Thikana News
২১ নভেম্বর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা

প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা
উপদেশমূলক কথা একজন মানুষের জীবনকে বদলে দেওয়ার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একজন মানুষকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন সঠিক সময়ে সঠিক উপদেশ। বাংলদেশে সবচেয়ে সস্তা জিনিস হলো উপদেশ কিন্তু উন্নত বিশ্বে সবচেয়ে দামি জিনিস হলো উপদেশ। চারদিকে উপদেশ দেওয়ার মতো মানুষের অভাব না হলেও সঠিক উপদেশ দেওয়ার মতো মানুষ খুবই কম। আর এর জন্য আমরা কিছু মোটিভেশনাল বই অথবা অনেক অভিজ্ঞতাপূর্ণ মনীষীদের উপদেশমূলক লেখা বা উপদেশমূলক কথা জানতে বা পড়তে পারি। শুধু উপদেশমূলক কথা জানলে বা পড়লেই হবে না, যদি আপনি সেগুলো পড়ে নিজেকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করেন, তবেই সেই উপদেশ আপনার জীবনে ভালো ফল বয়ে আনতে পারে।
কখনো কখনো হয়তো প্রত্যাশার সামান্যই প্রাপ্তিতে পরিণত হওয়া উচিত। সব প্রত্যাশা প্রাপ্তিতে পরিণত হলে বেঁচে থাকার উৎসাহটাই হয়তো হারিয়ে যাবে। কখনো ব্যর্থ না হলে সাফল্যের অনুভূতিটা বোঝা যায় না। প্রত্যাশা ততটুকু থাকা প্রয়োজন, যতটুকু না থাকলে বেঁচে থাকার আগ্রহটা হারিয়ে যায়। সব সময় সকল প্রত্যাশা প্রাপ্তিতে পরিণত হলে হয়তো অহংকার চলে আসতে পারে। আর তখন যদি কোনো একটা কাজে প্রাপ্তি না আসে, তখন হতাশা ঘিরে ধরবে। এ ক্ষেত্রে আমার মনে হয় প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যে বেশ ফারাক থাকা প্রয়োজন। নয়তো অল্পতেই ভেঙে পড়তে হবে, গুটিয়ে যেতে হবে। আবার যদি ফারাকটা খুব বেশি হয়ে যায়, তখন মনে হয় না ফলাফল সুখকর হবে। তাই প্রত্যাশা এমন রাখা উচিত, যেখানে প্রাপ্তির বেশ ভালো একটা সম্ভাবনা থাকে।
একজন সৎবন্ধু যার নেই, তার জীবন দুঃসহ। সময় তাদের জন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে, যারা তার সদ্ব্যবহার করতে জানে। আমাদের জীবন আমাদের ইচ্ছার ওপর নয়, আমাদের কর্মের ওপর দণ্ডায়মান। জীবন যতক্ষণ আছে, বিপদ ততক্ষণ থাকবেই। হ্যাঁ এবং না কথা দুটো সবচেয়ে পুরোনো এবং সবচেয়ে ছোট। কিন্তু এ কথা দুটো বলতেই সবচেয়ে বেশি ভাবতে হয়। তুমি কাউকে সহজেই বোকা বানিয়ে দিতে পারবে অথবা কারও সরলতার সুযোগ নিয়ে ঠকিয়ে দিতে পারবে। কিন্তু নিজের বিবেকের কাছে একবার প্রশ্ন করে দেখো, নৈতিকতার দিক দিয়ে কি তুমি নিজেই হেরে গেলে না?
আমি ব্যর্থতাকে মেনে নিতে পারি কিন্তু আমি চেষ্টা না করাকে মেনে নিতে পারি না। টিয়া পাখির মতো মুখস্থ করে বড় বড় সার্টিফিকেট অর্জন করে বড় বড় চাকরি পাওয়াকে শিক্ষা বলে না। শিক্ষা হচ্ছে সেটা, যা একজন মানুষের ভেতরের কুশিক্ষাকে দূর করে সমাজের পরিবর্তনে এগিয়ে আসার উৎসাহ জোগায়। যারা কাপুরুষ, তারাই ভাগ্যের দিকে চেয়ে থাকে, পুরুষ চায় নিজের শক্তির দিকে। তোমার বাহু, তোমার মাথা তোমাকে টেনে তুলবে, তোমার কপাল নয়। অর্থ মানুষকে পিশাচ করে তোলে, আবার অর্থই মানুষকে মহৎও করে তোলে। যে যা-ই বলুক, তুমি তোমার নিজের পথে চলো।
স্বপ্ন সেটা নয়, যেটা মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখে; স্বপ্ন সেটাই, যেটা পূরণের প্রত্যাশা মানুষকে ঘুমাতে দেয় না। কর্মদক্ষতাই মানুষের সবচেয়ে বড় বন্ধু। সৎ যা তা নির্বিচারে সৎ, যার কোনোরূপ বিচার কিংবা বিশ্লেষণ প্রয়োজন হয় না। স্রষ্টা প্রকৃতির মাধ্যমে সৎ কর্মকারের পুরস্কার দিয়ে থাকেন। একদিন তার ইচ্ছাগুলো পূরণ হয়ে যায়, কোনো না কোনোভাবে। কেবল সৎ মানুষকে মানুষ ভালোবাসে। কথায় আছে, সত্যের কাঠি বাতাসে নড়ে।
সকলেই দণ্ডকে ভয় করে, জীবন সকলের প্রিয়। সুতরাং নিজের সঙ্গে তুলনা করে কাউকে প্রহার করবে না কিংবা আঘাত করবে না। এই পৃথিবী কখনো খারাপ মানুষের খারাপ কর্মের জন্য ধ্বংস হবে না। যারা খারাপ মানুষের খারাপ কর্ম দেখেও কিছু করে না, তাদের জন্যই পৃথিবী ধ্বংস হবে। জীবনে দুটি দুঃখ আছে। একটি হলো তোমার ইচ্ছা অপূর্ণ থাকা, অন্যটি হলো ইচ্ছা পূর্ণ হলে আরেকটির প্রত্যাশা করা।
প্রাপ্তি আর প্রত্যাশার পার্থক্য হলো দুঃখ। তাই নিজের প্রত্যাশাটা একটু কমিয়ে ফেলুন, দেখবেন আপনার দুঃখও কমে গেছে। টাকা-পয়সাহীন মানুষ তিরহীন ধনুকের মতো। পরের উপকার করা ভালো কিন্তু নিজেকে পথে বসিয়ে নয়। মাত্র দুটি পন্থায় সফল হওয়া যায়! একটি হচ্ছে সঠিক লক্ষ্য নির্ধারণ করা, ঠিক যা তুমি করতে চাও। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে, সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়া। যে নিজেকে অক্ষম ভাবে, তাকে কেউ সাহায্য করতে পারে না। সুন্দর পোশাক পরিহিত ব্যক্তি মাত্রই ভদ্রলোক নয়। আগুনকে যে ভয় পায়, সে আগুনকে ব্যবহার করতে পারে না। আইন মাকড়সার জালের মতো, ক্ষুদ্র কেউ পরলে আটকে যায়, বড়রা ছিঁড়ে বেরিয়ে আসে।
বিলাসিতা করার মধ্যেও সীমাবদ্ধতা থাকা উচিত। অনুকরণ নয়, অনুসরণ নয়, নিজেকে খুঁজুন, নিজেকে জানুন, নিজের পথে চলুন। স্বপ্ন তাকে নিয়েই দেখো, যে শুধু স্বপ্ন দেখায় না, বাস্তবায়নও করে। কিন্তু এমন কাউকে নিয়ে স্বপ্ন দেখো না, যে স্বপ্ন দেখিয়ে নিজেই হারিয়ে যায়। একজন সৎ ব্যক্তি সকল পক্ষ কর্তৃক সম্মানিত হয়ে থাকেন। একটি মহৎ হৃদয় যার আছে, তিনি অতুলনীয় ঐশ্বর্যের অধিকারী। চিন্তা করো বেশি, বলো অল্প এবং লেখো তার চেয়েও কম। দুঃখ, ঘৃণা ও ভয়কে হাসিমুখে বরণ করতে পারলে সংসারে শান্তি আসে। বিনাশ্রমে অর্জিত সম্পদ দুঃখজনক পরিণতি ডেকে আনে। অল্পতে যারা সন্তুষ্ট, তাদের ধ্বংস নেই।
কোনো কাজে যার নিজস্ব পরিকল্পনা নেই, তার সাফল্য অনিশ্চিত। ভীরুরা যখন নিরাপদ অবস্থানে থাকে, তখনই অন্যকে শাসাতে সাহস পায়। প্রকৃতি হচ্ছে প্রতিভাবানদের শিক্ষক। মন অনেক কিছুই চাইবে, কিন্তু তা বিবেক দিয়ে বিচার করবে। তাহলেই তুমি বুঝবে কোনটা তোমার করা উচিত আর কোনটা করা উচিত নয়। যে বিজ্ঞানকে অল্প জানবে, সে নাস্তিক হবে আর যে ভালোভাবে বিজ্ঞানকে জানবে, সে অবশ্যই ঈশ্বরে বিশ্বাসী হবে। প্রকৃতি তার গোপন কথা একদিন বলবেই। সকলের প্রাপ্তি হোক প্রত্যাশার মতো।

কমেন্ট বক্স