জলে ভাসছে মানবতা, হে মানবিক মানুষ সাড়া দিয়ে পাশে দাঁড়াও

প্রকাশ : ৩০ অগাস্ট ২০২৪, ২১:২৫ , চলতি সংখ্যা
হে মানুষ, হে সৃষ্টির সেরা জীব, হে মানবিক মানুষ, জলে ভাসছে মানুষ, অসহায় নারী-পুরুষ-শিশু। নির্বাক গবাদিপশু, ফসলের ক্ষেত, সবই বানভাসি, সবাই অসহায়। মরছে মানুষ, ডুবছে মানুষ। নিষ্ঠুর, নির্মম বানের জলে ভেসে যাচ্ছে সব। চারদিকে হাহাকার। আর্তনাদ। সবাই বাঁচতে চায়। ক্ষুধার্ত মানুষ দু-মুঠো খাবার চায় বাঁচার জন্য। আধুনিক বিশ্বে আর মহামারি লাগে না মানুষ মরার জন্য। এমনিই মরে। জলে মরে, কোভিডে মরে, সুনামি-আইলাসহ আরও কত নামে যে মরে, বলে শেষ করার নয়। হাহাকার, কান্নায় বাংলার আকাশ বাতাস তোলপাড়। এই তো কদিন আগে, মাত্র তিন সপ্তাহ হবে হয়তো, রাজনীতির নামে, ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে পুলিশের গুলিতে পাখির মতো মানুষ মরল। কারও কোনো দায় নেই যেন, জবাবদিহি নেই। বাংলার মানুষ যেন নাম-ঠিকানাহীন বেওয়ারিশ লাশের মতো। মরবে তো গোর দিয়ে দাও। কেস খালাস।
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় বন্যা বার্ষিক দুর্যোগ। মানুষ মরে, সম্পদ ভেসে যায়। সেই সঙ্গে ভেসে যায় মানুষের স্বপ্ন, মানুষের ভবিষ্যৎ। শহুরে কিছু মানুষ, কিছু মৌলিক সংগঠন ত্রাণ নিয়ে যায় দুর্যোগকবলিত এলাকায়। সঙ্গে যায় সাংবাদিক, ফ্লাশলাইট, টেলিভিশনের গাড়ি, আধুনিক যুগে আত্মপ্রচারের যত রকম ব্যবস্থা আছে, সব তাদের পেছনে পেছনে ছোটে। অনেক ক্ষেত্রেই দুর্যোগকবলিত মানুষের দুর্ভোগ বাড়ে। কদিন আগেই বাংলাদেশের ওপর দিয়ে রাজনৈতিক ঝড় বয়ে গেল। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। এই দুর্যোগের সময় কোনো নিয়মতান্ত্রিক সরকার নেই। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায়। তবু সবাই প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন ত্রাণ নিয়ে, সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। পত্র-পত্রিকার খবরে বন্যার ভয়াবহ পরিস্থিতি। বন্যায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে ২৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। প্রকৃতপক্ষে কত মানুষের জীবন গেছে স্মরণকালের ভয়াবহ এই বন্যায়, তা এখনো অজানা। ১১টি জেলায় প্রায় ৫৬ লাখ মানুষ বন্যায় ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। তাদের বাড়িঘর বন্যার জলে ভেসে গেছে। রান্না করে খাবারের অবস্থা নেই। অপ্রতুল শুকনো খাবার নিয়ে কাড়াকাড়ি। কোথাও কোথাও বন্যার পানি কমলেও দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। পেট খারাপ, আমাশয়। সর্দি, কাশি, জ্বর লেগেই থাকে। আবার কোথাও কোথাও কমার চেয়ে পানি বেড়েছে। বন্যার প্রকোপ এখনো কিছুদিন কমা-বাড়ার মধ্য দিয়ে চলতে থাকবে। তাই বন্যার পানি কিছুটা সরে গেলে বা কিছুটা কমে গেলেই মানুষের দুর্ভোগ কমবে না। বরং বৃদ্ধি পাবে। তাই বন্যার পানি সরে যাওয়াটাই বন্যাকবলিত মানুষের দুর্ভোগের শেষ কথা নয়। এরপর ক্ষেতের ফসল ভেসে যাওয়ায় নতুন বীজের হাহাকার শুরু হবে। বিশেষ করে, যারা গৃহহীন, আশ্রয়হীন হবে, তাদের পুনর্বাসনে অগ্রাধিকার দিতে হবে। বন্যা বাংলাদেশে নতুন নয়। প্রতিবছর বন্যা আমাদের ভয় দেখায়, স্বপ্ন ভাসিয়ে নিয়ে যায়।
আজ আমরা অসহায়ের মতো প্রকৃতির দিকে চেয়ে থাকি। একুশ শতকে নদীশাসন খুব কঠিন নয়। অনেক দেশেই এখন নদীশাসন করতে দেখা যায়। তাহলে আমরা নই কেন? এ ছাড়া অনেক বিত্তশালী দখলবাজদের অনেক নদীর জায়গা দখল করতে করতে বহু নদী মরে গেছে। সেসব জমি দখলমুক্ত করে নদী খননের কাজ শুরু করলে সব নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষকে কঠিন হতে হবে।
আমার মনে হয়, কর্তৃপক্ষের সবকিছু বিবেচনা করে দেখা দরকার। শুধু ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে সবার সব দায়িত্ব শেষ করে ফেললে হবে না।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078