Thikana News
২১ নভেম্বর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে জনগণের ভাবনা 

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে জনগণের ভাবনা 
এম আর ফারজানা

নির্বাচন বা উপনির্বাচন এলে জনগণ উৎসুক হয়ে ওঠে। সর্বত্র এ নিয়ে আলোচনা চলতে থাকে। বর্তমানে প্রযুক্তির কল্যাণে অনলাইনেও নির্বাচন/উপনির্বাচন নিয়ে চলে ব্যাপক আলোচনা।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনেক দল থাকলেও মূলত দুটি দল জনগণের মাঝে প্রভাব বিস্তার করে। ঘুরেফিরে দেখা যায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ক্ষমতার বলয়ে থাকে। তবে দীর্ঘদিন ক্ষমতার চেয়ারে আছে আওয়ামী লীগ, ক্ষমতার বাইরে বিএনপি। নেতার গুণাগুণের চেয়ে দল ও মার্কার প্রতি জনগণের আকর্ষণ থাকে বেশি। তারা দেখে কোন দল থেকে প্রার্থী নমিনেশন পেল। সে হিসেবেই ভোটের পাল্লা ভারী হয়।

সংসদের কোনো আসন শূন্য হলে ৯০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন করতে হয়। ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেতা আকবর হোসেন খান পাঠান ফারুক। তার প্রয়াণে আসনটি শূন্য হয়ে যায়। ফলে নিয়ম অনুযায়ী এই আসনটিতে উপনির্বাচন হবে। এ নিয়ে চলছে জনগণের মাঝে ব্যাপক উদ্দীপনা। কে প্রার্থী হবেÑচলছে রাজনীতির হিসাব-নিকাশ। ইতিমধ্যে অনেকের নাম শোনা যাচ্ছে, বিশেষ করে চলচ্চিত্রজগতের তারকারা মুখিয়ে আছেন প্রার্থী হতে। নাম এসেছে অনেকের-সিনিয়র নায়ক শ্রদ্ধেয় আলমগীর, তারুণ্যের প্রাণচঞ্চল নায়ক ফেরদৌস, এসেছে নাট্যাভিনেতা সিদ্দিকের নাম। এ নিয়ে আমি একটা পোস্ট দিয়েছিলাম আমার ফেসবুক ওয়ালে : জনগণ কাকে দেখতে চায়। তাদের মতামত জানতে চেয়েছিলাম, অসংখ্য মতামত এসেছে।

অবাক ব্যাপার হলো অভিনেতাদের কমসংখ্যক জনগণ চেয়েছে। অনেকে বলেছে, তাদের কাউকে চায় না। বেশির ভাগ বলছে, তারা রাজনীতি থেকে এমন একজন নেতা চায় যে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং পাস করলে জনগণের পাশে থাকবে। অর্থাৎ তারা বলছে, রাজনীতিটা রাজনীতিবিদদের হাতেই থাকুক। আর অভিনেতারা অভিনয়েই থাকুক। কয়েকজনের কমেন্ট এখানে উল্লেখ করলাম :

Rokonuzzaman Joy বলেন, এদের কেউ না, বরং ভালো একজন রাজনীতিবিদ আসুক, সেটাই ভালো হবে।
Md Ashraful Islam বলেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কাউকে চাই।

Prince Mahmud বলেন, এদের কাউকে নয়, কারণ এদের কারও মাঝে জনপ্রতিনিধি হওয়ার যোগ্যতা নেই।
Tazul Islam বলেন, রাজনীতির মাঠে পরিপক্ব একজন রাজনৈতিক নেতার দরকার, তাহলেই কেবল কাক্সিক্ষত সেবা পাওয়া সম্ভব। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের এ বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া উচিত। ফারুক সাহেবের জন্য মাগফিরাত কামনা করছি কিন্তু একজন সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি সফল হতে পারেননি। পর্দায় যতটা সফল ছিলেন তার কোনো স্বাক্ষর রাখতে পারেননি জনপ্রতিনিধি হিসেবে। ঢাকায় এই গুরুত্বপূর্ণ আসনে সব দলের উচিত হবে আপাদমস্তক একজন রাজনৈতিক নেতা/কর্মীকে মনোনয়ন দেওয়া।

Mazharul Rubel বলেন, মিডিয়ার কেউ এখানে না এসে রাজনীতি করে এমন কেউ এলেই ভালো।
Toyeb বলেন, ওই এলাকায় রাজনীতিতে যে সক্রিয় তাকে এমপি মনোনীত করা হোক বা যার দ্বারা ওই এলাকার মানুষ নিরাপদ এবং উপকার হবে, তাকে এমপি করা হোক।

Nurunnabi Khokon বলেন, একজন ভালো ও ত্যাগী রাজনৈতিক ব্যক্তিকে দেখতে চাই। কোনো অরাজনৈতিক সেলিব্রিটিকে দেখতে চাই না।

Abul Hosain বলেন, আমি মনে করি, যারা প্রকৃতপক্ষে রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তাদেরকে নমিনেশন দেওয়া উচিত। কারণ তারা জেল-জুলুম, নির্যাতনের শিকার হয় এবং তাদের অনেক কর্মী-সমর্থক থাকে। আর হঠাৎ করে এসে নায়কেরা এমপি হবে, এটা ঠিক নয়। তিনজনকেই আমি সম্মান করি কিন্তু তারা কেউ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন।

Md Ruhel Ahmed  বলেন, রাজনৈতিকদের হাতে রাজনীতি থাকুক। অভিনয়শিল্পীরা সম্মানিত থাকুক তাদের অভিনয়জগতে। এখানে অবশ্যই একজন রাজনৈতিক নেতাকে মনোনয়ন দেওয়া উচিত, যিনি যোগ্যতায় এগিয়ে থাকবেন-তিনি পান এই প্রত্যাশা।

অনেক মন্তব্য এসেছে, তার মধ্য থেকে কয়েকজনের মন্তব্য দিলাম আমার ফেসবুক পোস্ট থেকে।
আসলে জনগণ ক্ষমতার উৎস। একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনপ্রতিনিধি জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই নির্বাচিত হয়। সে ক্ষেত্রে তাদের মতামতের উপেক্ষা করা যায় না। যে বিষয়টা স্পষ্ট তা হলো যেই নমিনেশন পাক না কেন, যে দল থেকেই পাক না কেন, সেই ব্যক্তিটি যেন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকে। তাকেই যেন দল নমিনেশন দেয়-এটাই বেশির ভাগ জনগণের চাওয়া।

ইসি সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-১৭ শূন্য আসনে আগামী ১৭ জুলাই উপনির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কমিশনের ১৯তম সভায় ভোটের এই তারিখ নির্ধারণ করা হয়। আগামী সপ্তাহের মধ্যে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। এই উপনির্বাচনের হিসাব-নিকাশ কী হবে, তা বলা বাহুল্য। কারণ, বিএনপি নির্বাচন বর্জন করতে পারে, নাও পারে। উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ থাকবে, এটা নির্দ্বিধায় বলা যায়। এর মধ্যে আমরা দেখেছি আগামী জাতীয় নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয়, সে জন্য যুক্তরাষ্ট্র তৎপর। বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের জন্য ভিসা নীতির কথা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বলছে, সুষ্ঠু নির্বাচনে কেউ বাধা দিলে তার মার্কিন ভিসা মিলবে না। এর প্রভাব উপনির্বাচনে পড়বে, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। কারণ রাজনীতিবিদের পরিবারের অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছে। সরকারি দল, বিরোধী দলের অনেক নেতা দেশে থাকলেও তাদের পরিবারের সদস্যরা আমেরিকাতেই বসবাস করছে।

বিশ্বের মোড়ল বলা হয় আমেরিকাকে। ফলে তাদের প্রভাব যে আগামী জাতীয় নির্বাচনে থাকবে, তা বলা বাহুল্য। এ জন্য এই উপনির্বাচনকে একটা পরীক্ষার দাঁড়িপাল্লায় মাপা হবে। সরকার চাইবে নির্বাচন সুষ্ঠু হোক। এতে তারা বলতে পারবে আমাদের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়। তাদের টার্গেট হবে জাতীয় নির্বাচন। এতে করে বিএনপি যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন চাইছে, তা অনেকটা মাঠে মারা যাবে। হয় তাদের দলীয় সরকারের অধীনে আসতে হবে, না হয় বর্জন করে ঘরে বসে থাকতে হবে। অবশ্য বর্জন করবে বলে মনে হয় না। করলে এতে করে লাভের গুড় পিঁপড়ায় খাবে। যা-ই হোক, বলছিলাম উপনির্বাচনের কথা। ঢাকা-১৭ আসনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজধানীর মধ্যে থাকার কারণে এর দিকে নজর থাকবে সবার। দেশি-বিদেশি সবাই আতশ কাচ হাতে নিয়ে গণকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে। আলোচনা-সমালোচনার দাঁড়িপাল্লা ওঠানামা করবে সমাজের সর্বস্তরে। তবে আমরা চাইব, যেই আসুক সে যেন জনতার নেতা হয়।

লেখক : কলামিস্ট, নিউ জার্সি

২৭ মে ২০২৩
 

কমেন্ট বক্স