আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার থেকে জার্মানিতে তিনদিনব্যাপী ‘মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন’ শুরু হচ্ছে৷ এতে অংশ নেবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদ, সামরিক কর্মকর্তা এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা৷
প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব গুল শাহানা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) জার্মানির উদ্দেশ্যে রওয়না দেওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে জার্মানি সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
মন্ত্রী বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং আমরা এখন (সম্মেলনের ফাঁকে জামানিতে অনুষ্ঠেয়) দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের লক্ষ্যে কাজ করছি।’
এটি হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচন-পরবর্তী প্রথম বিদেশ সফর। এ সফরে জার্মান নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ছাড়াও সম্মেলনের ফাঁকে অন্যান্য বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন।
এদিকে প্রতিবছর এই সম্মেলনের আগে একটি জরিপ প্রকাশ করা হয়৷ ‘মিউনিখ নিরাপত্তা সূচক’ শীর্ষক এবারের জরিপটি সোমবার প্রকাশ করা হয়েছে৷ শিল্পোন্নত সাত দেশ, ব্রাজিল, ভারত, চীন ও সাউথ আফ্রিকার প্রায় ১২ হাজার মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা হুমকি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়৷ গত অক্টোবর ও নভেম্বরে জরিপটি পরিচালিত হয়েছে৷
জরিপে অংশগ্রহণকারীরা জলবায়ু পরিবর্তন ও যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অভিবাসনকে সবচেয়ে বড় হুমকি মনে করছেন৷ এরপর আছে রাশিয়া৷ এছাড়া সাইবার হামলা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন উত্তরদাতারা৷
গতবছরের জরিপে সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল রাশিয়া৷
ইউক্রেনের মানুষের কাছে যুদ্ধবিরতির গ্রহণযোগ্য শর্ত সম্পর্কেও জানতে চেয়েছিল মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন কর্তৃপক্ষ৷ ৯২ শতাংশ উত্তরদাতা ক্রাইমিয়াসহ ইউক্রেনের সব জায়গা থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন৷ মাত্র ১২ শতাংশ বলেছেন, ক্রাইমিয়া যদি রাশিয়ার অংশ থেকে যায় তাহলে সেটা তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে৷ দুই-তৃতীয়াংশের বেশি উত্তরদাতা ইউক্রেনকে দ্রুত ইইউ ও ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন৷
অন্যদিকে, চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে যুদ্ধ হতে পারে বলে শঙ্কা বেড়েছে৷ এছাড়া জাপান, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও ফ্রান্সের মানুষের মধ্যে চীনের ক্রমাগত আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠা নিয়ে ভয় বেড়েছে বলেও জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে৷
সম্মেলনের চেয়ারম্যান ক্রিস্টোফ হয়েসগেন তার রিপোর্টে লিখেছেন, ‘শিল্পোন্নত সাত দেশের একটি বড় অংশের নাগরিকেরা মনে করছেন, আগামী ১০ বছরে তাদের দেশ কম নিরাপদ ও সম্পদশালী হবে৷’
জরিপের ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চীন ও গ্লোবাল সাউথের দেশগুলো তাদের শক্তি ও প্রভাব বাড়াবে বলে মনে করছেন জি-সেভেনের নাগরিকেরা৷
ঠিকানা/ছালিক