হোম কেয়ার সার্ভিস নিয়ে গ্রাহকরা দোটানায়

প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮:৪১ , চলতি সংখ্যা
সিডিপ্যাপের মাধ্যমে নিউইয়র্কে হোম কেয়ার সেবা যারা নিচ্ছেন, একই সেবা অব্যাহত রাখতে হলে তাদের কেস ২৮ জানুয়ারির মধ্যে পিপিএলের অধীনে স্থানান্তর করতে হবে। সেবাগ্রহীতা তার সেবার কেসটি পিপিএলের কাছে ফোন করে, তাদের সাইট লগ করে অথবা ইনপারসন অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে স্থানান্তর করতে পারবেন। এ ছাড়া তাদের সার্বক্ষণিক সেবা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ফোন নম্বর রয়েছে, সেখানে তারা ফোন করে কথা বলতে পারবেন। কেউ ফোন করে কেস স্থানান্তর করতে চাইলে পিএলএলের এজেন্ট যেসব প্রশ্ন করবেন, এর উত্তর দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে রোগীকেই বা সেবাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকেই এটি করতে হবে। তাহলে তার সেবায় কোনো পরিবর্তন হবে না এবং তার সেবাটি একদিনের  জন্য বাতিল হবে না বা সেবা পেতে কোনো সমস্যা হবে না। যারা তা করবেন না, তাদের হোম কেয়ার এজেন্সি যদি পিপিএলের অধীনে যায়, তাহলে এর মাধ্যমেও যাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। তবে কোনোভাবেই এটা মনে করা ঠিক হবে না যে স্থানান্তর না করলেও চলতেই থাকবে। স্থানান্তর করতে হবে হয় নিজে নিজে অথবা পিপিএলের নিজস্ব অংশীদারদের মাধ্যমে। যারা এখনই করতে চান না, তাদের হাতে ২৮ মার্চ পর্যন্ত সময় রয়েছে।
তবে বাংলাদেশি কমিউনিটির বেশির ভাগ হোম কেয়ার এজেন্সি চাইছে শেষ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে। আদালত থেকে কী আদেশ আসে সে জন্য। একাধিক এজেন্সি বলছে, পিপিএলের অধীনে কেস স্থানান্তর করতে হবে। তবে আমরা শেষ সময় পর্যন্ত দেখতে চাই। আমরা চেষ্টা করব রোগীদেরকে একই রকমভাবে সেবা দেওয়ার। সেই হিসেবে আমাদের পুরো হোম কেয়ার এজেন্সি পিপিএলের অধীনে চলে যাবে। রোগীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এতে করে রোগীর কোনো কিছু পরিবর্তন হবে না। আর পিপিএলের অধীনে স্থানান্তর নিয়ে নানাজন নানা কথা বলছে, এটি বলার তেমন কোনো সুযোগ নেই। কারণ নিউইয়র্ক স্টেটের স্বাস্থ্য বিভাগ স্পষ্ট করেছে কী করতে হবে।
সূত্র জানায়, সিডিপ্যাপের মাধ্যমে বিভিন্ন হোম কেয়ার এজেন্সি একজন সেবাগ্রহীতাকে তার পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে সেবা নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। এই সেবা গ্রহণের ফলে অনেক পরিবার বেশ ভালো আছে। আগে একজন বয়স্ক বাবা-মা, কিংবা শ্বশর-শাশুড়িকে সেবা দিতে গিয়ে তাদের জন্য বাড়তি যে অর্থ খরচ হতো, তা করতে পারতেন না বেশির ভাগ মানুষ। এ কারণে সেবাযত্নও তেমন হতো না। কারণ সংসারের খরচ চালানোর জন্য সবাইকে ঘরে-বাইরে ব্যস্ত থাকতে হতো। সিডিপ্যাপ হোম কেয়ার সেবা এ ক্ষেত্রে আশীর্বাদ হয়ে আসে। এর মাধ্যমে একজন বয়স্ক ও অক্ষম মানুষ তার পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে সেবা পান। এ জন্য তিনি যত ঘণ্টা কাজ করবেন, তার জন্য পেমেন্ট পাবেন। সেই অর্থ দিয়ে তিনি পরিবারের ও তার খরচ চালাতে পারবেন। সেই সঙ্গে এই আয় সম্পূর্ণ করমুক্ত। আবার এই আয় দিয়ে আর্নড ইনকাম ট্যাক্স ক্রেডিট ও চাইল্ড ট্যাক্স ক্রেডিটও পাওয়া যায়। এই সেবা এত দিন ধরে বিভিন্ন হোম কেয়ার এজেন্সি দিচ্ছিল। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এই সেবার বিষয়টি পিপিএলসহ আরও ২৯টি কোম্পানির কাছে যাওয়ার কথা। যারা সিডিপ্যাপের সেবা পিপিএলের কাছে স্থানান্তর করতে চান, তাদের জন্য কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এদিকে বর্তমান হোম কেয়ার এজেন্সি থেকে কেউ সিডিপ্যাপ সেবা রেখে পিপিএলের অধীনে যেতে হলে কী কী করতে হবে, সে সম্পর্কে পিপিএল তার নিজস্ব ওয়েবসাইটে এর ঘোষণা দিয়েছে। নিউইয়র্ক স্টেট হেলথ থেকেও এ বিষয়ে নির্দেশনা এসেছে। অনেকেই বলছেন, পিপিএলের অধীনে না গেলে সেবা বন্ধ হয়ে যাবে। সে জন্য অনেক সেবাদাতা ও সেবাগ্রহীতা ভয়ে আছেন। তারা মনে করছেন, এখনই পরিবর্তন করতে হবে। পিপিএলের অধীনে না গেলে সেবা থাকবে না। আবার কোনো কোনো হোম কেয়ার এজেন্সি এটাও বলছে, যারা সেবা অব্যাহত রাখতে চান তাদেরকে পিসিএ ট্রেনিং করে অন্য কারও দ্বারা সেবা নিতে হবে। যারা এখন পরিবারের সদস্যদের সেবা করছেন, তারা তখন পরিবারের সদস্যদের সেবা করতে পারবেন না। অন্য কারও সেবা করবেন। এতে তার আয় ঠিক থাকবে। এই আয় করমুক্ত হবে না। এই আয়ের জন্য তাকে কর দিতে হবে।
এ নিয়ে কমিউনিটির অনেকের মধ্যে ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে। নানামুখী কথাবার্তার কারণে যারা সিডিপ্যাপের মাধ্যমে সেবা নিচ্ছেন, তারা অনেকেই দোটানায় পড়ে গেছেন। চিন্তা করছেন, এখন যে এজেন্সির মাধ্যমে আছেন, সেখানে থেকেই সেবা নেবেন। যখন বন্ধ করে দেয়, তখন দেখবেন কী হয়। সে অনুযায়ী তখন ব্যবস্থা নেবেন। আবার কেউ কেউ বলছে, হোম কেয়ারের সেবা নিলে অন্য কারও সেবা নিতে হবে। যারা কাজ করেন তারা পিসিএর মাধ্যমে সেবা নিন।
এ ব্যাপারে এলেগ্রা হোম কেয়ার ও বাংলা সিডিপ্যাপের প্রেসিডেন্ট ও সিইও মুক্তিযোদ্ধা ড. আবু জাফর মাহমুদ বলেন, আসলে হোম কেয়ারের সিডিপ্যাপ সেবা নিয়ে অনেকেই অনেক রকম বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। কিন্তু আমি বলব, এখন যে যে এজেন্সির অধীনে সেবা নিচ্ছেন, তারা একই রকমভাবে সেবা নিতে থাকুন। এখনই এজেন্সি পরিবর্তন করে অন্য কোনো এজেন্সির অধীনে যাবেন না। কারণ একই ধরনের সেবা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি যাতে করে পিপিএলের অধীনে এককভাবে না যায়, সে জন্য মামলা চলছে। এই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে বলব, আপনারা অপেক্ষা করুন। দেখুন আদালতে কী সিদ্ধান্ত আসে। এ ছাড়া পিপিএলকে মার্চ মাসের মধ্যে ৬০ হাজার গ্রাহক তৈরি করতে হবে। ৬০ হাজার গ্রাহক হলেই তারা নতুন নিয়মে সিডিপ্যাপের সেবা দেবে। তারা ৬০ হাজার গ্রাহক না পেলে তখন তো এটি পাবে না। সে জন্যই বলব মার্চের মধ্যে ৬০ হাজার পিপিএল গ্রাহক করতে পারে কি না সেটি দেখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সিডিপ্যাপ ছাড়া পিসিএ এবং এইচএইচএ সেবা নিলে সেই সেবা একই রকম হবে না। আমরা আমাদের পারিবারিক কমিউনিটিতে বসবাস করি। যৌথ পরিবার, এখানে আমরা একসঙ্গে থাকি। এ কারণে পারিবারিক বন্ধন ও সেবা ধরে রাখা জরুরি। এখন পারিবারিক পরিবেশে একজন সেবা পাচ্ছেন। এখানে মানসিক প্রশান্তির একটি বিষয় আছে। ফলে তারা পরিবারের মানুষকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো নার্সকে দিয়ে সেবা দিলে সেই রকম সেবা পাবেন না। আমরা বিভিন্ন কারণ বিবেচনায়ই চাইছি, বর্তমানে যে রকম হোম কেয়ার সেবা সিডিপ্যাপে রয়েছে, সেটি থাকবে। এ জন্য আমরা কাজ করছি। এই সেবা বন্ধ করে দিলে ছয়শ’র বেশি হোম কেয়ার এজেন্সি ব্যবসায়ীর অবস্থাও খারাপ হবে। অনেকে ব্যবসাও বন্ধ করে দেবেন।
বারী হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট ও সিইও আসেফ বারী টুটুল বলেন, কনজ্যুমার ডাইরেক্টেড পারসোনাল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রাম (সিডিপ্যাপ) ও অন্যান্য হোম কেয়ার সেবা দিয়ে আসছে। সম্প্রতি সিডিপ্যাপ সেবা নিয়ে বেশ কিছু বিভ্রান্তি এবং গুজব রয়েছে। সিডিপ্যাপ সেবা বন্ধ হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। সিডিপ্যাপ সার্ভিস বন্ধ হওয়ার শঙ্কার খবরগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিমূলক।
তিনি আরও বলেন, যারা সিডিপ্যাপের আওতায় আছেন, তারা আগের মতোই সেবা পাবেন। সেবা এবং ঘণ্টাপ্রতি রেট অপরিবর্তিত থাকবে। কোনো এজেন্সি পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। রোগীরা তাদের পছন্দের এজেন্সির মাধ্যমেই সেবা নিতে পারবেন। পিসিএ সেবা স্থানান্তরের দরকার নেই, সিডিপ্যাপ সেবার মান ও সুযোগ-সুবিধা ঠিক আগের মতোই থাকবে। ইদানীং কিছু অসাধু এজেন্সি এবং পিপিএল নামের একটি কোম্পানি রোগীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তারা রোগীদের সরাসরি কল, মেসেজ বা চিঠি দিয়ে দ্রুত রেজিস্ট্রেশনের জন্য চাপ দিচ্ছে। এর কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আপনারা যে এজেন্সির সেবা নিচ্ছেন, সেখানেই থাকতে পারবেন।
আসেফ বারী টুটুল বলেন, এখনই আমরা পিপিএলের অধীনে যাচ্ছি না। মার্চের মধ্যে যেতে হবে। হাতে সময় আছে। এর মধ্যে কিছু পরিবর্তনও আসতে পারে। এই পরিবর্তন কী আসবে, তা আমরা জানি না। তাই আমরা অপেক্ষা করব। তবে যে নিয়ম করা হয়েছে, এই নিয়ম যদি পরিবর্তন নাও হয়, সমস্যা নেই। নতুন নিয়মে আমরা যারা হোম কেয়ার এজেন্সি আছি, সেসব হোম কেয়ার এজেন্সিকে পিপিএলের অধীনে যেতে হবে। সেখানে গেলেও আমাদের গ্রাহকদের একই প্রোগ্রামের অধীনে সেবা দিতে পারব। এতে এজেন্সিগুলো লোকসানের মুখোমুখি হবে, আমাদের আয়ও কমবে কিন্তু গ্রাহক ও সেবাদাতাদের কোনো সমস্যা হবে না। তাই গ্রাহকদের বলব, এখনই তাড়াহুড়ো করে পিপিএলের অধীনে যাবেন না। আমরা এজেন্সি হিসেবেই যাব। তখন যারা যোগ্য, তারা সবাই সেবা পাবেন।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078