নারীত্ববাদ

প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪৩ , চলতি সংখ্যা
ব্যবহার করা কপালের টিপটার আঠা নষ্ট হলেও মেয়েরা সেটা যত্ন করে রেখে দেয়। একজোড়া কানের দুলের একটা হারিয়ে গেলেও অন্যটা ফেলে না। পুরোনো শাড়িটা, ভাঙা চুড়িটা কাজে লাগবে না জেনেও তুলে রাখে, কারণ হলো মায়া। মেয়েরা মায়ার টানে ফেলনা জিনিসও ফেলে না। তীব্র কষ্ট-যন্ত্রণা পেয়েও মেয়েরা মায়ার টানে একটা ভালোবাসা, একটা সম্পর্ক, একটা সংসার টিকিয়ে রাখতে চায়। এ জন্য মেয়েরা মায়াবতী আর মায়াবতীর কোনো পুরুষবাচক শব্দ নেই।
রমণী একরকম অনাবশ্যক, ইচ্ছা বিবর্ণ ঝাঁজালো। নারী শুধু কাচের ছায়া, অপ্রতিবিম্ব কাচ, শুধু কাচ। চরিত্রহীনা নারী চরিত্রহীন পুরুষের জন্য, আর চরিত্রহীন পুরুষ চরিত্রহীনা নারীর জন্য। সচ্চরিত্রবতী নারী সচ্চরিত্রবান পুরুষের জন্য, আর সচ্চরিত্রবান পুরুষ সচ্চরিত্রবতী নারীর জন্য। তুমি আমাকে শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাকে শিক্ষিত জাতি দেব। নারীর হৃদয় নাকি সাপের মতো বুদ্ধি, গাধার মতো বোকা, রূপটা দেবীর, চোখটা ধাঁধা।
পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো অন্ধকার সমাজে যখনই কোনো নারী পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে উঠেছে, নিজের স্বাধীনতার কথা বলেছে, ভাঙতে চেয়েছে পরাধীনতার শেকল, তাকেই গালি দেওয়া হয়েছে পতিতা বলে। একজন মেয়ে একজন পুরুষকে বিয়ে করে পুরুষটির চরিত্রের জন্য, তারপর সারা জীবন চেষ্টা করে সেই চরিত্রটি বদলানোর। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছিলেন, কোন কালে একা হয়নিকো জয়ী পুরুষের তরবারী; প্রেরণা দিয়েছে, শক্তি দিয়েছে, বিজয়ালক্ষ্মী নারী।
যখন রাত আসে তখন ঘুম আসে, যখন ঘুম আসে তখন স্বপ্ন আসে, যখন স্বপ্ন আসে তখন তুমি আসো, যখন তুমি আসো তখন ঘুমও আসে না, স্বপ্নও আসে না। বধূ তোমার গরবে গরবিনী নাম রূপসী, তোমার রূপে হেন মনে হয় ও দুটি চরণ সদা নিয়ে রাখি বুকে। দরিদ্র পুরুষদের প্রতি মেয়েদের একপ্রকার মায়া জন্মে যায়, আর এই মায়া থেকে জন্মায় ভালোবাসা, আর সেটাই হলো প্রকৃত ভালোবাসা।
সুন্দরী মেয়েদের হাতের লেখা সুন্দর হয়। এটা হলো নিপাতনে সিদ্ধ। সুন্দরীরা মনেপ্রাণে জানে তারা সুন্দর। তাদের চেষ্টাই থাকে তাদের ঘিরে যা থাকবে সবই সুন্দর হবে। মেয়েরা অতি দূরের আত্মীয়কে কাছের মানুষ প্রমাণ করার জন্য চট করে তুই বলে। যে পুরুষ অসংশয়ে অকুণ্ঠিতভাবে নিজেকে প্রচার করতে পারে, সেই সমর্থ পুরুষ সহজেই নারীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে। মেয়েদের চরিত্রের মাধুর্য পাওয়া যায় কুমারী অবস্থায়। সাধারণত স্ত্রীজাতি কাঁচা আম, ঝাল লঙ্কা এবং কড়া স্বামীই ভালোবাসে। যে দুর্ভাগ্য পুরুষ নিজের স্ত্রীর ভালোবাসা হতে বঞ্চিত, সে যে কুশ্রী অথবা নির্ধন তা নয়; সে নিতান্ত নিরীহ।
নারী দাসী বটে, কিন্তু সেই সঙ্গে নারী রানিও বটে। নিজেদের অধিকারের ব্যাপারে সামান্য সচেতন হলে মেয়েরা নিশ্চয় বুঝত যে জগতে যত নির্যাতন আছে মেয়েদের বিরুদ্ধে, সবচেয়ে বড় নির্যাতন হলো মেয়েদেরকে সুন্দরী হওয়ার জন্য লেলিয়ে দেওয়া। মেয়েমানুষদের এরকম হয়, ওরকম হয়, সব রকম হয়, শুধু মনের মতো হয় না।
স্ত্রীলোকদের ব্যাপারে তোমরা কল্যাণের উপদেশ গ্রহণ করো। কেননা তাদেরকে তৈরিই করা হয়েছে পাঁজরের হাড় থেকে, আর পাঁজরের যা সবচেয়ে বক্র, তা উপরের অংশে থাকে। তুমি যদি তা সোজা করতে যাও, তবে তা ভেঙে যাবে। আর যদি এমনি ছেড়ে দাও, তবে তা চিরদিন বক্রই থেকে যাবে। অতএব, তাদের ব্যাপারে কল্যাণের অসিয়ত গ্রহণ করো।
ছেলেটি তার বিছানা গুছিয়ে না রাখলে মা খুশি হয়, দেখতে পায় একটি পুরুষের জন্ম হচ্ছে; কিন্তু মেয়েটি বিছানা না গোছালে তা দেখে মা ভয়ে শঙ্কিত হয়ে ভাবে একটি নারীর মৃত্যু হচ্ছে। আবার পুরুষের বুদ্ধি খড়গের মতো; শাণ বেশি না দিলেও কেবল ভারেই অনেক কাজ করতে পারে। মেয়েদের বুদ্ধি কলম-কাটা ছুরির মতো; যতই ধার দাও না কেন, তাতে বৃহৎ কাজ চলে না। তবে ছেলেদের জন্য পৃথিবীতে সবচাইতে মূল্যবান হলো মেয়েদের হাসি।
যে গর্ভ তোমাকে ধারণ করেছে, সে গর্ভধারিণী মায়ের প্রতি কর্তব্য করো ও শ্রদ্ধা নিবেদন করো। মেয়েদের চোখে দুই রকমের অশ্রু থাকেÑএকটি দুঃখের, অপরটি ছলনার। পৃথিবীতে বা সমুদ্রে যত হিংস্র প্রাণী আছে, সবচেয়ে বৃহত্তম প্রাণী হলো মানুষের মন। উন্নত দেশগুলো দেখলে বোঝা যায়, যে সমাজে শিক্ষিত, স্বনির্ভর, সচেতন মেয়ের সংখ্যা বেশি, সে সমাজে বিচ্ছেদের সংখ্যাটা বেশি, বিয়ের সংখ্যাটা কম।
মেয়েদের স্বভাবই হচ্ছে হালকা জিনিস নিয়ে মাতামাতি করা। আর গল্প-উপন্যাস হলো অল্পবয়সী মেয়েদের মাথা খারাপের মূল কারণ। হুমায়ুন আজাদের মতে, গত দুইশ বছরে গবাদিপশুর অবস্থার যতটা উন্নতি ঘটেছে, নারীর অবস্থার ততটা উন্নতি ঘটেনি। তবে সেটা সত্য নয়। পুরুষতান্ত্রিক সভ্যতার শ্রেষ্ঠ শহীদের নাম মা জননী। কেউ কেউ মনে করেন, যৌবন ঘুমেরই স্বপন সাধন বিনে নারীর সনে হারাইলাম মূলধন।
মহিলাদের ঘ্রাণশক্তি খুবই প্রবল। আমার এক বন্ধুপত্নী স্বামীর সঙ্গে টেলিফোনে আলাপের সময়ও তার স্বামীর মুখে হুইস্কির ঘ্রাণ পান। নারী সম্পর্কে কিছু একটা লিখলে নারীরাই আমাকে বলবেন, আপনি শিক্ষিত মানুষ  হয়ে আমাদের এ বিষয়ে বই লেখা ঠিক হচ্ছে না। জানতে চাইলে তারা বলবে, বিষয়টি অশ্লীল। তবে সারা দিন মেকআপ নিয়ে ব্যস্ত থাকলে দিনবদল দেখবে কেমনে?
প্রতিটা মেয়ে হয়তো তার স্বামীর কাছে রানি হয়ে থাকতে পারে না। কিন্তু প্রতিটা মেয়েই তার বাবার কাছে রাজকন্যা হয়ে থাকে। মেয়েরা ব্যক্তিগত চাহিদার কাছে কখনো পরাজিত হয় না। যে নারীকে ঘুমন্ত অবস্থায় সুন্দর দেখায়, সে-ই প্রকৃত রূপবতী। বিশ্বের নারীনেতারা নারীদের প্রতিনিধি নয়; তারা সবাই রুগ্্ণ পিতৃতন্ত্রের প্রিয় সেবাদাসী। পৃথিবীজুড়ে প্রতিটি নরনারী এখন মনে করে তাদের জীবন ব্যর্থ; কেননা তারা অভিনেতা বা অভিনেত্রী হতে পারেনি।
অধিকাংশ রূপসীর হাসির শোভা মাংসপেশির কৃতিত্ব, হৃদয়ের কৃতিত্ব নয়। মেয়েরা যখন শক্তিরূপা হয়ে ওঠে, তখন পৃথিবীতে অনেক বড় পরিবর্তন আসে। অনেক মেয়েই বলতে চায়, সামনের জন্মে আমি মেয়ে হতে চাই না। বরং এটাই বলতে চায়, যতবার সে জন্মাবে যেন মেয়ে হয়েই জন্মায়। নারীবাদী হওয়া মানে মেয়েদের শক্তিশালী করা নয়, তারা এমনিতেই শক্তিশালী।
তবে মেয়েদের শুধু অন্যের ভালো স্ত্রী হয়ে ওঠা শেখালে চলবে না, তাদেরকে সবার আগে যোগ্য করে তুলতে হবে। জগতের যেখানেই যে জাতি নারীর অসম্মান করবে, সে জাতিরই পতন নিশ্চিত। নারীদের সম্মান করো। নারী শব্দটাই তো শক্তির সঙ্গে জড়িত। তাই আলাদা করে নিজেকে শক্তিশালী প্রমাণ করার দরকার নেই।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078