মেয়র নির্বাচন : বাংলাদেশি ভোটস ম্যাটার

প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৩:২৭ , চলতি সংখ্যা
নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচন নিয়ে তুমুল প্রচারণা জমে উঠেছে। অন্য কমিউনিটির মধ্যে এতটা উত্তেজনা দেখা না গেলেও বাংলাদেশি কমিউনিটির মানুষেরা দেশের ঐতিহ্য পুরোপুরি বজায় রেখেছেন। ৪ নভেম্বর নির্বাচন। মেয়র নির্বাচনই শুধু হচ্ছে না, আরও অনেক পদেই ওইদিন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে। কিন্তু প্রচারণায় মনে হবে, কেবল যেন মেয়র নির্বাচন হচ্ছে এবং প্রার্থী কেবল যেন জোহরান মামদানি ও অ্যান্ড্রু ক্যুমো। অন্য সব পদের প্রার্থীদের প্রচারণা মেয়র প্রার্থীদের প্রচারণার ডামাডোলে আড়ালেই পড়ে আছে। মেয়র পদেও আরেকজন প্রার্থী আছেন-কার্টিস স্লিওয়া। প্রবাসী বাংলাদেশি আমেরিকানদের প্রচারণায় কার্টিস স্লিওয়া একেবারে অনুপস্থিত। যত মাতামাতি সব জোহরান মামদানি এবং অ্যান্ড্রু ক্যুমোকে নিয়ে।

টেলিভিশন বিতর্কে এবং বিভিন্ন টেলিজরিপ ও বিভিন্ন সংস্থার জরিপে জোহরান জামদানি এখনো অ্যান্ড্রু ক্যুমোর চেয়ে এগিয়ে। তবে অ্যান্ড্রু ক্যুমো শুরুর দিকে জামদানির চেয়ে যতটা পিছিয়ে ছিলেন, এখন অনেকটাই মামদানির থেকে ব্যবধান কমিয়ে এনে বেশ ভালো একটা নির্বাচনী লড়াইয়ের আভাস দিচ্ছেন। ক্যুমোকে সরাসরি সমর্থন দিচ্ছেন স্বয়ং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এ ছাড়া ভেতরে ভেতরে কিছু ‘বনেদি’ ডেমোক্র্যাটও ক্যুমোকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। তাই মনে করা যাচ্ছে, এই দুই প্রার্থীর মধ্যে একটা জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এ অবস্থায় শেষ হাসি কে হাসবেন-মামদানি না ক্যুমো, তা নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশের আগে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশি ভোটারদের জন্য সুখবর হচ্ছে, মূলধারায় ভোটের বাজারে বাংলাদেশি ভোটারদের কদর বাড়ছে। বাংলাদেশি আমেরিকানদের সংখ্যা বাড়ছে। ভোট বাড়ছে। ভোটের বাজারে কদরও বাড়ছে। বলা হচ্ছে, ‘বাংলাদেশি ভোটস ম্যাটার’। আগে ভোটার কম ছিল। ভোটকেন্দ্রে উপস্থিতি আরও কম ছিল। বাংলাদেশি ভোটস যে ম্যাটার করবে-এমনটা ভাবা যেত না। দিনবদলের সঙ্গে সঙ্গে সচেতনতা বাড়ছে। ভোটের কী মূল্য মূলধারায় সেটার বোধও জাগ্রত হচ্ছে।

ভোটার হওয়ার যোগ্য যারা, তারা এখন আর ভোটার রেজিস্ট্রেশনের বাইরে খুব বেশি থাকছেন না। তা ছাড়া বাঙালি অধ্যুষিত এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সব স্থানে অনেকে বাঙালি ভোটার রেজিস্ট্রেশনে যেমন উদ্বুদ্ধ করছেন, তেমনি নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে নিজেদের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশি আমেরিকান কমিউনিটি এবং মূলধারার রাজনীতি ও রাজনীতিবিদ একে অপর থেকে খুব দূরে নয়। মামদানি, ক্যুমোসহ এ দেশের অনেক বড় বড় নেতাই আমাদের অনেকের নামে পর্যন্ত চেনেন। এ আমাদের অহংকার বা গর্ব নয়, আমাদের জন্য এ এক সম্মান ও ভালোবাসা এবং আমাদের নিজগুণে অর্জন। আগামীতেও এই অর্জন অম্লান রাখতে হবে।

তবে এত আনন্দ, এত হইচইয়ের মধ্যেও একটি হতাশা কাজ করছে। মূলধারায় বাংলাদেশিদের কর্মতৎপরতা লক্ষণীয়ভাবে প্রসারিত হলেও নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে সাফল্যের চিত্র বড়ই হতাশাব্যঞ্জক। নির্বাচনে কাউন্সিল সদস্য পদে অনেকে অংশ নিলেও সাফল্যের হার দু-একজন ব্যতীত খুবই হতাশার। নিজেদের বিরুদ্ধে নিজেদের ভূমিকা রাখা ছাড়াও আরও অনেক কারণ আছে, যা অনুসন্ধান করে বের করা দরকার। নিউইয়র্কে যত বাঙালির বাস, অনেক স্টেটে অনেক কমসংখ্যক বাঙালি সত্ত্বেও তাদের সাফল্যের হার অনেক বেশি।

নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনে এবার বাঙালি প্রচার কর্মীদের স্লোগান, ‘শুধু মাঠে সরব নয়, ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ইতিহাস গড়ুন’। এখন সময় এসেছে শুধু ভোট দিয়ে ইতিহাস গড়ার নয়, এবার ভোট নিয়েও ইতিহাস গড়তে হবে।

শেষ কথা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়-পরাজয় আছে, একজন জিতবেন, অন্যরা পরাজয় বরণ করবেন। বলা হয়ে থাকে, জয়-পরাজয় বড় কথা নয়, অংশগ্রহণ করাই বড় কথা। যিনি বিজয়ী হবেন, তার কাছে নগরবাসী অবশ্যই তাদের নিরাপত্তা, বাস-বাসওয়ে, স্কুল-কলেজে শুটিং ট্র্যাজেডির অবসানে কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন। বিজিতেরাও তাদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়ে বিজয়ীর পাশে দাঁড়াবেন। বিজয়ী তার প্রতিশ্রুতি সর্বাত্মক আন্তরিকতা দিয়ে রক্ষা করবেন। নগরবাসী এটাই একান্তভাবে প্রত্যাশা করেন।
যিনিই বিজয়ী হবেন, তার জন্য ঠিকানার পক্ষ থেকে আগাম শুভেচ্ছা।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041