প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌদি আরবের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে (এসইজেড) জমির প্রস্তাব দিয়েছেন এবং তেলসমৃদ্ধ দেশটির কাছ থেকে বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে আরও সৌদি বিনিয়োগ চাই।’
১০ মার্চ (শুক্রবার) সন্ধ্যায় সফররত সৌদি বাণিজ্যমন্ত্রী ড. মাজেদ বিন আবদুল্লাহ আল কাসাবির নেতৃত্বে নয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে শেখ হাসিনা এই অনুরোধ জানান।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
ইহসানুল করিম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরবকে বাংলাদেশে তেল শোধনাগার স্থাপনেরও প্রস্তাব দেন যেখানে অপরিশোধিত তেলসহ সব ধরনের তেল পরিশোধন করা যায়। বৈঠকে পারস্পরিক স্বার্থে উভয় দেশের ব্যবসা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করা হয়।’
বৈঠকে সৌদি আরবের মন্ত্রী জানান, তাঁর দেশের শীর্ষ বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বাংলাদেশে আমলাতান্ত্রিক বিলম্ব সমাধানের মাধ্যমে বিনিয়োগ পদ্ধতি সহজিকরণের আহ্বান জানান।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে বিনিয়োগ পদ্ধতি সহজ ও দ্রুত করার জন্য বলেছি।’
প্রতিবেশি দেশগুলোতে বিশাল বাজার থাকার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সে সব দেশের সঙ্গে জলপথসহ সব পথে কানেকটিভিটি জোরদার করার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার পণ্য পরিবহণ ব্যবস্থা সহজ ও মসৃণ করতে কাজ করছে। নদী খনন করে জলপথের নাব্যতা বাড়ানোর মাধ্যমে জলপথকে সচল করে তুলছে। সরকার সৌদি আরবে যাওয়ার আগে বাংলাদেশি শ্রমিকদের আরবি ভাষা ভালোভাবে জানার সুবিধার্থে একটি আরবি ভাষা ইনস্টিটিউট তৈরি করতে চায়, যাতে আরবি ভাষার লোকদের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে।’
সৌদি মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ক্রাউন প্রিন্স বাংলাদেশ সফরে আগ্রহী।’ জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সৌদি ক্রাউন প্রিন্সকে গ্রহণ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।’
এসময় সৌদি মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে ওমরাহ পালনের আমন্ত্রণ জানান।
সৌদি মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ও উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরবের দ্রুত উন্নয়নেরও প্রশংসা করেন।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সৌদি মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মাদার অব হিউম্যানিটি হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
ড. মাজেদ বিন আবদুল্লাহ আল কাসাবি বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারি। গত ১০ মাসে ছয় লাখ ৫০ হাজার বাংলাদেশি চাকরিপ্রার্থী সৌদি আরব গেছেন।’
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং ঢাকায় সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।