
সরকারের মতিগতি অনেকটা বুঝে ফেলেছে বিএনপি। সব বিরোধী দল একজোট হলেও, আলুর কেজি শত টাকায় উঠলেও, যুক্তরাষ্ট্রসহ আরও নানান দেশ চাইলেও সরকার মনমতো নির্বাচন করেই নেবে। এর সুফল-কুফল পরে দেখবে। আপাতত বিএনপি বা বিরোধী মতকে কেবল সামথিং নয়, নাথিং ভাবতে চায় সরকার। সরকারের এমন ভাব বুঝে বিএনপি হতাশ, সাবধানীও। তা বুঝে সরকারের কাছে মিনতির মতো বিএনপির আহ্বান, যা হবার হয়ে গেছে, সব ভুলে অন্তত খালেদা জিয়ার জীবন রক্ষার্থে তাকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার্থে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি প্রার্থী বিএনপি। ইনিয়ে-বিনিয়ে সংবাদ সম্মেলনেও তা বলেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আহ্বানটিতে সরকারের ইনার কোর্টের সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের দেন-দরবারের ছাপ। সরকার এমনটিই চায়। বিএনপি কাঁচুমাচু করুক, বশে আসুক। সিদ্ধান্ত যা হবার, তা হবে পরে। প্রয়োজনে নির্বাচনেরও পরে। যথাসময়ে আরেকটি নির্বাচন করিয়ে নেওয়া সরকারের চ্যালেঞ্জ। বিএনপি যেমন সরকারের কাছে কোমল-কুসুমে আহ্বান করছে, সরকারও দেশি-বিদেশি কয়েকটি মহলের কাছে এবারের মতো এ চ্যালেঞ্জটি জেতার আবদার করেছে। নির্বাচন তুলে নেওয়ার পর পরবর্তীতে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করাসহ তাদের যাবতীয় কথা রাখার কথা দিচ্ছে।
অভিজ্ঞতা ও ভুক্তভোগীর জায়গা থেকে বিএনপি নিশ্চিত, এটি সরকারের বাহানা। এর আগে ২০১৪ সালে নিয়মরক্ষার নির্বাচনের কথা বলে সরকার কথা রাখেনি। বলা হয়েছিল, কিছুদিন পরই সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে। পরে এর ধারেকাছেও যায়নি আওয়ামী লীগ। এমনকি স্বীকারও করেনি ওই রকমের কোনো ওয়াদার কথা। বিএনপি উপলব্ধি করছে, সরকার এবারও যাচ্ছেতাইভাবে নির্বাচন করিয়ে নেবে। বিএনপি ওই নির্বাচনে আসবে কি আসবে না-তা নিয়ে ভাবছে না সরকার। এলে কত সিট দেওয়া হবে, আর না এলে সিটগুলো কীভাবে কাদের মধ্যে বণ্টন হবে-সেই খসড়াও সরকার করে রেখেছে। পরিকল্পিত সেই নির্বাচন রোখার শক্তি বিএনপির নেই, তা সরকার নিশ্চিত। বিএনপিও সন্দিহান। সে ক্ষেত্রে টাইম পাসের পাশাপাশি বিশ্ব পরিস্থিতি বা দ্বৈবচয়নে কোনো অঘটনের অপেক্ষা করা ছাড়া আপাতত গতি নেই তাদের।
মাঠ ছেড়ে চলে যাওয়া বা বশ্যতার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া সম্ভব নয়। আবার গর্জে উঠে মাঠ কাঁপিয়ে সরকারকে দাবড়ানি দেওয়ার রাস্তাও নেই। বাধ্য হয়ে মাঠে থাকতে হচ্ছে। দিতে হচ্ছে কোমল-কুসুম কর্মসূচি। সেই আলোকেই সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত রোডমার্চ, সমাবেশসহ ১৫ দিনের ‘গুডবয় বা হোমিও’ ধাঁচের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। কর্মসূচি ঘোষণার সময় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। তার জীবন রক্ষার্থে সরকারকে আগের সবকিছু ভুলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বিএনপির দিক থেকে এ ধরনের কান্নাকাটি-মিনতিই সরকারের প্রত্যাশিত। কিন্তু তা বহাল থাকবে সেই ধারণা করছে না সরকার। তাই বিএনপিকে ডিস্টার্বে রাখার ব্যবস্থা করে রেখেছে সরকার। শমসের মবিন চৌধুরী-তৈমূর আলম খন্দকারদের দিয়ে বিএনপি ঘরানার নতুন দল গঠনে ফুয়েল সরবরাহ রয়েছে সরকারের। তাদের সঙ্গে বিএনপির অনেকে চলে যাচ্ছেন, নির্বাচনে তাদেরকে বেশ কিছু সিট দেওয়া হবে-এ প্রচারণায় সরকারের বেশ আয়োজন রয়েছে। ‘ইসলাম’ নামযুক্ত কিছু দলকে দিয়ে নতুন জোট গঠন এবং তাদেরকেও কিছু সিট দেওয়া হবে বলে প্রচারণা আছে।
এর সমান্তরালে বিএনপির দিক থেকেও জনগণকে সরকার পতনের নমুনা দেখানো এবং কর্মীদের চাঙা রাখার চেষ্টা কম নয়। মাঠের গরম খবর দিতে না পারলেও সরকারের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা বিশ্বের ক্ষোভ এবং বিশ্ব স্নায়ুযুদ্ধের আকস্মিকতায় অক্টোবরেই এসপার-ওসপার হয়ে যাওয়ার প্রচুর তথ্য জোগান আছে তাদের কাছে। সরকারের বিপক্ষে কোনো দৈবশক্তি দেখার অপেক্ষায়ও তারা। সেই দৃষ্টে কর্মীদের বাজার পরিস্থিতিসহ অর্থনৈতিক দুরবস্থা, দুর্নীতি-দুঃশাসনে কিছু মহলের ক্ষোভ ও আন্তর্জাতিক বিশ্বের সমীকরণে গদি উল্টে যাওয়ার আশা দেখানো হচ্ছে। শোনানো হচ্ছে, পালানোর পথ পাবে না আওয়ামী লীগ। অক্টোবরেই একটা ফয়সালা চলে আসবে। অক্টোবরকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে ক্ষমতাসীনদেরও। অক্টোবরজুড়ে সারা দেশে নির্বাচনী সভা-সমাবেশ, নির্বাচনের পক্ষে রোডমার্চসহ শো-ডাউন করবে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪ অক্টোবর দেশে ফেরার দিন থেকেই আওয়ামী লীগ সারা দেশে নির্বাচনী বিশেষ জনসংযোগে নামবে।
অর্থ পাচার, দুর্নীতি, লুটপাট, অনিয়ম, কিছু নৈরাজ্যসহ যত কিছুই হোক, শেখ হাসিনাকে ছাড়া বাংলাদেশ চলবে না-এ ধারণা ও শ্রুতি ছড়ানোর চেষ্টায় সরকার অনেকটা সফল। বিএনপি হাল রাজনীতিতে আনফিট, ড্যাশিংয়ে কুলাচ্ছে না আওয়ামী লীগের সঙ্গে-মিথের মতো এ ধারণা ছড়াতে পেরেছে বিএনপির কর্মীদের মধ্যেও। সরকার যেকোনোভাবে নির্বাচন শুধু করবেই না, একপর্যায়ে বিদেশি সমর্থনও আদায় করে নেবে-এই ধারণাও ক্রমশ পোক্ত হচ্ছে বিএনপিসহ সমমনা কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। নির্বাচন ব্যবস্থাপনা আরও শিখতে ইসির একজন কর্মকর্তাকে রাশিয়া পাঠানোর খবর তাদেরকে ভাবনায় ফেলেছে। যারা এমনিতেই আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পর সামনে উত্তর কোরিয়ার স্টাইলের নির্বাচন আতঙ্কে কাহিল।
অভিজ্ঞতা ও ভুক্তভোগীর জায়গা থেকে বিএনপি নিশ্চিত, এটি সরকারের বাহানা। এর আগে ২০১৪ সালে নিয়মরক্ষার নির্বাচনের কথা বলে সরকার কথা রাখেনি। বলা হয়েছিল, কিছুদিন পরই সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে। পরে এর ধারেকাছেও যায়নি আওয়ামী লীগ। এমনকি স্বীকারও করেনি ওই রকমের কোনো ওয়াদার কথা। বিএনপি উপলব্ধি করছে, সরকার এবারও যাচ্ছেতাইভাবে নির্বাচন করিয়ে নেবে। বিএনপি ওই নির্বাচনে আসবে কি আসবে না-তা নিয়ে ভাবছে না সরকার। এলে কত সিট দেওয়া হবে, আর না এলে সিটগুলো কীভাবে কাদের মধ্যে বণ্টন হবে-সেই খসড়াও সরকার করে রেখেছে। পরিকল্পিত সেই নির্বাচন রোখার শক্তি বিএনপির নেই, তা সরকার নিশ্চিত। বিএনপিও সন্দিহান। সে ক্ষেত্রে টাইম পাসের পাশাপাশি বিশ্ব পরিস্থিতি বা দ্বৈবচয়নে কোনো অঘটনের অপেক্ষা করা ছাড়া আপাতত গতি নেই তাদের।
মাঠ ছেড়ে চলে যাওয়া বা বশ্যতার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া সম্ভব নয়। আবার গর্জে উঠে মাঠ কাঁপিয়ে সরকারকে দাবড়ানি দেওয়ার রাস্তাও নেই। বাধ্য হয়ে মাঠে থাকতে হচ্ছে। দিতে হচ্ছে কোমল-কুসুম কর্মসূচি। সেই আলোকেই সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত রোডমার্চ, সমাবেশসহ ১৫ দিনের ‘গুডবয় বা হোমিও’ ধাঁচের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। কর্মসূচি ঘোষণার সময় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। তার জীবন রক্ষার্থে সরকারকে আগের সবকিছু ভুলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বিএনপির দিক থেকে এ ধরনের কান্নাকাটি-মিনতিই সরকারের প্রত্যাশিত। কিন্তু তা বহাল থাকবে সেই ধারণা করছে না সরকার। তাই বিএনপিকে ডিস্টার্বে রাখার ব্যবস্থা করে রেখেছে সরকার। শমসের মবিন চৌধুরী-তৈমূর আলম খন্দকারদের দিয়ে বিএনপি ঘরানার নতুন দল গঠনে ফুয়েল সরবরাহ রয়েছে সরকারের। তাদের সঙ্গে বিএনপির অনেকে চলে যাচ্ছেন, নির্বাচনে তাদেরকে বেশ কিছু সিট দেওয়া হবে-এ প্রচারণায় সরকারের বেশ আয়োজন রয়েছে। ‘ইসলাম’ নামযুক্ত কিছু দলকে দিয়ে নতুন জোট গঠন এবং তাদেরকেও কিছু সিট দেওয়া হবে বলে প্রচারণা আছে।
এর সমান্তরালে বিএনপির দিক থেকেও জনগণকে সরকার পতনের নমুনা দেখানো এবং কর্মীদের চাঙা রাখার চেষ্টা কম নয়। মাঠের গরম খবর দিতে না পারলেও সরকারের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা বিশ্বের ক্ষোভ এবং বিশ্ব স্নায়ুযুদ্ধের আকস্মিকতায় অক্টোবরেই এসপার-ওসপার হয়ে যাওয়ার প্রচুর তথ্য জোগান আছে তাদের কাছে। সরকারের বিপক্ষে কোনো দৈবশক্তি দেখার অপেক্ষায়ও তারা। সেই দৃষ্টে কর্মীদের বাজার পরিস্থিতিসহ অর্থনৈতিক দুরবস্থা, দুর্নীতি-দুঃশাসনে কিছু মহলের ক্ষোভ ও আন্তর্জাতিক বিশ্বের সমীকরণে গদি উল্টে যাওয়ার আশা দেখানো হচ্ছে। শোনানো হচ্ছে, পালানোর পথ পাবে না আওয়ামী লীগ। অক্টোবরেই একটা ফয়সালা চলে আসবে। অক্টোবরকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে ক্ষমতাসীনদেরও। অক্টোবরজুড়ে সারা দেশে নির্বাচনী সভা-সমাবেশ, নির্বাচনের পক্ষে রোডমার্চসহ শো-ডাউন করবে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪ অক্টোবর দেশে ফেরার দিন থেকেই আওয়ামী লীগ সারা দেশে নির্বাচনী বিশেষ জনসংযোগে নামবে।
অর্থ পাচার, দুর্নীতি, লুটপাট, অনিয়ম, কিছু নৈরাজ্যসহ যত কিছুই হোক, শেখ হাসিনাকে ছাড়া বাংলাদেশ চলবে না-এ ধারণা ও শ্রুতি ছড়ানোর চেষ্টায় সরকার অনেকটা সফল। বিএনপি হাল রাজনীতিতে আনফিট, ড্যাশিংয়ে কুলাচ্ছে না আওয়ামী লীগের সঙ্গে-মিথের মতো এ ধারণা ছড়াতে পেরেছে বিএনপির কর্মীদের মধ্যেও। সরকার যেকোনোভাবে নির্বাচন শুধু করবেই না, একপর্যায়ে বিদেশি সমর্থনও আদায় করে নেবে-এই ধারণাও ক্রমশ পোক্ত হচ্ছে বিএনপিসহ সমমনা কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। নির্বাচন ব্যবস্থাপনা আরও শিখতে ইসির একজন কর্মকর্তাকে রাশিয়া পাঠানোর খবর তাদেরকে ভাবনায় ফেলেছে। যারা এমনিতেই আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পর সামনে উত্তর কোরিয়ার স্টাইলের নির্বাচন আতঙ্কে কাহিল।