Thikana News
৩১ অক্টোবর ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫





 

ক্যাডেট কলেজ ক্লাব অব নর্থ আমেরিকার পিঠা উৎসব

ক্যাডেট কলেজ ক্লাব অব নর্থ আমেরিকার পিঠা উৎসব নিউইয়র্ক : ক্যাডেট কলেজ ক্লাব অব নর্থ আমেরিকার পিঠা উৎসবে অংশগ্রহণকারীরা।





 
বাংলাদেশি ১২টি ক্যাডেট কলেজের সাবেক স্টুডেন্ট ক্যাডেটদের নিয়ে গঠিত ক্যাডেট কলেজ ক্লাব অব নর্থ আমেরিকার (সিসিসিএনএ) পিঠা উৎসব ও মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হলো ২ মার্চ। লং আইল্যান্ডের আমেরিকান লিজিয়ন হলে রাতের ওই অনুষ্ঠানে ক্যাডেট ও তাদের পরিবারের আড়াই শতাধিক সদস্য যোগ দেন। নর্থ আমেরিকার ৫০টি স্টেটের মধ্যে প্রায় সব স্টেটেই বাংলাদেশের সাবেক ক্যাডেটরা রয়েছেন। এবারের অনুষ্ঠানে প্রায় সব ক্যাডেট কলেজের সাবেক ক্যাডেটরা যোগ দেন। বাংলাদেশে মোট ১২টি ক্যাডেট কলেজের মধ্যে ছেলেদের নয়টি ক্যাডেট কলেজ ও মেয়েদের দুটি ক্যাডেট কলেজের সাবেক স্টুডেন্ট অনুষ্ঠানে অংশ নেন। একটি ক্যাডেট কলেজের মেয়ে ক্যাডেটরা ক্লাবের সঙ্গে থাকলেও এবারের অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। নিউইয়র্ক, নিউজার্সি ও কানেক্টিকাট থেকে সাবেক ক্যাডেটরা বেশি যোগ দেন।
বাংলাদেশে যেসব ক্যাডেট সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন, বর্তমানে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের ডিফেন্স অ্যাটাশেসহ দায়িত্ব পালনরত সাবেক ক্যাডেট এবং যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন দায়িত্বশীল পদে রয়েছেন, এমন পেশাজীবীরা সেখানে যোগ দেন। ক্যাডেটদের নিজ নিজ কলেজের সিরিয়াল অনুযায়ী অ্যাপায়ন করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ডা. খন্দকার মাসুদ রহমান (জেসিসি), কর্নেল (অব.) আকবর মিয়া (এফসিসি), প্রফেসর ড. ইউসূফ (এমসিসি), ডা. হামিদুজ্জামান (আরসিসি) প্রমুখ।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে ক্যাডেট কলেজে যারা পড়াশোনা করেছেন, সেসব ক্যাডেটের কয়েকজন অনুষ্ঠানে তাদের সময়কার স্মৃতিচারণা করেন। প্রত্যেকে দুই মিনিট করে বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশি ঐতিহ্যবাহী সব শীতের পিঠা অনুষ্ঠানে আনা হয়। এর মধ্যে ৮০ ভাগ পিঠাই তৈরি করেছেন সাবেক ক্যাডেটদের স্ত্রীরা এবং সাবেক মেয়ে ক্যাডেটরা। তবে কেউ কেউ রেডিমেট তৈরি করা পিঠাও নিয়ে এসেছেন। ভাপা, পুলি, পাকন, চিতই, দুধ চিতইসহ বিভিন্ন ধরনের পিঠা পিঠাপ্রেমীদের তৃপ্ত করে। সেখানে সবাই দেশীয় পিঠার স্বাদ উপভোগ করেন। অনুষ্ঠানে পিঠা তৈরিকারকদেরও ধনবাদ জানানো হয়। পিঠা পরিবেশন করা হয় সন্ধ্যা সাতটার দিকে, চলে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত। এই সময়ে অনেক দিন পর দেখা হওয়ায় একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন ও খোঁজখবর নেন। অনুষ্ঠানটি ক্যাডেটদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
পরে অতিথিদের নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানানো হয়। দেশীয় ও এখানকার বিভিন্ন ধরনের খাবার দিয়ে অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয়।
অনুষ্ঠানে নারী ক্যাডেট ও ক্যাডেটদের স্ত্রীদের জন্য একটি বিশেষ পর্ব ছিল। ৩৫ মিনিটের ওই পর্বে তারা বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরে নৃত্য পরিবেশন করেন। তাদের নাচ অতিথিদের মুগ্ধ করে।
অনুষ্ঠানে যারা পিঠা তৈরি করেছেন, তাদের মধ্য থেকে মেয়ে ক্যাডেট ও ক্যাডেটদের স্ত্রীদের পুরস্কার দেওয়া হয়। পুরস্কার ঘোষণা করেন ক্লাবের সভাপতি ডা. খন্দকার মাসুদ রহমান। পুরস্কার তুলে দেন ক্যাডেটদের স্ত্রীরা। তাদের সম্মান জানানোর জন্যই তাদের দিয়ে পুরস্কার প্রদান করা হয়।
ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ডা. খন্দকার মাসুদ রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের স্বাগত জানান ও অংশগ্রহণ করার জন্য ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে ক্লাবের কর্মকর্তারা যোগ দেন।
ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ডা. খন্দকার মাসুদ রহমান বলেন, আমাদের ছেলে ক্যাডেট ও নারী ক্যাডেটরা যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রে অনেকে আছেন, যারা দেশ থেকে আসার পর এখানে বিভিন্ন পেশায় যুক্ত আছেন। এখানেও তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা, ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বিভিন্ন পেশায় ভালো করছেন। সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন উচ্চপদে দায়িত্ব পালন করা ক্যাডেটরাও এখানে বাস করছেন।
২০১৮ সালে সিসিসিএনএ ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে নিয়মিতভাবে পিঠা উৎসবের আয়োজন করছে প্রতিবছর। পিঠা উৎসব ও গেট টুগেদার ছাড়াও তারা বছরে বিভিন্ন ধরনের পাঁচ-ছয়টি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন। বাংলাদেশ থেকে যেসব ক্যাডেট বিভিন্ন প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য কাজে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন, তাদের কোনো ধরনের সহায়তার প্রয়োজন হলে তারা সহায়তাও করেন। বাংলাদেশ থেকে যেসব ক্যাডেট এখানে পড়তে আসতে চান, তারা সহায়তা চাইলেও করা হয়।
বাংলাদেশেও ক্যাডেট ক্লাব রয়েছে। এটি অনেক বড় সংগঠন। যুক্তরাষ্ট্রে এই ক্লাবের সদস্য আট শতাধিক। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেটে তারা আছেন। অনুষ্ঠানে কাছের স্টেটগুলো থেকে সাধারণত ক্যাডেটরা বেশি আসেন। তবে নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, কানেক্টিকাট, ভার্জিনিয়া, মেরিল্যান্ড, জর্জিয়াসহ বিভিন্ন স্টেটে বেশি সংখ্যক ক্যাডেট আছেন।
এ ধরনের সুন্দর একটি সন্ধ্যা উপহার দেওয়ার জন্য ক্লাবের সভাপতি, সেক্রেটারিসহ পরিচালনা পরিষদের সবাইকে ধন্যবাদ জানান সদস্যরা। অতিথিরা একরাশ আনন্দ নিয়ে ফিরে যান নিজ নিজ আবাসস্থলে।
 

কমেন্ট বক্স