয়ভাবে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা, হানাদার পাক বাহিনীকে সক্রিয় সহযোগিতা করে, তাদের পৃথক তালিকা প্রণীত হয়েছে। এদের সংখ্যা ২৭ হাজার। এরা পাক বাহিনীর কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের ধরিয়ে দিয়েছে, তাদের ঘরবাড়ির ঠিকানা দিয়েছে। পাক বাহিনীকে তাদের বাড়িতে নিয়ে গেছে। মুুক্তিযুদ্ধের পক্ষের স্থানীয় নেতা, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম দিয়ে বাড়িঘর চিনিয়ে সক্রিয় সহায়তা করে। থানা, ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা, ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, ছাত্রলীগ নেতাদের বাড়ি চিনিয়ে সঙ্গে নিয়ে গেছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রভাবশালী লোকদের ঘরবাড়িতে নিয়ে গেছে। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের উল্লিখিত ব্যক্তিদের বাড়িতে, হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। তাদের হত্যা, বাস্তুভিটাচ্যুত করেছে। নারীদের ধরে নিয়ে গিয়ে পাক বাহিনী কর্তৃক পাশবিক নির্যাতনে সহযোগিতা করে এবং নিজেরা পাশবিক নির্যাতন করে। মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলাম ও জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন নেতাকর্মীরা রাজাকার বাহিনী সংগঠিত করে। প্রধানত জামায়াতে ইসলামী এ ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা রাখে। সাংগঠনিকভাবে মুসলিম লীগের তেমন শক্তি ছিল না। তবে মুসলিম লীগের জেলা, থানা পর্যায়ের নেতারা শান্তি কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন। রাজাকার বাহিনী গড়ে তুলতে মুসলিম লীগ ছিল জামায়াতের প্রধান সহযোগী।
জানা যায়, সক্রিয় ভূমিকা পালনকারীদের পাশাপাশি পৃথক একটি তালিকা করা হয়েছে, যারা স্বতঃপ্রণোদিত বা রাজনৈতিক বিশ্বাস থেকে হানাদার পাক বাহিনীর সহায়ক হিসেবে রাজাকার বাহিনীতে সম্পৃক্ত হননি। জীবন বাঁচাতে নিরুপায় হয়ে তারা রাজাকারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন। এদের সংখ্যা ১৫ হাজারের বেশি। সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বাধীন কমিটি এই তালিকা করেছে। ইউনিয়ন, উপজেলা থেকে প্রাপ্ত তালিকার ভিত্তিতে চূড়ান্ত তালিকা প্রণীত হয়েছে। জেলা, উপজেলা প্রশাসনের রেকর্ড এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে এদের নাম পাওয়া যায়। স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিবর্গ, মসজিদের ইমাম, শিক্ষক, সমাজসেবী, রাজনৈতিক কর্মী, নেতা যারা এখনো বেঁচে আছেন, তাদের কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে নাম সংগ্রহ করা হয়। উপজেলা ও ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল, মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে এবং পাক হানাদার বাহিনীর সহযোগীদের কাছ থেকেও তাদের সহযোগীদের নাম পাওয়া গেছে। জামুকা থেকে এসব নাম দুই দফা যাচাই করা হয়। রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণভাবে নির্দোষ, নিরপরাধ ব্যক্তিদের নাম এসেছে কি না, তা যাচাই করা হয়। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা ও কমান্ডারদের কাছ থেকে বিশ্বাসযোগ্য অনেক তথ্য সংগৃহীত হয়। রাজাকারদের এই তালিকা প্রকাশ করা হবে। তবে তাদের শাস্তিবিধান করা হবে কি না, তা নিশ্চিত নয়। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাপ্তাহিক ঠিকানাকে বলেন, তিনি রাজাকারদের পৃথক তালিকা করার কথা বলেননি। কিছু কিছু পত্রিকায় ভুলভাবে তার বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, তালিকা একটি হবে। তবে আমি মনে করি, রাজাকারদের কেউ কেউ বাধ্য হয়ে জীবন বাঁচাতে রাজাকার হিসেবে নাম অন্তর্ভুক্ত করেন।  
 

কমেন্ট বক্স