মুহম্মদ শামসুল হক
২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আগ্নেয়াস্ত্র সহিংসতা এবং নিরীহ আমেরিকান নিধনযজ্ঞের মহোৎসব চলছে। গান ভায়োলেন্স আর্কাইভের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি বছরের ১৩ জুন পর্যন্ত আগ্নেয়াস্ত্র সহিংসতায় কমপক্ষে সাড়ে ১৪ হাজার আমেরিকানের মৃত্যু হয়েছে। অথচ গত বছর আগ্নেয়াস্ত্র সহিংসতায় নিহত এবং গুরুতর আহত আমেরিকানের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৩৪ হাজার ৯৯৮ এবং ৬৬ হাজার ৫৫৪।
সংস্থাটির অপর এক পরিসংখ্যান অনুসারে, অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানিতে বিগত ৫ বছরে ৯৮ হাজার ৮৩১ জন আমেরিকান প্রাণ হারিয়েছে এবং গুরুতর আহত নিদেনপক্ষে ১ লাখ ৯৬ হাজার আমেরিকান নিয়তিলাঞ্ছিত-পরাশ্রয়ী ও অন্যের অনুকম্পানির্ভর জীবনযাপনে বাধ্য হয়েছেন। অপর এক পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সন্ত্রাসী হামলায় আমেরিকার অভ্যন্তরে প্রতিদিন গড়ে ৩১টি তরতাজা প্রাণ ঝরে গেছে।
আর ন্যাশনাল অ্যাডভাইজরির সর্বশেষ বুলেটিন অনুসারে, জনসমাবেশ, ধর্মীয় উপাসনালয়, দাতব্য প্রতিষ্ঠান, স্কুল, রঙ্গমঞ্চ, পানশালা, পার্ক, বিনোদনকেন্দ্র, বর্ণগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু, সরকারি স্থাপনা ও ব্যক্তিবর্গ, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো, মিডিয়া এবং ভিন্ন মতাবলম্বী বা আদর্শগত প্রতিপক্ষ, নিরীহ জনসাধারণ কোনো কিছুই এই বর্বরোচিত সহিংসতার কবল থেকে পরিত্রাণ পায়নি। যাহোক, প্রায় তিন বছর করোনার প্রলয়নৃত্য শেষে চলতি বছরের মে মাসে পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সির ইতি ঘোষণার পর ভ্রমণবিলাসী আমেরিকানরা হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন এবং অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে যত্রতত্র ঘুরে বেড়াতে শুরু করেছেন। অথচ আগ্নেয়াস্ত্র সহিংসতার উদ্বেগজনক প্রবৃদ্ধিতে আমেরিকানদের শান্তি ও স্বস্তি কর্পূরের মতো হাওয়ায় উবে যেতে বসেছে। আগ্নেয়াস্ত্র সহিংসতার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা রোধে অগত্যা সমগ্র আমেরিকায় চলছে নানা ধরনের বিক্ষোভ-বিদ্রোহ ও সমাবেশ। প্রচণ্ড গণবিস্ফোরণের মুখে সহিংসতার সমূল উৎপাটন এবং অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে দু-একটি স্টেট সংস্কারমূলক কিছু পদক্ষেপও গ্রহণ করেছে ইতিমধ্যে। কিন্তু মানবাধিকার অ্যাক্টিভিস্ট, শান্তিপ্রিয় আমেরিকান এবং ভুক্তভোগীদের ভাষায় এসব ঝাড়ফুঁকে কাজ হবে না, আমেরিকানদের প্রাণরক্ষায় চাই বিদ্যমান আগ্নেয়াস্ত্র আইনের আমূল সংস্কার এবং রাজনৈতিক বিভক্তির অবসান।
অগতির গতি কলারাডো : দ্য হিয়ার ফোর দ্য কিডস মুভমেন্ট সংগঠনের কো-ফাউন্ডার টিনা স্ট্রনের নেতৃত্বে আগ্নেয়াস্ত্র নিষিদ্ধের দাবিতে দুই সহস্রাধিক নারী ৫ জুন কলারাডো স্টেট ক্যাপিটলে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছেন। ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারী নারীরা আগ্নেয়াস্ত্র নিষিদ্ধ এবং আগ্নেয়াস্ত্র ফেরত-ক্রয়পদ্ধতি কার্যকর করার লক্ষ্যে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরদানের জন্য গভর্নর জারেড পলিসের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। ধর্মঘটে নেতৃত্বদানকারী স্ট্রন সকল নারী, বিশেষত শ্বেতাঙ্গ নারীদেরও তাদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন। স্ট্রন বলেন, আমাদের সন্তান-সন্ততিদের জীবনরক্ষার তাগিদে শ্বেতাঙ্গ-অশ্বেতাঙ্গ নির্বিশেষে সকল জননীকে একসঙ্গে সর্বাত্মক আন্দোলন-সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
অবস্থান ধর্মঘটের গুরুত্ব তুলে ধরে সংগঠনের কো-ফাউন্ডার সাইরা রাও বলেন, আমাদের সন্তানেরা সর্বত্র এবং সর্বক্ষেত্রে পুরোপুরি নিরাপদ আছে কি না, সেই দুশ্চিন্তার রাহুগ্রাসে আমরা বৃহত্তর স্বপ্ন এবং উন্নত জীবনের কল্পনাও হারিয়ে ফেলেছি। এমন ভীতিপ্রদ পরিস্থিতিতে মানুষ বাঁচতে পারে না। তিনি বলেন, বুলেটপ্রুফ ব্যাকপ্যাক স্বাভাবিক ব্যবহার্য হতে পারে না। অথচ নিয়তির নির্মম বিধানে আমরা বুলেটপ্রুফ ব্যাকপ্যাক ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী দুই সন্তানের জননী খ্যাতনামা অভিনেত্রী এবং পরিচালক লেইক বেল বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগামী কিশোর-কিশোরীদের মায়েরা তাদের সন্তানেরা নিরাপদে বাড়ি ফিরে না আসা পর্যন্ত দুশ্চিন্তামুক্ত থাকেন না। আমাদের বিদ্যালয়গুলো সহিংসতার অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে এবং আমাদের প্রতিটি শিশু মানসিক ব্যাধিতে ভুগছে। যাহোক, আগ্নেয়াস্ত্র দখলে রাখার সমর্থক গভর্নর পলিস সংবিধান সমুন্নত রেখে প্রয়োজনীয় সংস্কারেরও প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন এবং কলারাডোকে যুুক্তরাষ্ট্রের ১০টি সর্বাপেক্ষা নিরাপদ স্টেটের তালিকায় স্থান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
সূচিভেদ্য অন্ধকারে আশার ঝলক : ২০১২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের জুন-সময়ের ব্যবধানে প্রায় এক দশক। বিজ্ঞান এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তির আশীর্বাদপুষ্ট বিশ্বচরাচরে এই দীর্ঘ ব্যবধানে সৃষ্টি-ধ্বংস, রাজ্য-সাম্রাজ্যের উত্থান-পতন, ক্ষমতার হাতবদল, যুগান্তকারী উদ্ভাবন, করোনা মহামারিতে অসংখ্য লোকের প্রাণহানিসহ নানা ইতিহাস রচিত হয়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় প্রায় ১২ লাখ মানুষের প্রাণহানির পাশাপাশি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র সহিংসতায় স্কুল-কলেজ-উপাসনালয়, রঙ্গমঞ্চ-পার্ক, পাবলিক স্পেসসহ সর্বত্র কয়েক হাজার তরতাজা প্রাণ ঝরে গেছে চোখের নিমেষে। আগ্নেয়াস্ত্র সহিংসতায় নিহতদের স্বজন ও পঙ্গুত্ববরণকারীদের দুর্ভোগের আর্থিক মূল্যায়ন অসম্ভব হলেও চিকিৎসা ব্যয় কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। কানেকটিকাটের স্যান্ডিহুক এলিমেন্টারি স্কুলের ২০১২ সালের ১৪ ডিসেম্বর সাতসকালের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড আমেরিকার শিক্ষাঙ্গনে সংঘটিত পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের নারকীয় ইতিহাসে আরও একটি মর্মবিদারী অধ্যায়ের সংযোজন ঘটিয়েছিল। পুষ্পসদৃশ শিশু-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকদের সরগরম উপস্থিতিতে নিউটাউন স্যান্ডিহুক এলিমেন্টারি স্কুল এলাকায় আনন্দ-উচ্ছ্বাসের জোয়ার বয়ে যাচ্ছিল।
হঠাৎ বিধিবাম। বিনা মেঘে বজ্রাঘাতে স্কুল প্রাঙ্গণজুড়ে নেমে এল শ্মশানের শূন্যতা। সর্বাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রসজ্জিত মানসিক সমস্যাগ্রস্ত ২০ বছর বয়সী অ্যাডাম লাঞ্জা সমবেত শিক্ষক-অভিভাবক-ছাত্রছাত্রীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল সাক্ষাৎ যমদূত হিসেবে। নির্বিচার গুলি চালিয়ে চোখের নিমেষে খুন করল ২০ জন নিষ্পাপ শিশু-কিশোর এবং শিক্ষক-নিরাপত্তা প্রহরীসহ আরও ছয়জনকে। পুলিশের বর্ণনা অনুসারে, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে হামলার আগে অ্যাডাম লাঞ্জা নিজ ঘরে তার মা ন্যান্সি লাঞ্জাকে খুন করেছিল। আর পাশবিক হামলার কবল থেকে নিষ্পাপ শিশুদের রক্ষাকল্পে মানবঢাল রচনা করতে গিয়ে খুন হলেন স্কুলের শিক্ষক, নিরাপত্তা প্রহরীসহ ছয়জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি। এই বর্বরোচিত ম্যাস কিলিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে নিউটাউনের আকাশ-বাতাস আর্ত আহাজারিতে ভারাক্রান্ত হয়ে উঠেছিল এবং কানেকটিকাটসহ সমগ্র আমেরিকায় অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নিষিদ্ধের গগনবিদারী আওয়াজ উঠেছিল। ছাত্র-শিক্ষক, অভিভাবক, মানবাধিকার কর্মী এবং অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রবিরোধী অ্যাক্টিভিস্টরা দেশজুড়ে বিক্ষোভের ঢেউ তুলেছিলেন। কিন্তু কার্যত যা বায়ান্ন, তা-ই তেপান্ন হলো। প্রবল প্রতাপান্বিত ও ক্ষমতাবান ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবন্ধকতার মুখে মানবাধিকার কর্মী এবং স্বজনহারাদের যাবতীয় প্রচেষ্টা ব্যর্থতার যূপকাষ্ঠে আত্মাহুতি দিল।
যাহোক, কথায় বলে, জাস্টিস ডিলেইড এবং জাস্টিস ডিনাইড একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। তা সত্ত্বেও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে কানেকটিকাটের ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত হাউস এবং সিনেটে অনুমোদিত বিলে গভর্নর নেড লামন্টের যথারীতি স্বাক্ষরদানের মাধ্যমে আইনে পরিণত করাকে সামগ্রিক বিচারে গাঢ় অন্ধকারে আশার বিদ্যুৎ-ঝলক হিসেবে শনাক্ত করা যায়। বস্তুত, শ্রুতিকটু মনে হলেও প্রবল ক্ষমতাধর ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রচ্ছন্ন ছায়া রয়েছে আমেরিকার সিনেট এবং কংগ্রেসের ওপর। তাই সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনীর বদৌলতে আগ্নেয়াস্ত্র দখলে রাখার যে বৈধতা আমেরিকানরা লাভ করেছে, তা সহজে উপড়ে ফেলাও সহজ হচ্ছে না। আবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অনেক সিনেটর কিংবা কংগ্রেসম্যান ন্যাশনাল রাইফেলস অ্যাসোসিয়েশনের আনুকূল্য পেয়ে থাকেন এবং বিনিময়ে সংস্থাটির পৃষ্ঠপোষকতাও করে থাকেন। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে কানেকটিকাটের পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। স্যান্ডিহুক স্কুল শুটিংয়ের পর থেকেই গোটা কানেকটিকাটে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় বয়ে যাচ্ছিল এবং সম্প্রতি সমগ্র আমেরিকায় আগ্নেয়াস্ত্র সহিংসতা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আন্দোলন যথেষ্ট বেগবান হয়েছে।
এরই পটভূমিতে কানেকটিকাটের ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত স্টেট হাউস ৯৬-৫১ ভোটে এবং সিনেট ২৪-১১ ভোটে মোস্ট ওয়াইড র্যাঞ্জিং বিল অনুমোদন করেছে। আর ডেমোক্র্যাটিক দলীয় গভর্নর নেড লামন্ট মোস্ট ওয়াইড র্যাঞ্জিং লেজিসলেশনে স্বাক্ষরদানের মাধ্যমে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের নিমিত্তে কানেকটিকাটের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সংযোজন করেছেন। গভর্নর লামন্ট স্বাক্ষরিত নতুন আইনের আওতায় খোলামেলাভাবে আগ্নেয়াস্ত্র বহন নিষিদ্ধ এবং ইন্সট্রাক্টর ও অন্যদের ব্যতীত একই ব্যক্তির নিকট ৩০ দিনের মধ্যে তিনটির বেশি হ্যান্ডগান বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এ ছাড়া অন্যান্য শর্ত অনুযায়ী, কানেকটিকাটের বর্তমান অ্যাসল্ট আগ্নেয়াস্ত্রকে অন্যান্য অনুরূপ আগ্নেয়াস্ত্রের অন্তর্ভুক্ত করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। লার্জ ক্যাপাসিটি ম্যাগাজিন দখলে রাখার দায়ে শাস্তির বিধান করা হয়েছে। অধিকতর সেটিংয়ের ক্ষেত্রে নিরাপদে সংরক্ষণ আইন সম্প্রসারণ করা হয়েছে এবং কিছুসংখ্যক পারিবারিক সহিংসতাকে আগ্নেয়াস্ত্র দখলে রাখার অযোগ্যতা হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে সহিংসতায় প্রাণহানি তুঙ্গে ওঠায় কানেকটিকাট গভর্নর এবং আইনসভার সদস্যরা উপরিউক্ত পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হয়েছেন বলে গভর্নর লামন্ট দাবি করেন। এদিকে কানেকটিকাটের রিপাবলিকান দলীয় আইনপ্রণেতারা উল্লিখিত সংস্কারের তীব্র বিরোধিতা করেন। তারা বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে কানেকটিকাটের ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা সুনির্দিষ্টভাবে আগ্নেয়াস্ত্র-সহিংস অপরাধীদের টার্গেট না করে আইন পালনকারী আগ্নেয়াস্ত্র মালিকদের শাস্তি দিয়েছেন। আর গভর্নর লামন্ট জোর গলায় দাবি করেন, কানেকটিকাটের শান্তিপ্রিয় সিংহভাগ জনগোষ্ঠী তার পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। লামন্ট বলেন, কানেকটিকাটের জনগণ এমন কমিউনিটিতে বসবাস করতে চায়, যে সমাজব্যবস্থা জননিরাপত্তাকে উৎসাহিত করার এবং আমাদের পরিবেশ ও বাড়িঘরের ক্ষতিসাধন প্রতিহত করার সাধারণ জ্ঞানের উন্মেষ সাধনকে অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত করে।
বস্তুত, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৫০ শতাংশ স্টেটই চলতি বছর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ এবং স্কুলের নিরাপত্তাকে বহুলাংশে ঢেলে সাজিয়েছে। অবশ্য আইনসভার সদস্যমণ্ডলীর মতৈক্য বা মতানৈক্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন স্টেটের গৃহীত ব্যবস্থায় যথেষ্ট রকমফের রয়েছে।
ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত স্টেটগুলো সেমিঅটোমেটিক আগ্নেয়াস্ত্র নিষিদ্ধ আইন এবং আগ্নেয়াস্ত্র ক্রেতার অতীত কর্মকাণ্ড যাচাই-বাছাই ও বন্দুক ক্রয়ের জন্য অপেক্ষার সময় কার্যকর করেছে। পক্ষান্তরে রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত স্টেটগুলো পারমিট ছাড়া লুকানো গান বহন কিংবা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্টাফারদের স্কুলে গান নিয়ে আসার অনুমতি ফেরত দিয়েছে। সামগ্রিক বিচারে বিভিন্ন স্টেটের গৃহীত পদক্ষেপগুলোক নেহাত ঝাড়ফুঁক বৈকি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠী ও মানবাধিকার কর্মীরা। তাদের ভাষায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র এবং সহিংসতার মূলোচ্ছেদ করতে হলে বিদ্যমান আগ্নেয়াস্ত্র আইনের আমূল সংস্কার অনস্বীকার্য। অন্যথা সবকিছু নিছক ভাঁওতাবাজি এবং কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জন।
লেখক : সহযোগী সম্পাদক, ঠিকানা, নিউইয়র্ক।