নন্দিনী মুস্তাফী
কখনো কারও যে হইনি কবিতা
ইচ্ছে ছিল কেউ লিখুক দু’লাইন,
কিশোরী এই পলল বালার
হাত দু’খানি ছুঁয়ে ছুঁয়ে।
আমার ইচ্ছের ঘুড়ির লাটাইটা
ছেড়ে দিই কোন অজানা অনূঢ়ের হাতে,
যার কলমের ছোঁয়ায় হয়ে উঠব
আজকের দিনে সেই বনলতা সেন!
আমাকে নিয়ে যাক প্রগাঢ়ভাবে
তিব্বত থেকে নায়াগ্রাফল,
সাহারা থেকে অ্যান্টার্কটিকা
মহাদেশ থেকে মহাকাল!
কেউ লিখুক দু’লাইন আমাকে নিয়ে;
নিয়ে যাক শতবর্ষ আগে,
দিগন্তছোঁয়া চলনবিলে
ডিঙে ভাসাক আপন মনে।
শাপলা-পদ্ম তুলে দিয়ে চুলে
বসাক আমায় ছবির পটে,
তুলির আঁচড়ে জীবন্ত মহিমায়-
গড়ে তুলুক ভেনাস আমায়।
কখনো যে কারও হইনি কবিতা-
তথাপি ভাবতে ভালোবাসি
আমিই মহাকালের কবিতা।
আকাশ, মাটির দূর্বাঘাসে
শ্রাবণ ভাদ্র পৌষ মাসে,
সুর ছন্দ লয়ের মাঝে
নিরন্তর এই অবগাহনের পাটি।
ইচ্ছের ঘুড়ির ছেড়ে দিয়েছি লাটাই
উড়ছে কেবল শূন্যের আধার ছুঁয়ে,
আমাজন পেরুর রেইন ফরেস্ট
হাতছানি দিয়ে ডাকছে কেবল;
দিগন্ত ছুঁয়ে ঐ যে গোধূলির সোনারু রং
সর্বাঙ্গে মেখে হই স্বর্ণমুখী।
কবিতা!
আমায় গড়ে তুলো কবিতার মতো
হাজার বছরের শ্বাশত অনুরণ,
এক ঝাঁক বলাকার মতো চোখজুড়ানো;
নীল অপরাজিতার দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে
মহাসাগরের গভীরতা নিয়ে
সফেদ সিম্ফোনির মতো আছড়ে ফেলো
ভেজা হাওয়ায় বিছানো তটে!
নিঃশর্ত আবেগে তিলতিল করে
আমাকে করে তুলো ভালোবাসার
একচ্ছত্র হাজার কবিতার গল্প।