উৎপাদক পর্যায়ে যে লেবু ছয়-সাত টাকায় বিক্রি হচ্ছে, সেটা ঢাকায় এসে কেন ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে সেই প্রশ্নে রেখে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম বলেছেন, ভ্যালু চেইন ও সাপ্লাই চেইনকে আরও উন্নত করতে হবে।
১২ মার্চ (মঙ্গলবার) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরির সঙ্গে বাংলাদেশ-জাপান অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) সম্পাদনের জন্য আলোচনা শুরুর বিষয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সামনে এ প্রশ্ন করেন তিনি।
আহসানুল ইসলাম বলেন, ‘উৎপাদক পর্যায়ে যারা উৎপাদন করছেন, সেখানে পরিবহন ব্যবস্থা আছে। সেই পরিবহন ব্যবস্থা থেকে পাইকারি বাজার আছে। এগুলো আরও ভালো করার সুযোগ আছে। আমার এলাকায়ও লেবু হয়, দেলদুয়ারে প্রচুর লেবুর বাগান আছে। সেখানে অনেক জায়গায় কেবল লেবুর ফুল উঠছে। কিছু কিছু উৎপাদন হচ্ছে। সেখানে ছয় থেকে সাত টাকায় লেবু বিক্রি হচ্ছে। ছয়-সাত টাকার লেবু, ঢাকায় এসে ২০ টাকা হয় কেন? এটাই ভ্যালু চেইন, সাপ্লাই চেইন আরও উন্নত করতে হবে।’
বাজারে স্বস্তিতে আছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাজার স্বস্তিতে আছে বলে আমি মনে করি। বাজার তদারকিতে আমি কোনো অস্থিরতা পাইনি, আপনাদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগও পাইনি। তেলের মূল্য ১৭৩ টাকা থেকে ১৬৩ টাকা আমরা নির্ধারণ করে দিয়েছি। খোলা বাজারে ১৪৯ টাকায় তেল বিক্রি হচ্ছে। বাজারে যাতে সরবরাহ ঠিক থাকে, সেটা আমরা নিশ্চিত করছি।
আহসানুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে চিনি, ডালসহ কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের কোনো স্বল্পতা কিংবা সংকট নেই। কাজেই এটিকে আমি অবশ্যই স্বস্তি বলব। লেবু একটি মৌসুমি পণ্য। কৃষিপণ্যগুলো মৌসুমি হয়। কৃষি বিপনন অধিদফতর নিয়ে আমি আজও কথা বলেছি। কৃষিমন্ত্রী, কৃষি সচিব ও জনপ্রশাসনের সঙ্গে আজও কথা বলেছি, যাতে তারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তিনটি কাজ। শুল্ক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আমদানি পণ্যের বাজারে বিতরণ নিশ্চিত করা। পণ্য আমদানি কিংবা উৎপাদনও আমাদের কাজ না। দ্বিতীয় হলো, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন যেসব পণ্য এখানে উৎপাদিত হচ্ছে, যেমন তেল, চিনিসহ অন্যান্য জিনিস, সেগুলোর বাজারে সরবাহ যাতে মসৃণ থাকে।’
প্রতিমন্ত্রী জানান, ‘কৃষি উৎপাদিত পণ্য কৃষি বিপনন বিভাগ দেখে। আমরা বাজার তদারকি করি। বাজার তদারকি করে আমরা যেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি, অনেকেই আমাদের বাজারে যাওয়াটা লম্ফজম্ফ মনে করছেন, কেউ মনে করছেন, নতুন আসছেন শিখতে, শিক্ষানবিস হিসেবে দেখছেন। আমরা এই সমালোচনাকে গুরুত্ব দিই না, আমরা নিজেদের চেষ্টার বিষয়টি দেখি।’
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন, দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করার। সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। পাইকারি বাজার, খুচরা বাজারে যাচ্ছি। সামাজিক মাধ্যমে ট্রল হচ্ছে, আগে কী সাপ্লাই চেইন ছিল না? আমি কখনোই বলিনি, সাপ্লাই চেইন ছিল না, ভ্যালু চেইন ছিল না। এই ভেল্যু চেইনের উপকরণগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে,’ বলেন প্রতিমন্ত্রী।
পাইকারি বাজারে অনেকগুলো মধ্যস্বত্বভোগী আছে উল্লেখ করে আহসানুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। যারা পাইকারি বাজারে থাকবেন, তাদের পরিচয়পত্র, ট্রেড লাইসেন্স থাকার কথা। সেটা নিয়েও টকশো হচ্ছে, আমি নাকি এখন খুচরা বাজারেও ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে মুদি দোকান চালাতে বলেছি? বলি একটা, সেটা ট্রান্সফার হয়ে যায় আরেকটা।’
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়ন সচিব তপন কান্তি ঘোষ প্রমুখ।
ঠিকানা/ছালিক