সন্ত্রাস, নৈরাজ্য থেকে মুক্তির উপায় কী?

প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২২ , চলতি সংখ্যা
প্রবাসের সব মানুষ, স্বদেশের মানুষ এবং সব রাজনৈতিক দল সকলেই কায়মনোবাক্যে চায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সফল হোক। তাদের সংস্কার পরিকল্পনা সাফল্য লাভ করুক। ক্ষমতাপ্রত্যাশী কোনো দলের মধ্যেই ক্ষমতায় বসার জন্য কোনো তাড়াহুড়ো লক্ষ করা যাচ্ছে না। এমনকি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যেও দেশে ফিরে এসে দল পরিচালনার জন্য তাড়াহুড়ো নেই। বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দিচ্ছেন তিনি। দীর্ঘদিন প্রবাসজীবনে থাকলেও তিনি যেভাবে দল পরিচালনায় প্রাজ্ঞতার পরিচয় দিচ্ছেন, তা সত্যি প্রশংসনীয়।
আসলে বাংলাদেশে সময়টা এখন এমনই যে নিজের ছায়া দেখলেও মানুষ ভয়ে আঁতকে ওঠে। না জানি কে আমাকে অনুসরণ করছে। কতটা কঠিন বিশ্বাস ও আস্থা নিয়ে ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ১৬ বছরের একটা সরকারকে হটিয়ে পরিচ্ছন্ন একটা রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে এত রক্ত ও প্রাণের বিনিময়ে সফল একটা আন্দোলন করল। যার ফলে গঠিত হলো নতুন একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নোবেলজয়ী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে। মানুষের কত স্বপ্ন, কত আশা। ৫৩ বছর পর মানুষের সব স্বপ্ন, প্রত্যাশা এবার পূরণ হবে।
দেশের সব মানুষ আনন্দ, উদ্দীপনা ও উৎসবে মেতে ইউনূস সরকারের প্রতি সমর্থন দিল। তাদের প্রত্যাশা নতুন সরকার মানুষের গত ১৬ বছরের দুঃখ-কষ্ট, জ্বালা-যন্ত্রণা, না পাওয়ার বেদনা এবং ছেলেসন্তান হারানোর হাহাকার সব ভুলিয়ে দিতে সক্ষম হবে তাদের কর্মের মাধ্যমে। দেশের সব রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের অবর্তমানে সবচেয়ে বড় দুই দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী নিঃশর্ত সমর্থন ব্যক্ত করে বলল, এই সরকারকে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। তখন সবার মনে আস্থা প্রবল হলো সরকারের ওপর। কিন্তু পরিণতি দাঁড়াচ্ছে কী? কেউ বলছে দেশে দাঙ্গা বেধে যাওয়ার শঙ্কা। শঙ্কা প্রকাশের যথার্থ কারণও দেখা যাচ্ছে। চারদিকে দাবির সুনামি। দুদিন আগেই যারা এক হয়ে হাত-ধরাধরি করে পুলিশের বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিয়েছে, আজ তারা নিজেরাই কেন নিজেদের ধ্বংস উৎসবে মেতে উঠেছে।
ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ এবং মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ছাত্রদের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, বীভৎস তাণ্ডব, তিন কলেজে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের চিত্র দেখে দেশের মানুষ অত্যন্ত হতাশ। একটি সফল গণ-অভ্যুত্থান এত দ্রুত প্রায় ব্যর্থতার মুখে এসে দাঁড়াবে, তা কারও ভাবনার মধ্যে ছিল না। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী সমন্বয়কদের মধ্যে মতবিরোধ, অন্তর্দ্বন্দ্বের সুযোগে দেশে দাঙ্গা বাধানোর চক্রান্ত চলছে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে গোদের ওপর আরেক বিষফোড়া হয়ে দেখা দিয়েছে সাম্প্রদায়িক সংঘাতের আশঙ্কা। একজন চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারী বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মূলে কুঠারাঘাত করে এক ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশে ছোটখাটো বেশ কয়েকটি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত হলেও বর্তমানে হিন্দুধর্মীয় গুরু চিন্ময় কৃষ্ণদাসকে ঘিরে বেশ কিছুদিন ধরে চট্টগ্রাম, রংপুর, ঢাকায় তুলকালাম ঘটে চলেছে। এ যেন নতুন করে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা বাধানোর খেলা। চিন্ময় কৃষ্ণদাসের সমর্থকেরা চট্টগ্রামে ইতিমধ্যে সাইফুল ইসলাম আলিফ নামের একজন সরকারি আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। তারা বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সব সীমানা ভেঙেচুরে মহা লঙ্কাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
চিন্ময় কৃষ্ণদাস ইসকনের বহিষ্কৃত এক নেতা, সনাতন ধর্মানুসারীদেরই কেউ নন। তবু তাকে নিয়ে কী উন্মাদনা। অনেকেরই সন্দেহ, এর পেছনে বড় কোনো চক্রান্ত আছে। ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে অনেক কিছুই বাংলাদেশে ঘটে চলেছে, সেসব ঘটনা নেহাত গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে সাধারণভাবে ঘটে থাকে, তেমন নয়। এ যেন বাংলাদেশের মূল আদর্শকে আঘাত করার এক চক্রান্ত। এ চক্রান্তকে সম্মিলিতভাবে রুখতে হবে। এরা সুচ হয়ে ঢোকে আর ফাল হয়ে বের হয়। সূচনাতেই এদের রুখে দিতে না পারলে আখেরে পস্তাতে হবে। তাই বাংলাদেশকে যেকোনো ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করতে হলে এখন থেকেই সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। এই শত্রুকে সম্মিলিতভাবে রুখতে হবে। দেশের শত্রুকে কখনো প্রশ্রয় দিয়ে বাড়তে দেওয়া যাবে না। তাহলে সমূহ সর্বনাশ ঠেকানো যাবে না। তাই সময় থাকতে সবাইকে সচেতন হতে হবে নিজেদের সর্বনাশ ঠেকাতে।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078