এবিএম সালেহ উদ্দীন
মানুষ প্রকৃতির সন্তান। পৃথিবী, প্রকৃতি কিংবা এই ধরিত্রীর কোলে মানুষের চিরকালীন আবির্ভাবের পৃষ্ঠছায়ায় পিতার ঔরসেই মাতৃজঠরে সন্তানের আগমন ঘটে। মানবকুল নিয়ে আমাদের বিশ্বাসের একটা ভিত্তি আছে। পৃথিবীর অন্যতম ধর্ম, বিশেষ করে ইসলামের বিধানমতে, মানবজাতির আদি পিতা আদম (আ.) আদি মাতা হাওয়া (আ.) আর হজরত মরিয়ম-পুত্র ঈসা (আ.) ছাড়া পৃথিবীতে তাবত মানুষের আগমন ঘটে চলছে মাতা-পিতার মিলনের মাধ্যমে। পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর পিতা-মাতার আদর-যত্ন এবং অপার মায়া-মমতার শীতল ছায়ায় সন্তান বড় হয়ে ওঠে। মানুষ হওয়ার সুযোগ পায়। ইহাই প্রকৃতির চিরায়ত নিয়ম। সন্তানের জন্য বাবা-মায়ের আদর ও ভালোবাসার কোনো তুলনা হয় না। মা ও বাবার ভালোবাসার পরশ সন্তানকে সার্থক ও সফল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। মায়ের স্নেহ, মায়া-মমতা আর বাবার যোগ্য নেতৃত্বে সন্তান বড় হয়।
প্রকৃতিকে ইংরেজিতে বলে নেচার। এই বিশ্বচরাচরে মানুষ হচ্ছে প্রকৃতি কিংবা নেচারেরই একটা অংশ। ‘নেচার ইজ বিউটিফুল’। প্রকৃতি মানুষকে যেমন বাঁচিয়ে রাখে, তেমনি প্রকৃত মানুষই পৃথিবীতে সম্মানের অধিকারী। মানুষ তার দেহ ও জৈব ধর্মের সমাহারে পরিপুষ্ট হয়ে সংসারধর্মের মাধ্যমে ধরিত্রীকুলকে আলোকময় করে তোলে। বলা যায়, এ জন্য মানুষের বৈশিষ্ট্যকুলের শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ পায় এবং বিশ্বজগৎ উজ্জ্বল ও অর্থময় হয়ে ওঠে। এই বৈশিষ্ট্যের পেছনে মা-বাবার অবদানই সবচেয়ে বেশি। পৃথিবীর কোনো কিছুর সঙ্গে তাদের অবদানের তুলনা করা সম্ভব নয়। মহান আল্লাহ তায়ালা পিতা-মাতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং তাদের প্রতি সর্বদা কোমল ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন। অর্থাৎ পিতা-মাতার আনন্দে আল্লাহ সন্তুষ্টি এবং তাদের অসন্তুষ্টিতে খোদা অসন্তুষ্ট হয়ে যান। এ ব্যাপারে বিশ্বনবীর (সা.) বাণী হচ্ছে, ‘যদি সদর দরজা দিয়ে বেহেশতে যেতে চাও, তাহলে অবশ্যই তোমার পিতা-মাতাকে সন্তুষ্ট রাখবে।’
পিতা হচ্ছেন সংসারের অধিপতি। সন্তান-সন্ততির রক্ষাকর্তা। সংসারকে সর্বসুন্দর আঙ্গিকে অর্থময় করে তোলার অলংকরণ হচ্ছে সন্তান। অপরূপ ভুবনের মানিকরতন প্রিয় সন্তানকে বড় করে তোলার অবিরাম চেষ্টায় বাবা-মায়ের কষ্টসহিঞ্চু ত্যাগের মহিমায় সন্তান একদিন বিখ্যাত হয়। বাবা-মায়ের আরাধ্য সাধনা থাকে, তাদের সন্তান যেন সুখে থাকে। ভালোভাবে শান্তিময় জীবন যাপন করে। সন্তানের সুখ-শান্তির মধ্য দিয়েই তাদের শত কষ্ট-বেদনা দূরীভূত হওয়ার সুযোগ হয়। সন্তান-সন্ততির স্বাচ্ছন্দ্যের মধ্য দিয়ে একজন বাবা সমাজেরও আদর্শ পিতা হয়ে ওঠেন। অর্থাৎ নিজের সন্তানের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে একজন আদর্শ পিতা দেশ, সমাজ, সংসারের জন্য মডেল হয়ে উঠতে পারেন এবং তিনিই সবচেয়ে সৌভাগ্যবান।
এ মুহূর্তে মনে পড়ছে টমাস ম্যালকামের একটি উক্তি, ‘যিনি শুধু সন্তান-সন্ততির জন্য নয়, মানুষ ও দেশের জন্য অবদান রেখে যেতে পারেন, তিনি নিঃসন্দেহে সৌভাগ্যবান।’ পৃথিবীতে এমন মানুষও আছেন, যাদের কোনো সন্তান ছিল না। কিন্তু তাদের অনেকে জীবনকে বিলিয়ে দিয়েছেন মানুষের জন্য। অর্থাৎ মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করার মাধ্যমে যে সম্মান, মর্যাদা ও সুনাম প্রতিষ্ঠিত হয়; তা-ই অক্ষয়। এমন মানুষকেই সুসন্তান বলা যায়। আবার অনেক কুসন্তানের কারণে বাবা-মায়ের ইজ্জত-সম্মান ভূলুণ্ঠিত হয়। কলঙ্ক কালিমায় ধুলোয় মিশে যায় সকল আশা, স্বপ্ন ও সকল স্বাদ।
পৃথিবীতে মানুষের একবারই আগমন ঘটে। পৃথিবীর রূপ-সুন্দর পরিবেশ, সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, প্রেম-বিরহ আর অফুরান ভালোবাসাকে উপজীব্য করেই মানুষ জীবনকে সার্থক ও অর্থময় করে তুলতে পারে। আবার অনেক অনাকাক্সিক্ষত ব্যর্থতার গ্লানিতে কোনো কোনো জীবন দুঃসহ হয়ে ওঠে এবং সেই জীবন কারও কাম্য নয়। আমাদের প্রতিপাদ্য হচ্ছে আদর্শ বাবা-মা আর আদর্শ সন্তানের দায়িত্ব এবং কর্তব্য সম্পর্কে। সন্তানের সুখ-শান্তির জন্য যে বাবা-মা জীবনের সর্বস্ব বিলীন করেন, অনেক কষ্ট সহ্য করে যে পিতা কিংবা মাতা সন্তানকে বড় করলেন; সেই পিতা-মাতাকে অবহেলা করা গুরুতর অপরাধ এবং মহা পাপ। বিষয়টি যেমন মনে রাখা উচিত, তেমনি একজন পিতাকেও তার সন্তানকে সত্যনিষ্ঠতা এবং মানুষরূপে গড়ে তোলার বিষয়ে গুরুত্বশীল হতে হবে। আমাদের সমাজে এমন উচ্চাভিলাষী অভিভাবক আছেন, যারা তাদের কুসন্তানের দোষ-ত্রুটি সম্পর্কে অবগত হওয়ার পরও অন্যায়, অপরাধমূলক কার্যক্রম থেকে নিবৃত করেন না। বরং প্রশ্রয় দিয়ে থাকেন। এমনটি হওয়া কিংবা করা উচিত নয়। মনে রাখা উচিত, মাতা-পিতার আদর-সোহাগে যেন সন্তানের জন্য স্বর্গের পথ তৈরি হয়। কোনো বদনাম, কৌলিন্য আর অকল্যাণের মাধ্যমে যেন সর্বনাশা নরকের দিকে ধাবিত না হয়।
জগতে কত রকমের মানুষ আছে। মানুষের আকাক্সক্ষা আর তৃষ্ণার শেষ নেই। কারও মাঝে মন্দ-স্বভাব কিংবা বিনাশ-তৃষ্ণা আবার কারও থাকে পরোপকারের তৃষ্ণা, যা শুধু মানবতার স্বার্থেই নিবেদিত। আমরা শেষোক্ত গুণরাহে আলোকিত থাকতে চাই। মানুষের কল্যাণের পথে নিবিষ্ট থাকতে চাই। বিশ্বনবী (সা.) বলেছেন, ‘পৃথিবীতে সেই খোদার নিকট শ্রেষ্ঠ, যার ভেতর মানবতাবোধ আছে। যার দ্বারা মানবতা উপকৃত হয়, সে-ই পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ।’ আঠারো শতকের কবি কামিনী রায়ের বিখ্যাত কবিতার দুটি লাইন মনে পড়ছে, ‘আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে আসে নাই কেহ অবনী পরে/ সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।’
এমন মহৎ পিতা-মাতার ভালো সন্তানের জন্যই এ পৃথিবী সুন্দর ও সৌকর্যময় হয়ে ওঠে। সার্থক হয়ে ওঠে। অতএব, সে রকম পিতা-মাতা আর আদর্শ সন্তানই প্রকৃতি ও মানবতার কাম্য। কবি গোলাম মোস্তফার একটি বিখ্যাত কবিতার লাইন তো সবারই অবগত, ‘ভবিষ্যতের লক্ষ আশা মোদের মাঝে সন্তরে/ ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে।’ আমরা সে রকম পিতা-মাতা এবং সন্তানের প্রত্যাশা করি, যারা এ বিশ্বকে কলুষমুক্ত ও শান্তিময়রূপে গড়ে তোলার গৌরব অর্জন করে। পৃথিবীতে মানবতার আদর্শ স্থাপন করতে পারে।
বাবা-মায়ের কাছে সন্তান হচ্ছে সবচেয়ে বেশি উৎকৃষ্টতম ফসল। সন্তানকে কখনোই তারা খারাপ মনে করেন না। এ প্রসঙ্গে কাডেন্টিস বলেন, ‘কোনো পিতামাতাই তার সন্তানকে কুৎসিত মনে করেন না।’ আর টমাস আটওয়ের উক্তি হচ্ছে, ‘আমি চিরবিদায় নিচ্ছি না, আমার সন্তানের মধ্যে আমি বেঁচে থাকব বহুদিন।’
এ জন্য সন্তানকে মাতা-পিতার জন্য চিরদিন নিবেদিত থাকতে হবে। তাদের সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। পৃথিবীতে সন্তানের প্রতি যে চিরায়ত চিরন্তন ভালোবাসা আছে, তা হচ্ছে মাতাপিতার ভালোবাসা। তাঁদের ভালোবাসার কাছে আর কোনো কিছুই তুলনীয় নয়।
পৃথিবী আর এই প্রকৃতিমাতার গভীর অভ্যন্তর থেকে একদিন সবার মাঝ থেকে সবাইকেই প্রস্থান করতে হবে। প্রকৃতি ও পৃথিবীর সঙ্গে ক্রমবর্ধমান দূরত্বের প্রভাব অনেক বেশি এবং গভীর। এই পৃথিবীর কাছ থেকে, আপন-আলয় থেকে আমাদের ঘটে যাবে প্রস্থান, চিরবিচ্ছেদ। আসলে মানুষের জীবনটা অগণিত বিচ্ছেদেরই পরম্পরা। গর্ভধারিণী মায়ের মাতৃজঠর থেকে প্রথম বিচ্ছেদের মধ্য দিয়ে ক্রমে ক্রমে বড় হয়ে একে একে বিচ্ছেদের পালাপর্ব শেষে আমরা হারিয়ে যাই চিরতরে। যেমনি আমার বাবা, আমার মা, আমি, আপনি সবাই সেই আদি পিতা-মাতা আদম-হাওয়া থেকে চিরায়ত বিচ্ছেদে একাকার। পিতা-মাতা সন্তান-সন্ততি, বন্ধুবান্ধব তথা সর্বস্বজন হারানোর বেদনা আর নিঃসঙ্গতার অতলস্পর্শী বিরহের মধ্য দিয়ে একদিন আমিও তো হারিয়ে যাব চিরতরে। কেউ থাকবে না। সবাইকে চলে যেতে হবে। কিন্তু উত্তম, ভালো কাজ ও কর্মফল, কীর্তিগাথা ইতিহাস রেখে যেতে পারলেই জীবন সার্থক হবে। স্মৃতি-উচ্ছ্বাস, আনন্দ-বেদনার সঙ্গে বসবাস করেও জীবনকে সাফল্যময় করে তোলা যায়।
পৃথিবীতে যাদের পিতা-মাতা আছেন, সেই সন্তানদের উচিত বাবা-মায়ের সন্তুষ্টির বিষয়টিকে খেয়াল রেখে সঠিক দায়িত্বটি পালন করা। আর যাদের মাতা-পিতা কেউ নেই, সন্তানের উচিত সর্বদা মা-বাবার জন্য প্রার্থনা করা। তাদের আত্মার শান্তি কামনায় মানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করা। আর স্বভাবে নম্রতা অর্জনের মাধ্যমে সমাজকে সুশীল ও পরিশীলিত করে তোলা। যে পিতার কষ্ট ও ত্যাগের বিনিময়ে আমি পরিপুষ্টতা অর্জন করলাম, যার গৌরবের বিধৌত অভিধারায় বড় হলাম, তাঁকে কখনো যেন ভুলে না যাই। বাবা-মায়ের গৌরবকে বহন করেই এ পৃথিবীতে থাকতে চাই। এ মুহূর্তে কবিগুরুর দুটি বিখ্যাত লাইন মনে আসছে, ‘মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে/ মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই,/ এই সূর্যকরে এই পুষ্পিত কাননে/ জীবন্ত হৃদয় মাঝে স্থান যদি পাই।’ মানবকল্যাণ আর মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে, তাদের দুঃখের সহমর্মিতার মাধ্যমে পৃথিবীতে স্মরণীয় হয়ে থাকার সাফল্যই আসল সার্থকতা।
সমাজের কল্যাণ সাধন আর মানুষের প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধাবোধ ও কৃতজ্ঞতার সোপানে নিজেকে সার্থক করে তোলা। মানুষের মতো মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার অতৃপ্ত বাসনায় আমি ও আপনার মাঝে যে ব্যাকুলতা থাকা উচিত, সেদিকে খেয়াল রাখা অপরিহার্য।
আজ জীবনের আশা-ভরসার দোলাচল আর স্বপ্ন-সম্ভারের অকুল সাগরে সাঁতরাই। অচিন পাখির মতো হাবুডুবু খাই। আঁচড়ে পড়ে ধুলোয় লুটিয়ে শত চাইলেও হারিয়ে যাওয়া মা-বাবাকে পাব না। তবু তাঁদের খুঁজে বেড়াই। আমার প্রাণপ্রিয় মাতা-পিতার পুনর্মিলন চাই। কিন্তু তাঁদের সন্ধান পাই না। রবীন্দ্রনাথের একটি গানে আছে, ‘তাঁহারে কোথা খুঁজিছ ভব-অরণ্যে/ ..ওরে মন।/ দেখো দেখো রে/ চিত্তকমলে চরণপদ্ম রাজে..।’ আজ মা-বাবাকে হারিয়ে মনে হয় নিজের বেঁচে থাকার প্রয়োজনটা ক্রমেই নিঃশেষিত। যেমন কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন, ‘হয়তো আমাদের লয়ে অন্যের আজ প্রয়োজন আছে/ মোর প্রয়োজন ফুরাইয়া গেছে চিরতরে মোর কাছে/ কে কবে বাঁচিতে চায়/ জীবনের সব প্রয়োজন যার জীবনে ফুরায়ে যায়।’
আমার বাবা আলহাজ লুৎফর রহমান পণ্ডিত ২০১০ সালের ২৫ ডিসেম্বর ইন্তেকাল করেন। এ জন্য ডিসেম্বর মাসটি এলে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সৌর্যবীর্যের ইতিহাস-বিধৌত স্মৃতিসম্ভারের সঙ্গে বাবার স্মৃতিগুলো আপ্লুত করে। কেননা ডিসেম্বর মাসেই আমার বাবা এ পৃথিবী থেকে চিরকালের জন্য হারিয়ে যান। সে জন্য স্মৃতিপটের সবকিছুতেই আমার পরম শ্রদ্ধেয় বাবার ছবিটি সমুজ্জ্বল হয়ে ওঠে। মনে পড়ে, বাবার সঙ্গে শৈশব থেকে কৈশোরের স্মৃতিসহ সারা জীবনের অযুত স্মৃতি একাকার হয়ে আছে।
জীবনের এই পড়ন্ত বেলা আর গোধূলিতে এখনো প্রাণপ্রিয় মা ও বাবার স্মৃতিগুলোই সতত ভেসে ওঠে। বারবার প্রতিক্ষণ আমার পূজনীয় পিতার শ্মশ্রুমণ্ডিত মুখাবয়ব আর মমতাময়ী মায়ের সুকোমল চাঁদ মুখখানি চোখে ভাসে। কী করব, কেন যেন তাঁদের ভুলতে পারি না। সর্বদা কেন যেন হৃদয়ের টান আর অশ্রুত কান্নায় বুকের মধ্যে তোলপাড় করে। শত-সহস্র যোজন দূরস্থিত নীহারিকা যেমন নক্ষত্রে দানা বাঁধে, আমার মা-বাবার অজস্র স্মৃতি আজ হতভাগ্যের জীবনতরীর মাঝপথে শোক-জ্বালা আর বিচ্ছেদ-বেদনায় দানা বেঁধে আছে। পিতৃহারা, মাতৃহারা এই হতভাগ্যের মনের গভীরে চিনচিনিয়ে গুনগুনিয়ে এখনো কে যেন ডাকে : ‘খোকা আয় আমার কাছে আয়, ফিরে আয় মায়ের আঁচল তলে/ ফিরে আয় বাবার ছায়াতলে।’
অথচ এখনো ‘আমি পড়ে আছি ইস্পাতকঠিন শহরের ছন্দহীন আঁধারে।/ এখানে দোয়েল, কোকিল ঝিঁঝি পোকার ডাক নেই/ নেই কোথাও কুঞ্জবিহারী কুহকিনী/ স্মৃতির দীয়ায় জীবনের দীর্ঘ মাঠ। যেখানে আমার মা নেই, বাবা নেই।’
লেখক : কবি ও প্রাবন্ধিক