প্রবাসীদের অধিকারের কথা কেউ বলছে না

প্রকাশ : ০৮ অগাস্ট ২০২৪, ১২:১৭ , চলতি সংখ্যা
বলতে গেলে- সবাই প্রবাসীদের মাথায় কাঠাল ভেঙে খাচ্ছেন। কথায় কথায় সরকারের কর্তা-ব্যাক্তিরা প্রবাসীদের রেমিট্যান্স যোদ্ধা আখ্যায়িত করন। প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি উল্লেখ করেন। বৈধ পথে বেশি বেশি রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান জানান। কিন্তু নিজের মাতৃভূমিতে প্রবাসীরা তৃতীয় শ্রেণির মর্যাদাটুকও পান না। দেশে প্রবাসীদের জন্য ন্যুনতম কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। নিজ দেশেই উপেক্ষিত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রায় দুই কোটি প্রবাসী। 
সময় এসেছে প্রবাসীদের পক্ষে কথা বলার। কিন্তু কে বলবে কথা? কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তীতে এক দফার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরাও এই আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন। তারাও নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। কিন্তু প্রবাসীদের অধিকার নিয়ে কেউ কোনো কথাই বলছেন না। নতুন অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনের পথে। প্রবাসীদের আশা- প্রবাসীদের জন্য এবার কেউ কিছু করবেন। মাতৃভূমিতে গেলে রেমিট্যান্স যোদ্ধা হিসাবে আলাদা সম্মান না পেলেও অন্তত বিমানবন্দরে যেন তাদের হয়রানি করা না হয়। 
প্রবাসীরা দেশে গেলে বিমানবন্দরে হয়রানির কথা সবারই জানা। শুধু বিমানবন্দরে নয়, গ্রামের বাড়িতে গিয়েও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন প্রবাসীরা। সরকারি-বেসরকারি অফিসে গেলে প্রবাসী জানার পর ঘুষ না দিলে কোনো সেবা পান না। বিভিন্ন সময় এসব বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে নানান প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রবাস থেকে দেশের পথে যাবার উদ্দেশে বিমানে ওঠার পরই সব ভুলে যান তারা। এমনকী যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী একজন রাজনীতিক মন্ত্রী হলেও তিনি ন্যুনতম কোনো প্রচেষ্টা দেখাননি প্রবাসীদের জন্য। 
প্রবাসীরা যে অর্থনীতির চালিকা শক্তি তা বার বার প্রমাণিত হয়েছে। তবে অতিসম্প্রতি দেশে ছাত্র আন্দোলনের সময় প্রবাসীরা বুঝিয়ে দিয়েছেন, তারা রেমিট্যান্স না পাঠালে দেশের অর্থনীতি অচল হয়ে যায়। ছাত্র আন্দোলনে সহমর্মিতা জানাতে সারা বিশ্বের প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠানো একপ্রকার বন্ধ করে দেন। আর এতে ধ্বস নামে বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভে। দেশে ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স গেছে জুলাই মাসে। জুনের তুলনায় জুলাই মাসে ৬৩ কোটি ডলার বা প্রায় ২৫ শতাংশ কম রেমিট্যান্স গেছে।
নিউইয়র্কের প্রবীণ প্রবাসী আব্দুল আলিম বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার পরও তারা অবহেলিত। বিমান ভাড়া থেকে শুরু করে প্রবাসীদের বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সেবায় যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে রাষ্ট্রীয় খরচে দেশে মরদেহ প্রেরণের বিষয়টিও এখনও সমাধান হয়নি। তবে সময় এসেছে প্রবাসীদের সেবার ক্ষেত্রে আর অবহেলা করা যাবে না। প্রবাসীদের সমস্যা চিহ্নিত করে দ্রুত সমাধান করতে হবে।
নিউইয়র্ক প্রবাসী আতাউর রহমান খান বলেন, প্রবাসীদের সুখ হচ্ছে, মাস শেষে যখন হাতে বেতন আসে এবং তা পরিবারের কাছে পাঠায়। তখনই তাদের আনন্দ তখনই সুখ। যখন তারা শুনতে পায় মা-বাবাসহ পরিবারের সবাই ভালো আছে, তখনই তাদের সুখ। আর দুঃখ হচ্ছে, প্রবাসীরা নিজ দেশে অবহেলিত। 
তিনি বলেন, এই যে এত আন্দোলন হচ্ছে। সবাই দেশ সংস্কারের কথা বলছে। কিন্তু কেউ বলছে না রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সম্মান দিতে হবে। তাদের বিমাবন্দরেন হয়রানি করা যাবে না। তবে এখনো বিশ্বাস করি- কেউ না কেউ দেশ সংস্কারের সাথে প্রবাসীদের অধিকারের কথা তুলবেন। 
প্রবাসী ব্যবসায়ী রেজাউল আলম বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সেই আমাদের অর্থনীতির চাকা বেগবান হয়। আমরা সমৃদ্ধির পথে এগোচ্ছি। সম্মান করা উচিত সব প্রবাসীকে। কিন্তু তাদের প্রতি সুন্দর ব্যবহার উপেক্ষিত। গেল করোনা মহামারিকে কেন্দ্র করে দেশে যাওয়া সব প্রবাসীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই হেয় করে কটূক্তি করেছেন, যা খুবই নিন্দনীয়। এমন আচরণে প্রবাসীদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। যেসব প্রবাসী ভাই দেশে এসেছেন সুরক্ষার জন্য। তাদের সরকারি নির্দেশনা মেনে ১৪ দিন নিজ হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ না দিয়ে অনেকেই অতি উৎসাহী হয়ে সেসব রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের নিয়ে কটূক্তি করেছেন। এতে তাদের সঙ্গে অবিচার করা হয়েছে। তাই প্রবাসীদের প্রতি সুন্দর ব্যবহার ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করা, প্রবাসী পরিবারকে আইনি-সহায়তা, চিকিৎসা, শিক্ষা ও সামাজিকতায় অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন। প্রতিটি প্রবাসী একেকটি জীবনযুদ্ধের সৈনিক। 
তিনি বলেন, জীবন-সংগ্রামের এই সময়ে প্রতিটা মুহূর্তে কতই না উচ্চাকাক্সক্ষা ও উচ্চস্বপ্ন নিয়ে পথ চলে একেক জন প্রবাসী। সবকিছুর পরেও ঐ প্রবাসীরাই আমাদের দেশের সম্পদ, রেমিট্যান্স যোদ্ধা, আমাদের অহংকার ও গৌরবের প্রতীক। এটা ভুলে গেলে চলবে না। 
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078