সিডিপ্যাপ কর্মসূচিতে সংকটে ভুক্তভোগীরা

প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ২০:৩২ , চলতি সংখ্যা
জনপ্রিয় কনজিউমার ডাইরেক্টেড পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রামের (সিডিপ্যাপ) মাধ্যমে মেডিকেইড সুবিধাভোগীরা নিজেদের পরিবারের সদস্যসহ পছন্দের কর্মী নিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও পরিচালনার  সুযোগ পেয়ে থাকেন। এত দিন পর্যন্ত প্রায় ৬০০টি আলাদা হোম কেয়ার এজেন্সি এই সেবা পরিচালনা করত। তবে ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোকুল ঘোষণা দেন, রাজ্যে এখন থেকে শুধু একটি হোম কেয়ার এজেন্সি এই প্রোগ্রাম পরিচালনা করবে। নির্বাচিত এজেন্সিটি হলো পাবলিক পার্টনারশিপস এলএলসি (পিপিএল)।
সিডিপ্যাপ বর্তমানে ২ লাখ ৫০ হাজার ব্যক্তিকে সেবা দিচ্ছে এবং প্রায় ২ লাখ কর্মী এই কর্মসূচির আওতায় বেতন পান। তবে স্টেট প্রশাসন একটি মাত্র কোম্পানির হাতে বহু বিলিয়ন ডলারের মেডিকেইড কর্মসূচিটি তুলে দেওয়ায় একের পর এক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে হাজার হাজার হোম কেয়ার সহকারী বেতন ও স্বাস্থ্যবিমা-সংক্রান্ত জটিলতার মুখে পড়েছেন। পিপিএল দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শুরু হয় নানা প্রযুক্তিগত ত্রুটি ও প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা। অনেক সহকারী অভিযোগ করেছেন, বেতন দেরিতে আসছে, ভুলভাবে প্রদান করা হচ্ছে কিংবা বিমা-সুবিধা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে।
শুধু তা-ই নয়, পিপিএলে রূপান্তর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে নানা ধরনের সমস্যা সামনে এসেছে। প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার সুবিধাভোগীর মধ্যে ৪০ হাজার জন এখনো স্থানান্তর সম্পন্ন করতে পারেননি। এ ছাড়া ৬০ হাজার জন ইতিমধ্যে সিডিপ্যাপ প্রোগ্রাম ত্যাগ করেছেন এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত পরিচর্যা সেবায় চলে গেছেন। এসব জটিলতার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের বিরুদ্ধে একটি ফেডারেল মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট অব নিউইয়র্কের ফেডারেল বিচারক ফ্রেডেরিক ব্লক গত ১০ এপ্রিল একটি অন্তর্বর্তী আদেশ জারি করেন। আদেশ অনুযায়ী, সেবাগ্রহীতারা আগামী ১৫ মে পর্যন্ত নতুন একক ফিসকাল ইন্টারমিডিয়ারি পাবলিক পার্টনারশিপস এলএলসির (পিপিএল) সঙ্গে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করার জন্য সময় পাবেন। পাশাপাশি যেসব পারসোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট এখনো পিপিএলে রেজিস্ট্রেশন করেননি, তাদের ৬ জুনের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন স্থানান্তর সম্পন্ন করতে হবে। আদালতের অনুমতিক্রমে এ সময়সীমা আরও বাড়ানো যেতে পারে।
পিপিএলের প্রেসিডেন্ট মারিয়া পেরিন দাবি করেছেন, প্রতিষ্ঠানটি রূপান্তরের প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হবে।
তবে ভোক্তা ও স্বাস্থ্যসেবা সহকারীরা একে ব্যর্থ রূপান্তর হিসেবেই চিহ্নিত করছেন। ব্রুকলিনের হোম কেয়ার সহকারী স্যামুয়েল (ছদ্মনাম) জানান, তাকে প্রথমে জানানো হয়েছিল যে তার নতুন স্বাস্থ্যবিমা ১ মে চালু হবে। পরে জানানো হয়, তার কার্যকারিতা এক মাস পিছিয়ে যাবে। এখন তিনি সম্পূর্ণভাবে স্বাস্থ্যবিমাহীন অবস্থায় রয়েছেন এবং একমাত্র বিকল্প হিসেবে ব্যয়বহুল ব্যক্তিগত বিমা কেনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্যামুয়েল বলেন, দুই মাস ধরে কোনো ডাক্তার দেখাতে পারছি না, কোনো স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছি নাÑএটা অমানবিক। পুরো ব্যবস্থাটাই বিশৃঙ্খল।
এ ধরনের অভিযোগ ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকায় পশ্চিম নিউইয়র্কের ফেডারেল আদালতে পিপিএল এবং স্টেট ডিপার্টমেন্ট অব হেলথের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে ব্যাপক মজুরি চুরি, ন্যূনতম মজুরি না দেওয়া, অতিরিক্ত সময়ের পারিশ্রমিক না দেওয়া, নির্ধারিত সময়ের বাইরে কাজের জন্য বোনাস প্রদানে ব্যর্থতা এবং মজুরি বিলম্বে প্রদান।
সহকারীদের অভিযোগ, টাইমশিটের হিসাব বিভ্রাট, অনির্দিষ্ট নিয়মাবলি এবং গ্রাহকসেবার অদক্ষতার কারণে প্রতিদিন প্রশাসনিক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। লরি নামের এক প্রাক্তন নার্স, যিনি তার সন্তানের দেখভাল করছেন, বলেন, ‘প্রতিদিন মনে হয় নতুন কোনো বাধা পেরোতে হচ্ছে। নিয়মকানুনের কোনো সুসংহত বই নেই। একসময় বিরক্ত হয়ে এই প্রোগ্রাম থেকেই বের হয়ে আসতে হতে পারে।’
স্টেট সিনেটের স্বাস্থ্য কমিটির চেয়ারম্যান গুস্তাভো রিভেরা বলেন, ‘প্রথম থেকেই জানতাম এই বিশৃঙ্খলা হবে। গভর্নরের অফিস পরিস্থিতি এড়িয়ে গেছে, যা ছিল একধরনের অদূরদর্শিতা।’
স্টেট ডিপার্টমেন্ট অব হেলথের মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রশাসনিক বিষয়ক বিস্তারিত তথ্যের জন্য পিপিএলের মুখপাত্র লেসি হাউটজিঙ্গারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। হাউটজিঙ্গার দাবি করেছেন, প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহক সেবায় সহায়তার জন্য সপ্তাহে ছয় দিন খোলা কল সেন্টার, ইনপার্সন অ্যাপয়েন্টমেন্ট এবং ওয়েবিনার চালু রেখেছে।
স্বাস্থ্য পরিষেবা কর্মী ইউনিয়ন ১১৯৯ঝঊওট-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট হেলেন শব বলেন, ভোক্তাদের ও সহকারীদের কাছ থেকে আসা অভিযোগ উদ্বেগজনক। তবে তিনি দাবি করেন, আগের ফিসকাল ইন্টারমিডিয়ারিগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে এই রূপান্তর প্রক্রিয়াকে জটিল করে তুলেছিল। কোম্পানির ওপর এখনো আস্থা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ গল্পের শেষ এখনো হয়নি। তবে আপাতত সামনে এগোনোর একমাত্র উপায় হলো এই চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়েই এগিয়ে চলা।
এদিকে আগামী ১৫ মের মধ্যে সকল সিডিপ্যাপ গ্রহীতাকে পিপিএলের অধীনে কেস স্থানান্তর করতে হবে। যারা ১৫ মের মধ্যে পিপিএলের কাছে স্থানান্তর করবেন না, তারা সেবা পাবেন না। তবে হাল ছাড়তে না রাজি নয় কিছু হোম কেয়ার এজেন্সি। তারা এখনো তাদের কিছু কিছু রোগীকে তাদের কোম্পানির অধীনে সিডিপ্যাপেই রাখতে চাইছে। তারা দেখতে চাচ্ছে ১৫ মের মধ্যে কে কে প্যাকেজ পরিবর্তন করে। তারা আশা করছে, তাদের এজেন্সি হয়তো আগামী দিনে সিডিপ্যাপ সেবা দেওয়ার যোগ্য হলেও হতে পারে। সে জন্য একটি মামলা করতে হবে। এই মামলা হলে মামলায় আদেশ কী হবে, সে জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
এ ব্যাপারে বারী হোম কেয়ারের সিইও আসেফ বারী বলেন, সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পিপিএলের কাছে কেস ট্রান্সফার করতে হবে। যারা কেস ট্রান্সফার করবেন না, তারা তখন হয়তো সেবা পাবেন না। কারণ ১৫ মের মধ্যে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত আসার সম্ভাবনা দেখছি না।
কমিটেড হোম কেয়ারের ভাইস প্রেসিডেন্ট গিয়াস আহমেদ বলেন, এখনো অনেকেই পিপিএলের কাছে না গিয়ে অপেক্ষা করছেন। তারা শেষ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চান। তবে আমরা বলছি, যারা এখনো পিপিএলের অধীনে যাননি, তারা চলে যেতে পারেন। পরে যদি দেখা যায়, পিপিএলের পাশাপাশি অন্য এক বা একাধিক এজেন্সিকে সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে তখন তারা চাইলে এজেন্সি পরিবর্তন করতে পারবেন।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078