মার্ক কার্নি কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী

নির্বাচিত হয়েই ট্রাম্পকে কঠোর বার্তা

প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৫, ১৫:৪৬ , চলতি সংখ্যা
কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন মার্ক কার্নি। তিনি বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত হবেন। মার্ক কার্নি ব্যাংক অব কানাডার গভর্নর ছিলেন। তিনি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডেরও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ৯ মার্চ রবিবার রাতে কানাডার ক্ষমতাসীন দল লিবারেল পার্টি মার্ক কার্নিকে নতুন দলীয় নেতা হিসেবে নির্বাচিত করে। নিয়ম অনুযায়ী এখন তিনি নতুন প্রধানমন্ত্রী হবেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ট্রুডো তার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। 
তিনি এমন সময় কানাডার প্রধানমন্ত্রী হলেন যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির ‘বাণিজ্য যুদ্ধ’ শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পরই কার্নি মার্কিন প্রেসিডেন্ট  ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক নিয়ে কঠোর বার্তা দিলেন। কানাডার পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপকে ‘নিজেদের জীবনের সবচেয়ে বড় সংকট’ হিসেবে অভিহিত করেছেন কার্নি। 
তিনি বলেন, ‘আমরা এই (বাণিজ্য) লড়াই চাইনি। কিন্তু কেউ তার হাতের গ্লাভস ফেলে দিলেও কানাডাবাসী সবসময় প্রস্তুত থাকে। মার্কিনিদের কোনো ভুল করা উচিত নয়। হকি খেলার মতো বাণিজ্য লড়াইয়েও কানাডা জিতবে।’
দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হয়েই কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে অভিহিত করে কটাক্ষ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ‘গভর্নর ট্রুডো’ হিসেবে ডেকেছেন তিনি। ট্রাম্পের এই মন্তব্যের জবাব কিছুটা ঘুরিয়ে দিয়েছেন কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কুর্নি। 
তিনি বলেন, ‘আমেরিকা কানাডা নয়। এবং কানাডা কখনো, কোনোদিন কোনোভাবে আমেরিকার অংশ হবে না।’ সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ জানিয়েছে, এ সপ্তাহের যে কোনো একদিন কানাডার গভর্নর জেনারেলের কাছে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন মার্ক কার্নি। কানাডার গভর্নর জেনারেল যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসের প্রতিনিধি। নতুন প্রধানমন্ত্রী কার্নি এপ্রিলের শেষ দিকে কানাডায় নতুন সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দিতে পারেন।
গত ৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রিত্ব ও দলীয় প্রধানের পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন জাস্টিন ট্রুডো। তিনি ২০১৫ সালে প্রথম দেশটির প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ে। এ সময় তিনি সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা  দেন।  লিবারেল পার্টির নেতা হওয়ার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মার্ক কার্নি ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৭৪ ভোট পান। মোট ভোটের প্রায় ৮৫.৯ শতাংশ এটা। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড পেয়েছেন ১১ হাজার ১৩৪ ভোট, কারিনা গোল্ড ৪ হাজার ৭৮৫ ভোট এবং ফ্রাঙ্ক বেলিস পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৮ ভোট।
কে এই মার্ক কার্নি? : নর্থ-ওয়েস্টার্ন টেরিটরিজে জন্ম নেওয়া এবং আলবার্টা প্রদেশে বেড়ে ওঠা কার্নি নিজেকে রাজনীতির বাইরের একজন হিসেবে উপস্থাপন করেন। তিনি অর্থনৈতিক অস্থিরতার সময় কানাডাকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারেন। কার্নি হার্ভার্ড ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়েছেন এবং বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকসে এক দশকেরও বেশি সময় কাজ করেছেন। তিনি ব্রুকফিল্ড অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন, যেখানে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিনিয়োগের প্রচারণা চালিয়েছেন।
২০০৮ সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার সময় তিনি ব্যাংক অব কানাডার গভর্নর ছিলেন এবং তাৎক্ষণিক ও কার্যকর সিদ্ধান্তের মাধ্যমে কানাডাকে বড় ধরনের অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করেন।
২০১৩ সালে তিনি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেন এবং ২০২০ সালে যুক্তরাজ্য আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইউ) থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া পর্যন্ত ওই পদে ছিলেন।
তিনি এর আগে জাস্টিন ট্রুডোর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। তবে, সরাসরি কোনো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। ফলে, নেতৃত্বের দৌড়ে সাধারণ জনগণের কাছে নিজের পরিচিতি বাড়ানোর জন্য তাকে অনেক বেশি প্রচারণা চালাতে হয়েছে। সূত্র: এবিসি ও রয়টার্স।
কানাডায় শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য বর্জন : কানাডার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের পর আর দেরি করেনি। টরন্টোর একটি পানশালা তাদের মেনু থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সব পণ্য সরিয়ে নেয়।
এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে, পানশালায় পানীয়সহ সব ধরনের খাবার অবশ্যই হতে হবে কানাডার উৎপাদিত। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের বিকল্প কোনো পণ্য যদি কানাডার না থাকে, তাহলে ইউরোপের অন্য কোনো দেশ বা মেক্সিকোর খাবার রাখা হবে। কোনোভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের নয়।
এমনকি কানাডার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল সিবিসি মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম জাগিয়ে তুলতে একটি অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু করেছে। এতে কানাডার নাগরিকদের প্রশ্ন করা হয়, ট্রাম্প যে বারবার কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন, সেটা নিয়ে তাঁরা কী মনে করেন।
এই অনুষ্ঠানে প্রশ্নের জবাবে কানাডার মানুষ ট্রাম্পকে ‘বিশ্বাসঘাতক’, ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’, ‘বেইমান’ বলে আখ্যায়িত করেন।
অবশ্য চলতি সপ্তাহে ট্রাম্প কানাডার কিছু পণ্যের ওপর থেকে আরোপিত শুল্ক তুলে নিয়েছেন। আবার কিছু কিছু শুল্ক ২ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত করেছেন। তাতে কানাডার মানুষের ক্ষোভ কমেনি। অনেক কানাডীয় বলছেন, ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প শুল্ক স্থগিত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি সিএনএনকে বলেন, ‘আমাদেরকে ৫১তম অঙ্গরাজ্য, আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে গভর্নর বলে ট্রাম্প প্রশাসন কানাডার প্রতি ব্যাপক মাত্রায় অসম্মান দেখিয়েছে।’
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078