ফোবানা : বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ

প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৫৩ , চলতি সংখ্যা
বাংলার গ্রামীণ প্রবাদে বলা হয়, ‘পাগলেও নাকি নিজের ভালো বোঝে।’ কিন্তু আমরা এই প্রবাসজীবনে বুঝি পাগলের চেয়েও বেশি চিত্তবৈকল্যে ভুগছি। নইলে ৩৬ বছর আগে নর্থ আমেরিকার কিছু জ্ঞানী-গুণী মানুষ বাঙালিদের একটি ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্মে নিয়ে এসে তাদের জন্য বার্ষিক একটি উৎসবে মিলিত করার অভিপ্রায় নিয়ে যে ফোবানার (ফেডারেশন অব বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশনস ইন নর্থ আমেরিকা) জন্ম দিয়েছিলেন, আজ সব বিবেচনাতেই সে ফোবানা বিবর্ণ, আকর্ষণহীন এবং সর্বস্তরে সমালোচনার একটি প্রতিষ্ঠান।
ফোবানার সেই জৌলুশ, ফোবানার প্রতি টান বা ভালোবাসা বলতে প্রবাসী বাঙালিদের কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। থাকার কোনো কারণও নেই। এক ফোবানা থেকে দুই ফোবানা এবং তা থেকে এখন ছয় ফোবানা। এবার যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিভিন্ন শহরে গত ১-৩ সেপ্টেম্বর ছয়টি ফোবানা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ফোবানায় এখন সাধারণ প্রবাসীরা আকর্ষণ বোধ করেন না এবং ফোবানায় তাদের উপস্থিতি মোটেও প্রত্যাশিত পর্যায়ে নেই। অনেকেই বলে থাকেন, ফোবানায় এখন তারাই যান, যারা ভাঙনের সঙ্গে যুক্ত। আর সেই সঙ্গে যেখানে যখন ফোবানা অনুষ্ঠিত হয়, একান্তই তার চারপাশের কিছু মানুষ গান-বাজনা, দেশ থেকে আসা জাতীয় কিছু শিল্পীকে সামনে থেকে দেখার আগ্রহ থেকে ফোবানায় যান।

উদ্যোক্তারা এখন প্রচারে যা বলেন, দর্শকেরা বাস্তবে তা দেখতে পান না বলে অনেকেই অভিযাগ করেন। শিক্ষণীয় কিছু ফোবানা থেকে পাওয়া যায় না বলে অনেকের অভিযোগ। অথচ ফোবানার জন্মই হয়েছিল প্রবাসীদের ঐক্যবদ্ধ করা এবং প্রবাসজীবনের সব সমস্যা-সংকট সমাধানের উদ্দেশ্যে নিয়ে। ‘ইউনাইটেড উই স্ট্যান্ড, ডিভাইডেড উই ফল’Ñআমেরিকার এই মূল স্পিরিটই ছিল ফোবানা সৃষ্টির পেছনে মূল লক্ষ্য। যারা ফোবানা সৃষ্টির পেছনে মেধা ও ঘাম ঝরিয়েছেন, তারা তাদের দিব্য চোখে দেখেছিলেন এবং অন্তর দিয়ে বুঝেছিলেন, নিজের জন্মভূমি ছেড়ে যারা প্রবাসে নীড় গড়বেন, তাদের নানা সংকট মোকাবিলা করতে হবে। তাদের নিজেদের জীবনযাপন, ব্যবসা-বাণিজ্য, সন্তানদের শিক্ষা-এসব কিছু নিয়েই দেশত্যাগীরা নানা সংকটে পড়ে দিশেহারা বোধ করবেন। তাদের পাশে সাহসের মশাল নিয়ে দাঁড়ানো, তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা, পরামর্শ দান-এসব কিছুতেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে জন্ম নেয় ফোবানা। এ ছাড়া প্রবাসের নিরানন্দ জীবনে বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে কিছু বিনোদনের আয়োজন করার অভিপ্রায়ও ছিল ফোবানা গড়ার পেছনে।
এখন সেসব স্বপ্ন ফিকে। ফোবানার কাছ থেকে প্রবাসীরা কিছু পাওয়ার আশা করেন না। যারাও-বা যাওয়ার একটু ইচ্ছা পোষণ করেন, ভাঙনের কারণে তারা কোন ফোবানায় যাবেন, তা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যান। কেননা তারা ভাঙন পছন্দ না করলেও যারা ফোবানা ভেঙে টুকরো টুকরো করছেন, তারা সবাই সকলের পরিচিত। কেউ আত্মীয়, কেউ বন্ধু, কেউবা প্রতিবেশী। এ রকম পরিস্থিতিতে সবাই দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত কোনোটাতেই যেতে পারেন না। ফোবানা নিয়ে প্রবাসীরা এখন কৌতুক করেন। ফোবানা আর কত টুকরা হবেÑসেই প্রশ্ন তোলেন। প্রশ্ন তোলেন-কোথায় গিয়ে ফোবানা আবার ভাঙবে?

তবে প্রবাসীরা এখনো মনেপ্রাণে কামনা করেন, ফোবানা আবার তার জন্মলগ্নের গুরুত্ব নিয়ে প্রবাসীদের কাছে তার পুরোনো গ্রহণযোগ্যতা ফিরে পাক। ফিরে পাক তার জৌলুশ। প্রবাসীরা পুনরায় তাদের আনন্দ-উল্লাস ফিরে পাক ফোবানা থেকে। তবে এ জন্য সবকিছুর আগে প্রয়োজন ফোবানার ঐক্য। সবাই ফোবানার ঐক্যের কথা বলেন। শেষ পর্যন্ত দেখা যায় ঐক্য না হয়ে হয় ভাঙন। ভাঙনের বীজ সবার মন, মনন এবং মস্তিষ্ক থেকে উপড়ে ফেলতে হবে। তবেই প্রবাসীদের ঐক্যের প্রত্যাশা পূরণ হবে।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078