প্রাথমিক লক্ষণ জানা থাকলে শিশুর দাঁতের ক্ষতি হওয়ার আগেই প্রতিরোধ করা যায়। দাঁতের ক্ষয় যা ক্যাভিটি হিসেবে পরিচিত। এই ধরনের সমস্যা শিশুদের মাঝে বেশি দেখা দেয়।
এই বিষয়ে ভারতের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ও মুম্বাইয়ের ‘চিয়ার্স চাইল্ড কেয়ার’য়ের প্রতিষ্ঠাতা ডা. নিহার পারেখ হেল্থশটস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “মুখের ব্যাক্টেরিয়ার অ্যাসিড উৎপাদনে দাঁতের সুরক্ষার স্তর এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চিকিৎসা না করালে দাঁতে দেখা দেয় ‘ক্যাভিটি’ বা ছোট গর্ত অথবা দাঁতের বিভিন্ন অংশের ক্ষতি হয়।”
শিশুদের দাঁতে সাদা বা ফাটা দাগ দাঁত ক্ষয়ের অন্যতম লক্ষণ।
দাঁতের ক্ষয়ের প্রাথমিক লক্ষণগুলো হল-
সাদা দাগ: দাঁত ক্ষয়ের অন্যতম প্রথম লক্ষণ হল সাদা দাগ।
সংবেদনশীলতা: ঠাণ্ডা, গরম বা মিষ্টি-জাতীয় খাবার ও পানীয় গ্রহণের সময় দাঁতে ব্যথা বা সংবেদনশীলতা অনুভব করতে পারেন।
রংয়ের পরিবর্তন: দাঁতের ওপর হলুদ বা বাদামি রংয়ের আস্তর দেখে বোঝা যায় ‘ক্যাভিটি’ ও ক্ষয় হচ্ছে।
শ্বাসে দুর্গন্ধ: মুখের সুস্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল না রাখলে শ্বাসে দুর্গন্ধ হতে পারে। এর থেকে দেখা দিতে পারে মুখের নানান অসুখ।
দাঁতের ক্ষয়ের কারণগুলো হল-
মুখের স্বাস্থ্যের যত্ন না নেওয়া, সঠিকভাবে ব্রাশ না করা বা ফ্লস’য়ের অভাবে দাঁতে প্লাক জমে, যা দাঁতের ক্ষয়ের জন্য দায়ী।
কার্বোহাইড্রেইট, বিশেষ করে ভাজাপোড়া খাবার, কোমল পানীয়, দাঁতে ব্যাক্টেরিয়া ও অ্যাসিডের কার্যক্রিয়া বাড়ায়।
দীর্ঘ সময় দুধ পান বা রাতে দুধ পান দাঁত ক্ষয়ের অন্যতম কারণ, এতে ক্যাভিটির ঝুঁকি বাড়ে।
খাবার পানিতে, টুথপেস্ট বা দাঁতের যত্নে ব্যবহৃত পণ্যে ফ্লোরাইডের ঘাটতি- দাঁত ক্ষয়ের অন্যতম কারণ।
শিশুদের দাঁতের ক্ষয় এড়াতে করণীয়
শিশুদের নতুন দাঁত দেখা দিলে নিয়মিত পাতলা ব্রাশ বা কাপড় দিয়ে দাঁত ও মাড়ি পরিষ্কার করে দিতে হবে। বয়স দুই পেরোলে মৃদু টুথপেস্ট ব্যবহার করে দাঁত পরিষ্কার করতে হবে।
শিশুদের অস্বাস্থ্যকর নাস্তা, মিষ্টি-জাতীয় খাবার ও পানীয়র পরিবর্তে ফল, সবজি ও দুধের তৈরি খাবার খাওয়াতে হবে। খাবারের মাঝে শিশুকে পানি পান করাতে হবে।
শিশুর প্রথম জন্মদিন অথবা প্রথম দাঁত ওঠা থেকে নিয়ম করে পরীক্ষা করাতে হবে। নিয়মিত পরীক্ষায় দাঁত ক্ষয়ের হাত থেকে বাঁচানো যায়।
বোতল ও চুশনি ব্যবহারে সচেতন হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। একই বোতলে শিশুকে দীর্ঘদিন খাওয়ানো উচিত নয়। এছাড়াও রাতে মুখে বোতল নিয়ে ঘুমানো দাঁতের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
বছর দুই হওয়ার আগে শিশুকে চুশনি না দেওয়াই ভালো। এতে দাঁতের সমস্যা হতে পারে।
ফ্লোরাইড ব্যবহারে সচেতনতা বাড়াতে হবে। শিশুর বয়স অনুযায়ী ফ্লোরাইড সমৃদ্ধ টুথপেস্ট ব্যবহার করা উচিত। দন্ত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে ফ্লোরাইড বা সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা ভালো।
শিশুর সামনে দাঁতের যত্নে আদর্শ উদাহরণ স্থাপন করা প্রয়োজন যাতে সে উৎসাহী হয়। যেমন- ব্রাশ করা বা ফ্লশ ব্যবহার করা।
অভিভাবকদের শুরুতেই সমস্যা খুঁজে বের করতে হবে। তাহলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শে শিশুর দাঁতের ক্ষয় এড়ানো সম্ভব হবে। ছবি: পেক্সেলস ডটকম।
ঠিকানা/এসআর