Thikana News
২৭ জুলাই ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

জেএফকেতে জিহানের  দৃষ্টিনন্দন ম্যুরাল

জেএফকেতে জিহানের  দৃষ্টিনন্দন ম্যুরাল নিউইয়র্ক : জেএফকে এয়ারপোর্টের ফোর্থ টার্মিনালে নিজের আঁকা মূর‌্যালের সামনে আমেরিকান-বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত চিত্রশিল্পী জিহান ওয়াজেদ।
কয়েক বছর আগের কথা। জেএফকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের চার নম্বর টার্মিনালের বিশাল দেয়ালে অভিবাসীদের স্বাগত জানাতে বিভিন্ন ভাষায় লেখা ছিল ‘স্বাগতম’। নিউইয়র্কের হাজার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি এটা দেখে মন খারাপ করতেন। কারণ সেখানে বাংলা ভাষার অনুপস্থিতি ছিল। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশিদের মন ভালো করে দিয়েছিলেন অল্পদিনেই। সেখানে ‘স্বাগতম’ স্থান পায়। 
দেরীতে হলেও এখন চার নম্বর টার্মিনালের অভ্যন্তরে ডেলটা এয়ারলাইন্স এরিয়ায় শোভা পাচ্ছে বাংলাদেশি আমেরিকান তরুণ চিত্রশিল্পী জিহান ওয়াজেদের বিশাল শিল্পকর্ম। 
এই শিল্পকর্ম এখন বাংলাদেশিদের জন্য গর্বের। কারণ শিল্পকর্মের পাশে জিহান ওয়াজেদের ছবি দিয়ে তার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে তাকে বাংলাদেশি আমেরিকান হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। 
জিহান ওয়াজেদ নিউইয়র্কের বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনায় মূর‌্যাল এঁকে মূলধারার শিল্পকর্মে নিজের অবস্থান সংহত করার পাশাপাশি কুঁড়িয়ে চলেছেন সুনাম। জেএফকে বিমানবন্দরের চার নম্বর টার্মিনালে আঁকা জিহানের মূর‌্যালটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ছিল গত ২৬ জানুয়ারি শুক্রবার সকালে। টার্মিনালের অফিস ভবনের চারতলার মিলনায়তনে ফিতা কেটে মুর‌্যালটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেএফকে এয়ারপোর্ট এবং নিউইয়র্ক-নিউজার্সি পোর্ট অথরিটির শীর্ষ কর্মকর্তারা। শিল্পী জিহান ওয়াজেদ, তার পিতা সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান ও মা পারভীন আকতার অন্যান্য অতিথিদের সঙ্গে এসময় উপস্থিত ছিলেন। 
বিমানবন্দরের সিনিয়র ম্যানেজার কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স-জুলিয়া মরিসের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন জেএফকে আইএটি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রোয়েল হাইনিক, জেএফকে এয়ারপোর্টের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জন এরানসিও, আউটরিচ এন্ড রিডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার র‌্যাচেল অ্যান্টেনিও, ক্র্যাডল মিউজিয়ামের প্রেসিডেন্ট এন্ড্রো পারটন, ফোর্থ টার্মিনালের ফটোগ্রাফার শোভম সিং, জেএফকে এয়ারপোর্টের এ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্ট ম্যানেজার এডিলসন নুরেনা, জেএফকে আইএটি এয়ারসাইড ম্যানেজার ম্যারি ডিক্সন ও ব্রঙ্কস জু’র প্রধানসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা। 
ফিতা কাটার পূর্বে কর্মকর্তাগণ ও জিহান ওয়াজেদ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে ফুলের তোড়া দিয়ে অভিনন্দিত করা হয় তাকে। কর্মকর্তারা জিহানের শিল্পকর্মের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তারা বলেন, জিহানের আঁকা মূর‌্যাল জেএফকে বিমানবন্দরের চতুর্থ টার্মিনালের সৌন্দর্য্য বহুগুনে বৃদ্ধি করেছে। 
বক্তারা বলেন, চতুর্থ টার্মিনালের আর্টকালচার কার্যক্রমের অন্যতম নিদর্শন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে জিহানের চিত্রকর্মটি। এই মুর‌্যাল প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রীর দৃষ্টি কাড়ছে বলে মন্তব্য করেন তারা। 
যুক্তরাষ্ট্রের ষষ্ঠ ব্যস্ততম এই বিমানবন্দরটি ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও পরবর্তী ৩৫তম প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির নামে নামকরণ করা হয়েছে। নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স কাউন্টিতে অবস্থিত বিমানবন্দরটিতে জিহানের আঁকা মূর‌্যালে স্থান পেয়েছে স্থানীয় ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো। যাত্রীদের মানসিক সন্তুষ্টির জন্য জেএফকে কর্র্তৃপক্ষ এ ধরনের আরো শিল্পকর্মের সংযোজন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন কর্মকর্তারা। 
অনুষ্ঠানে জিহান ওয়াজেদ তার বক্তব্যে জেএফকে এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান তাকে গুরুত্বপূর্ণ ও বৃহৎ স্থাপনায় মূর‌্যাল আঁকার সুযোগ করে দেয়ার জন্য।
প্রথম পর্বের আনুষ্ঠানিকতা শেষে চার নম্বর টার্মিনালের বিভিন্ন শিল্পকর্ম পরিদর্শন করেন অতিথিরা। টার্মিনালের অভ্যন্তরে ডেলটা এয়ারলাইন্স এরিয়ায় জিহান ওয়াজেদে’র মুর‌্যালটি স্থাপিত হয়েছে। মুর‌্যালের পাশে জিহানের ছবি ও সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত শোভা পাচ্ছে। 
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কোনো শিল্পীর আঁকা এটিই প্রথম শিল্পকর্ম। জিহানের শিল্পকর্মের মধ্যে নিউইয়র্ক সিটি হেলথ এন্ড হসপিটাল বিভাগের কুইন্স হাসপাতালে বারো’শ ১২৫০ বর্গফুটের বিশালাকায় ‘রুটস অব মেডিসিন’ ম্যুরাল, নিউইয়র্ক সিটির এস্টোরিয়ার ইস্ট রিভার তীরে ‘এ সিটি ইন মোশন’ নামে একটি ম্যুরাল এঁকেছেন জিহান। হল্টারস পয়েন্ট মেগা ডেভেলপমেন্টে ৭৫০ ফুটের এই ম্যুরালটির স্থিরচিত্র সচল হয়ে উঠে মোবাইল অ্যাপসে। আকর্ষণীয় ভিন্নমাত্রিক আঙ্গিকে আঁকা দৃষ্টিন্দন মুর‌্যালটি ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছে। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত টিভি চ্যানেল সিবিএস মুর‌্যালটি নিয়ে জিহান ওয়াজেদের একটি সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। এছাড়া ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ভবন, নিউইয়র্ক ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টস কমপ্লেক্স, বিলি জিন কিং ন্যাশনাল টেনিস সেন্টার, এস্টোরিয়ায় ১৭৭ ফুট দীর্ঘ ম্যুরাল ‘ওয়েলকাম এস্টোরিয়া’ মুর‌্যাল এবং সিটিতে বাংলাদেশিদের প্রাণকেন্দ্র জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় ‘বাংলাদেশ ম্যুরাল’ অন্যতম।  

কমেন্ট বক্স