মালদ্বীপের সংসদে চীনপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মইজুর মন্ত্রিসভার চার সদস্যের অনুমোদন নিয়ে মতপার্থক্যর কারণে সরকার সমর্থক এমপি এবং বিরোধী আইন প্রণেতাদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রধান বিরোধী মালদ্বীপ ডেমোক্রেটিক পার্টি (এমডিপি) মন্ত্রিসভায় ভোটের আগে প্রেসিডেন্ট মইজুর মন্ত্রিসভার চার সদস্যের জন্য সংসদীয় অনুমোদন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, পরবর্তীকালে সরকার সমর্থক সংসদ সদস্যরা একটি প্রতিবাদ শুরু করে, সংসদের অধিবেশনে বাধা দেয়। সংঘর্ষ চলাকালে কান্দিঠেমুর সাংসদ আবদুল্লাহ শাহীম আবদুল হাকিম শাহীম ও কেন্দিকুলহুধুর সাংসদ আহমেদ ইসার মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।
ধস্তাধস্তির সময় দুই সংসদ সদস্য চেম্বারের কাছে পড়ে গেলে মাথায় আঘাত পান শাহীম। সংখ্যালঘু নেতা মুসা সিরাজ সংঘর্ষ থামানোর চেষ্টা করেছিলেন। খবরে বলা হয়েছে, শাহীমকে এখন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। দেশের পার্লামেন্ট না যুদ্ধক্ষেত্র! একে অপরের চুল ধরে টানা, সপাটে ঘুসি কষিয়ে দেয়া, মাটিতে ফেলে দিয়ে পা ধরে টেনে নিয়ে যাওয়া- কিছুই বাদ গেল না। প্রেসিডেন্ট মুইজুর মন্ত্রিসভার কিছু সদস্যকে অনুমোদন না করার বিরোধী এমডিপি এবং ডেমোক্র্যাটস সংসদীয় গোষ্ঠীর সিদ্ধান্ত, ক্ষমতাসীন দল প্রগ্রেসিভ পার্টি অফ মালদ্বীপ এবং পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস (পিপিএম/পিএনসি) জোটভুক্ত সংসদ সদস্যদের পার্লামেন্টের কার্যক্রম ব্যাহত করতে এবং প্রবেশ করতে বাধ্য করেছে। এমনকি স্পিকারের কানের কাছে লাগাতার ভেঁপুও বাজিয়ে গেলেন এক এমপি! সবমিলিয়ে কার্যত সার্কাসে পরিণত হল মালদ্বীপের সংসদ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে সাংসদরা স্পিকারের চেয়ারের কাছে জড়ো হয়েছেন এবং তুমুল ঝগড়া করছেন।
এদিকে মাথিভেরি সংসদ সদস্য হাসান জারিরও আঙুলে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। মালদ্বীপের শাসক প্রগতিশীল পার্টি (পিপিএম) এবং পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস (পিএনসি) জোট বলেছে যে প্রেসিডেন্ট মইজুর মন্ত্রিসভার সংসদীয় অনুমোদন অস্বীকার করা সরকার নাগরিকদের দেয়া পরিষেবাগুলিকে বাধা দেয়ার সমতুল্য হবে।
এদিকে, ক্ষমতাসীন পিপিএম-পিএনসি জোট সংসদের স্পিকার মোহাম্মদ আসলাম এবং ডেপুটি স্পিকার আহমেদ সেলিমের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করেছে। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের অচলাবস্থা থেকে অনাস্থা প্রস্তাবের উদ্ভব। জোট স্পিকার আসলামের বিরুদ্ধে একটি নির্দিষ্ট দলের স্বার্থ পূরণ করার জন্য তার অফিসিয়াল ক্ষমতার অপব্যবহার করার অভিযোগ আনা হয়েছে। গত বছরের ১৭ নভেম্বর মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেয়ার পরপরই, মইজু, যিনি চীনপন্থী নেতা হিসাবে বিবেচিত, আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতকে তার দেশ থেকে তার সামরিক কর্মীদের প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করেছিলেন, বলেছিলেন যে মালদ্বীপের জনগণ তাকে "দৃঢ় ম্যান্ডেট" দিয়েছে। সূত্র : দ্য প্রিন্ট
ঠিকানা/এসআর