নানান ধরনের কন্ডিশনার ব্যবহার করেও যদি কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া না যায় তবে কালপ্রিট হতে পারে এসবে থাকা রাসায়নিক উপাদান। এক্ষেত্রে চুল মশ্রিণ করতে প্রাকৃতিক উপাদানের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
হেল্থশটস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতীয় ত্বক-বিশেষজ্ঞ ডা. নিবেদিতা দাদু বলেন, “চুল মসৃণ ও আর্দ্র রাখতে পারে অ্যালো ভেরাতে থাকা উপাদান। অন্যদিকে তিসির বীজ চুল মজবুত ও উজ্জ্বল করতে পারে।”
চুলে তিসি বীজের উপকারিতা
ত্বক, চুল, মাথা আর্দ্র রাখার মতো উপাদান রয়েছে তিসির বীজে।
ডা. দাদু বলেন, “এতে আছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং ভিটামিন বি।”
এগুলো চুলের নানান উপকার করে। যেমন-
চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে
চুলের আর্দ্রতা রক্ষা করে
মাথার ত্বকের প্রাকৃতিক তেল শুষে নেয় না
চুলের গোড়া মজবুত করে
আগা ফাটা ও চুল ঝরা কমায়।
এছাড়াও, খুশকি ও চুলকানি দূর করতে সহায়তা করে। চুল রুক্ষ ও খসখসে হওয়া থেকে রক্ষা করে কোমল রাখতে সহায়তা করে।
তিসির বীজ চুলে পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান যুগিয়ে চুল ঝরার পরিমাণ কমায়।
অ্যালো ভেরার উপকারিতা
ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুলের যত্নের অন্যতম সেরা উপাদান হল অ্যালো ভেরা। এটা ভিটামিন সি, এ এবং ই সমৃদ্ধ।
মাথার ত্বক ও চুলকে আর্দ্র রাখে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
ডা. দাদু ব্যাখা করেন, “নিয়মিত অ্যালো ভেরা ব্যবহারে চুল কোমল হয়। এতে আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং চুল দেখতে সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর লাগে।”
এতে আছে প্রদাহনাশক উপাদান যা মাথার ত্বকের জ্বলুনি কমায়, প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে এবং চুল মসৃণ ও চকচকে করে।
আছে মাইক্রোবিয়াল রোধী উপাদান যা মাথার ত্বকের সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করে। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির কারণে হওয়া চুলের ক্ষয় কমায় এবং আগা ফাটা ও রুক্ষতা রোধ করতে পারে।
মাস্ক তৈরির উপকরণ
এক টেবিল-চামচ তিসির বীজ, এক কাপ পানি, দুতিন টেবিল-চামচ তাজা অ্যালো ভেরার জেল, দুতিন ফোঁটা নারিকেল তেল।
তৈরির পদ্ধতি: প্রথমে একটা ছোট পাত্রে কিছুটা পানি ও তিসির বীজ যোগ করতে হবে। মাঝারি তাপে গরম করে নিতে হবে। আঠালোভাব এড়াতে ঘন ঘন নাড়তে হবে।
মিশ্রণটি জেলের আকার ধারণ করলে চুলা বন্ধ করে ঠাণ্ডা হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এরপর এতে অ্যালো ভেরার জেল মেশাতে হবে।
কাচের পাত্রে মাস্কটি সংরক্ষণ করতে হবে।
ব্যবহার পদ্ধতি
ধাপ ১- চুল ভিজিয়ে কয়েক ভাগে ভাগ করে নিতে হবে।
ধাপ ২- আঙ্গুল বা ব্রাশের সাহায্যে মাস্ক চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত মেখে নিতে হবে।
ধাপ ৩- রক্ত সঞ্চালন বাড়ানোর জন্য কয়েক মিনিট আলতোভাবে মাথার ত্বক মালিশ করে নিতে হবে।
ধাপ ৪- সম্পূর্ণ চুলে মাস্ক ছড়িয়ে দিতে মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে আঁচড়ে নিতে হবে।
ধাপ ৫- এরপর চাইলে চুল গরম তোয়ালে বা শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ২০ থেকে ৩০ মিনিট ঢেকে রাখতে হবে।
ধাপ ৬- কুসুম গরম পানি দিয়ে মাস্ক ধুয়ে নিতে হবে।
সপ্তাহে একবার এই মাস্ক ব্যবহারে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
যে কোনো ঘরোয়া চুলের মাস্ক ব্যবহারের আগে ‘প্যাচ টেস্ট’ করে নেওয়া উচিত। এতে অ্যালার্জির ঝুঁকি থাকলে শুরু থেকেই বোঝা যায়।
ঠিকানা/এসআর