
বিশ্বাস করুন নিজের স্বপ্নকে। আপনি স্বপ্ন দেখলেন আপনার একটি বাড়ি হবে, একটি গাড়ি হবে, আপনি দেশ-বিদেশ ঘুরবেন। এমন স্বপ্ন আপনি দেখতেই পারেন। কিন্তু আপনি যে স্বপ্ন দেখছেন, তার জন্য কি যথাযথ পরিশ্রম করছেন? আমি করছি, আপনিও করুন। স্বপ্ন দেখে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকবেন না। স্বপ্নপূরণের জন্য অগ্রসর হন এবং শেষ পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করে আপনার স্বপ্ন পূরণ করুন। সম্মান করুন নিজের মনে পুষে রাখা স্বপ্নকে। জাগ্রত হওয়ার অনুপ্রেরণা পান এই স্বপ্ন থেকেই।
কথায় আছেÑপরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি। বিষয়টি আসলেই সত্যি। কেননা পরিশ্রম করলে যে কেউ তার ফল পাবেন। শুধু পরিশ্রমই মানুষকে তার স্বপ্নপূরণে সাহায্য করে এবং সফল গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। অনেক সময়ই কোনো সিনেমা দেখে অথবা কোনো গল্পের বই পড়ে মনে হয়, এখনই আমি সফল হয়ে যাব। রক্ত গরম হয়ে দৌড়াতে শুরু করে। এমনটা জীবনের কোনো এক পর্যায়ে কারও কথা দ্বারা অনুপ্রাণিত হলেও মনে হয় আজই জীবনকে বদলে দেব, পরের দিনই আবার আগের মতো হয়ে যায় সব। এমন সাময়িক পরিবর্তনের চিন্তা পরিহার করে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যান। দেখবেন, সফলতা এমনিতেই আপনার হাতে ধরা দেবে। সফল ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠী অতীত নিয়ে নয়, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে জীবনযাপন করে। সফল হওয়ার জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস আমাদের মনে রাখতে হবে। আর তা হলো নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলা। কোনো প্রকার দোটানায় থাকা যাবে না। বলা হয়Ñআত্মবিশ্বাসই সফলতার মূল শর্ত। আত্মবিশ্বাসীরা নিজেদের স্বপ্নপূরণে ব্যাকুল থাকে সব সময়।
হোক তা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, তার পরও নিজের স্বপ্নে অটুট থেকে এগিয়ে যান আপন গতিতে। ‘আমাকে দিয়ে হবে না, আমি পারব না, এত কঠিন কাজ আমার দ্বারা সম্ভব হবে না’-এমন সংশয়ই আপনাকে সফলদের লাইন থেকে টেনে নিচে নিয়ে আসতে পারে। কেন পারবেন না? যারা জীবনে সফল হয়েছেন, তারাও তো আপনার মতোই রক্তে-মাংসে গড়া মানুষ। আপনি আজকে পারেননি বলে কাল পারবেন না, এমন তো হতে পারে না, তাই নয় কি?
আপনার চিন্তা-ভাবনাকে প্রশস্ত করুন। সঠিক চিন্তা-ভাবনা মানুষকে সফল হতে বেশ সহায়তা করে। দিন-রাতের ২৪ ঘণ্টা একরকম থাকে না। কখনো নিজেকে সফলতার অগ্রনায়ক হিসেবে মনে হয়, কিন্তু পরক্ষণেই নেতিবাচক চিন্তা আসে হতাশার বাণী শোনাতে। বলতে থাকেÑএত মানুষের মাঝে তুমি কি করতে পারবে? এসব চিন্তার পরিবর্তে ইতিবাচক চিন্তা জীবনকে অনেকটা এগিয়ে নিতে পারে। দৃষ্টিভঙ্গি বদলে ফেলুন। দেখবেন, আপনি সফলতার সিঁড়িতে এক ধাপ উপরে উঠে যাবেন।
তবে জীবনে সফল হতে হলে অবশ্যই আপনাকে কিছু অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। আজ থাক, কাল করব, সময় তো আছেই; আরে এটা তো একদম সহজ কাজ, বেশিক্ষণ সময় লাগবে নাÑএ ধরনের কথা ও কাজ পুরোপুরি বর্জন করতে হবে। শেষ মুহূর্তে আপনি হয়তো কাজটি করে ফেলবেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তের কাজ সব সময় ভালো হয় না। ছোটবেলায় পড়েছি, অলস মস্তিষ্কে শয়তানের বাস। কথাটি ভুল নয়।
কিছু মানুষ আছেন, যারা বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে থাকেন। কারণ তারা সব সময় অলীক কল্পনায় ডুবে থাকেন। কল্পবিলাসীরা মনে মনে সারা বিশ্ব ঘুরে এসে দেখে দাঁড়িয়ে আছে এক টুকরো হতাশার সামনে। তারা ভাবে, আরে সময় হলে আল্লাহই দেবে। হ্যাঁ! ঠিক আছে, আল্লাহ তো দেবে। কিন্তু আপনারও তো চেষ্টা করতে হবে। এখন আপনি যদি ওই আশায় বসে বসে হাওয়া খান, তাহলে তো কোনো দিনও সফলতার মুখ দেখবেন না। অলীক কল্পনার জগৎ থেকে বের হয়ে আসুন। বাস্তবতার মুখোমুখি হন, কারণ বাস্তবতা অনেক কঠিন।
কথা কম কাজ বেশিÑছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছেন এটা। আক্ষরিক অর্থেই সত্যি। সফল মানুষেরা কথা কম বলেন। চুপচাপ থাকলে মনের সঙ্গে সংযোগ বাড়ে, এর চেয়ে ভালো নিজের সঙ্গে কথা বলুন। আপনার কাজের মান বাড়বে। লোকে অনেক কথাই বলবে। কান দেবেন না। শুধু এটাই মনে রাখুন, সময় ও পরিস্থিতিই জানান দিয়ে দেবে, অন্যদের চাইতে আপনি কতটা সফল। অন্য কারও ইচ্ছের মতো নয়, নিজের ভালো লাগার কাজটি করুন।
জীবনের একটা উদ্দেশ্য খুঁজে বের করুন এবং বিশ্বাস করুন, আপনি ব্যতিক্রমী কিছু করতে সক্ষম। জীবনে ভালো কিছু সব সময় দেরিতেই আসে। সাফল্য ধরা দিতে সময় নেয়। তাই বলে কখনো তাড়াহুড়ো করবেন না এবং নিজের অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে চেষ্টা করুন। নিজের খারাপ সময়গুলোকে শিক্ষা হিসেবে গ্রহণ করুন। কারণ এটাই হয়ে উঠবে আপনার জন্য সফলতার গল্প। জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য হোঁচট খাওয়া একটা শিক্ষা।
হোঁচট খেলে আপনার আত্মবিশ্বাসের জায়গাটি আরও শক্তিশালী হবে। কারণ আপনি জানেন, আপনি আবার নিজ শক্তিতেই উঠে দাঁড়াতে পারবেন। নিজেকে এমনভাবে তৈরি করুন, যেন সব সময় অন্যদের কাছে আপনাকে আত্মবিশ্বাসী দেখায়। যখন কেউ নিজেকে ভালোভাবে জানে, তখন সহজাতভাবে নিজের আত্মবিশ্বাসের জায়গাটি আরও বেশি মজবুত হয়ে যায়। এটি এক জাদুকরি শক্তি, যা নিজের কর্মকাণ্ড এবং নিজের শক্তি-সামর্থ্যরে ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। তবে আন্তরিকতা ও নিজের কাজের প্রতি ভালোবাসা থাকতে হবে। যদি তা না থাকে, তবে আমরা কখনোই আমাদের কাজে সফল হতে পারব না। ভালোবাসা ও সৎ সাহস-এই দুটি জিনিস যখন বাড়ে, তখন মানুষ নিজেকে উজাড় করে দিয়ে সফলতার দিকে এগিয়ে যায়। এ তো ছিল সফল হওয়ার কিছু উৎসাহ। তবে সফল হওয়ার জন্য কিছু জিনিস আপনার ত্যাগ করতে হবে। এর মধ্যে প্রথমেই আপনি অন্যকে শক্তভাবে ‘না’ বলতে শিখুন। অপছন্দের মানুষ কিংবা অসৎ মানুষদের কাছ থেকেও দূরে থাকুন। অনেকেই অন্যদের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করেন। ফলে কখনো অহংকারী হন, আবার কখনো হীনম্মন্যতায় ভোগেন।
কিন্তু সফল মানুষেরা কখনোই সেটা করেন না। তারা তুলনা করেন, তবে অন্য কারও সঙ্গে নয়, নিজের সঙ্গেই। আজকের আপনি আর গতকালের আপনিকে তুলনা করুন। দেখুন গতকালের ভুল থেকে একটু হলেও এড়িয়ে আসতে পেরেছেন কি না আপনি। অন্যের নয়, নিজের খুঁতগুলো বের করার চেষ্টা করুন। তাহলেই সফলতা ধরা দেবে আপনার হাতে। আবার অনেকে কাজের চাপে কাছের মানুষদের অবহেলা করেন। অবহেলা করেন নিজের শখ আর ভালো লাগাকেও। এতে করে আমরা সফল হচ্ছি ঠিকই, কিন্তু হারিয়ে ফেলছি প্রিয় কিছু মানুষ। কাজের পাশাপাশি সব ব্যাপারকেই গুরুত্ব দিতে শিখুন।
মনে রাখবেনÑআজ যারা সফল, গতকাল তারা গতিশীল ছিলেন। আপনি যত বেশি সফল হবেন, আপনি তত বেশি সফল হতে চাইবেন, আর আপনি ততই সফল হওয়ার নতুন পথ খুঁজে পাবেন। একবার আপনি সফল হয়ে গেলে আপনার শত্রুও তখন আপনার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাইবে। তাই আজ থেকেই সাধনা শুরু করে দিন। একদিন সাফল্য আপনার হাতে ধরা দেবেই।
স্বপ্ন দেখতে জানলে জীবনের কাঁটাগুলোও ধরা দেয় গোলাপ হয়ে। তুমি যদি এখন থেকেই তোমার স্বপ্নগুলো সত্যি করার পেছনে ছুটে না চলো, একদিন তোমাকে কাজ করতে হবে অন্যদের অধীনে- তাদের স্বপ্নগুলো সত্যি করার জন্য। তোমার স্বপ্ন আর তোমার মাঝে দাঁড়িয়ে আছে কেবল একটি জিনিসÑসেটি হচ্ছে অজুহাত! যে মুহূর্ত থেকে তুমি নিজেকে অজুহাত দেখানো বন্ধ করে কাজ শুরু করবে, সে মুহূর্ত থেকে তোমার স্বপ্ন আর স্বপ্ন থাকবে না, সেটি বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করবে!
ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে প্রয়োজন যোগাযোগ কৌশল। জীবনকে ভালোবাসুন। ভালোবাসতে ভালোবাসুন। ভালোবাসায় কিছু উন্মাদনা থাকবেই। কিন্তু সব উন্মাদনায়ই কিছু আন্তরিকতা মিশে থাকে। দুঃসময়ের অন্ধকার কখনো কখনো আমাদের জীবনের সবচেয়ে উজ্জ্বল মুহূর্তটির দ্বার খুলে দেয়। জীবন মানে নিরন্তর ছুটে চলা... পদে পদে বাধা-বিপত্তি, প্রতিকূলতায় রক্তাক্ত-ক্ষতবিক্ষত হওয়া, সে ক্ষত মুছে আবার প্রবল আগ্রাসে ঝাঁপিয়ে পড়া... সংগ্রাম ও সাফল্য-এই তো জীবন! আমরা অনেক সময় ভুলে যাই একটু আন্তরিকতার ছোঁয়া, একটা প্রাঞ্জল হাসি, কিছু সুন্দর কথা, সুন্দর ব্যবহারের কী অসম্ভব ক্ষমতা রয়েছে একটা মানুষের জীবন বদলে দেওয়ার!
বাঁচার মতো বাঁচতে জানলে জীবনটা অসম্ভব রোমাঞ্চকর একটি অভিযান। আর একদম ঝুঁকিহীন জীবন সে তো মুরগির খোঁয়াড়ে ধুঁকে ধুঁকে টিকে থাকা। জীবনটা উপভোগ করতে হয় প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে, প্রতিটি ছোট্ট ছোট্ট স্মৃতি আনন্দ উপলক্ষে। যত বেশি হাসবে, যত কম অভিযোগ করবে, জীবনটা ততই ভরে উঠবে সুখে, পরিতৃপ্তিতে। প্রত্যেকের জীবনের একটা গল্প আছে। অতীতে ফিরে গিয়ে গল্পের শুরুটা কখনো পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, কিন্তু কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তুমি গল্পের শেষটা চাইলেই নতুন করে সাজিয়ে তুলতে পারো। লক্ষ্যের পেছনে অক্লান্ত পরিশ্রম করেও যখন ব্যর্থতার তিক্ত স্বাদ পেতে হয়, তাতে দুঃখের কিছু নেই। এই কঠোর পরিশ্রমের ভেতর দিয়ে তুমি হয়ে উঠেছ আরও শক্তিশালী, আরও অভিজ্ঞ, আরও দক্ষ-এটাই তো সত্যিকারের বিজয়। তোমার মেধার ঘাটতি থাকতে পারে, কিন্তু তোমার চেয়ে বেশি পরিশ্রম অন্য কেউ করবে, সেটি তো হতে দেওয়া যায় না-পরিশ্রম দিয়ে মেধার ঘাটতি অবশ্যই পুষিয়ে নেওয়া যায়, আমিই তার উদাহরণ!
তুমি ভুল করছ, এতে লজ্জার কিছু নেই। বারবার ভুল করা একটি জিনিসই প্রমাণ করে-তুমি হাল ছাড়োনি, তুমি চেষ্টা করে চলেছ। জীবনে আমি হাজার হাজার ভুল করেছি, হাজারবার হোঁচট খেয়েছি এবং সেটি নিয়ে আমি গর্বিত! প্রতিটি ভুল, প্রতিবার হোঁচট খাওয়া আমাকে গড়ে তুলেছে আরও শক্তিশালী এবং আরও পরিণত করে। কখনো ভেঙে পড়ো না। পৃথিবীর যা কিছু হারিয়ে যায়, অন্য কোনো রূপে সেটি ঠিকই আবার ফিরে আসে জীবনে।
জীবনে অনেক বিষয় আছে, যেগুলো তোমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং সেগুলো নিয়ে মাথা ঘামানোরও মানে হয় না, কারণ এর বাইরেও তোমার হাতে হাজার হাজার জিনিস রয়েছে, যেগুলো তুমি জয় করতে পারো। জীবনটাকে নতুন করে আবিষ্কার করার জন্য কখনো কখনো সব ছেড়েছুড়ে হারিয়ে যেতে হয়। সহজে জেতার আনন্দ কোথায়? বাধা যত বিশাল, বিজয়ের আনন্দও ততই বাঁধভাঙা! ভয় পাওয়ায় দোষের কিছু নেই। কিন্তু ভয় পেয়ে পড়ে থাকলে চলবে না, তোমাকে উঠে দাঁড়াতে হবে, ফাইট দিতে হবে, হেরে গেলে আবার নতুন উদ্যমে সব শুরু করার উদ্যম থাকতে হবে।
অন্যের ভালো দিকগুলো খুঁজতে গেলেই নিজের সেরাটা বের করে আনা যায়। অভিজ্ঞতা-এই জিনিসটি কেউ কাউকে শেখাতে পারে না। তোমাকে পৃথিবীর সবচেয়ে জ্ঞানী মানুষটি পরামর্শ দিতে পারেন, কিন্তু যতক্ষণ না নিজে অভিজ্ঞতাটি অর্জন করছ, বিষয়টি তুমি সত্যিকার উপলব্ধি করতে পারবে না। প্রতিটি জিনিসেরই একদম নিজস্ব একটি সৌন্দর্য আছে। তুমি কি সেটি অনুভব করতে জানো? এই ঝলমলে রোদ যত দিন হাসবে, এই পাখির কলকাকলি, এই গাছের পাতায় হাওয়ার দোলায় ঝিরঝির শব্দ যত দিন আমি শুনব, ভোরের খোলা হাওয়ায় বুকভরে শ্বাস নিতে পারবÑকী করে আমি জীবনকে ভালোবেসে না থাকতে পারি?
কখনো হাল ছেড়ে দিয়ো না! এখনকার এই দাঁতে দাঁত চেপে করা কষ্টগুলো তোমাকে বিজয়ীর খেতাব দেবে সারা জীবনের জন্য। খুব শিগগির অসম্ভব চমৎকার একটা কিছু ঘটতে চলেছে তোমার জীবনে, তুমি কি সেটি অনুভব করতে পারো? তুমি যখন সবাইকে ভালোবাসতে শিখবে, সবার কল্যাণে কাজ করে যাবে-জীবনের ক্রান্তিলগ্নে গিয়ে দেখবে, মানুষের ভালোবাসায় তুমি একদম আকণ্ঠ ডুবে আছ! বিশ্বাস করো, এর চেয়ে পরিতৃপ্তি জীবনে আর কিছুতে হতে পারে না! পৃথিবীর সুন্দরতম জিনিসগুলো হাতে ছোঁয়া যায় না, চোখে দেখা যায় না, সেগুলো একমাত্র হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে হয়-ভালবাসা, দয়া, আন্তরিকতা।
সম্ভাবনা আর বিপদ হাতে হাত রেখে চলে। তাই বলে সম্ভাবনার দ্বার না খুললে কি চলবে? পরিশ্রমকে হ্যাঁ বলো, জীবনে সাফল্য আনো! যার নেশা আর পেশা মিলে যায়, তার চেয়ে সৌভাগ্যবান আর কে হতে পারে? ‘কী বলা হচ্ছে’, সেটি হৃদয়ে ধারণ করো, ‘কে বলছে’, সেটি বিবেচ্য নয়। পথের ভিখারিও কখনো তোমাকে পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান পরামর্শ দিতে পারে। ব্যর্থতা মানে হচ্ছে ব্যর্থতাÑকেন হয়েছে, কার কারণে হয়েছে, সেগুলো কেউ জানতে চাইবে না।
তুমি ব্যর্থ হলে তার যন্ত্রণা তোমাকে একদম একাকী সইতে হবে, কেউ তোমার পাশে এসে দাঁড়াবে না। তাই কখনো অজুহাত বানাবে না, অন্যদের সুযোগ দেবে না তোমার জীবনটাকে নিয়ন্ত্রণ করার। জিততে তোমাকে হবেই। বিশাল মহাজগতে ক্ষুদ্র বালুকণার চেয়ে ছোট্ট এ পৃথিবী, তার মাঝে ক্ষণিকের এ জীবন-জগতের বুকে একটি আঁচড় না কেটেই হারিয়ে যাবে অতলে? দাম্ভিক হওয়া সহজ, বিনয়ী হতে হলে প্রয়োজন অসাধারণ আত্মসম্মান ও মানসিক শক্তিমত্তার। পৃথিবীর সবচেয়ে আনন্দের অনুভূতিটি হচ্ছে যখন তুমি একটি লক্ষ্য ঠিক করেছিলে সেই লক্ষ্যটি পূরণ করতে পারলে!
কথায় আছেÑপরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি। বিষয়টি আসলেই সত্যি। কেননা পরিশ্রম করলে যে কেউ তার ফল পাবেন। শুধু পরিশ্রমই মানুষকে তার স্বপ্নপূরণে সাহায্য করে এবং সফল গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। অনেক সময়ই কোনো সিনেমা দেখে অথবা কোনো গল্পের বই পড়ে মনে হয়, এখনই আমি সফল হয়ে যাব। রক্ত গরম হয়ে দৌড়াতে শুরু করে। এমনটা জীবনের কোনো এক পর্যায়ে কারও কথা দ্বারা অনুপ্রাণিত হলেও মনে হয় আজই জীবনকে বদলে দেব, পরের দিনই আবার আগের মতো হয়ে যায় সব। এমন সাময়িক পরিবর্তনের চিন্তা পরিহার করে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যান। দেখবেন, সফলতা এমনিতেই আপনার হাতে ধরা দেবে। সফল ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠী অতীত নিয়ে নয়, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে জীবনযাপন করে। সফল হওয়ার জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস আমাদের মনে রাখতে হবে। আর তা হলো নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলা। কোনো প্রকার দোটানায় থাকা যাবে না। বলা হয়Ñআত্মবিশ্বাসই সফলতার মূল শর্ত। আত্মবিশ্বাসীরা নিজেদের স্বপ্নপূরণে ব্যাকুল থাকে সব সময়।
হোক তা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, তার পরও নিজের স্বপ্নে অটুট থেকে এগিয়ে যান আপন গতিতে। ‘আমাকে দিয়ে হবে না, আমি পারব না, এত কঠিন কাজ আমার দ্বারা সম্ভব হবে না’-এমন সংশয়ই আপনাকে সফলদের লাইন থেকে টেনে নিচে নিয়ে আসতে পারে। কেন পারবেন না? যারা জীবনে সফল হয়েছেন, তারাও তো আপনার মতোই রক্তে-মাংসে গড়া মানুষ। আপনি আজকে পারেননি বলে কাল পারবেন না, এমন তো হতে পারে না, তাই নয় কি?
আপনার চিন্তা-ভাবনাকে প্রশস্ত করুন। সঠিক চিন্তা-ভাবনা মানুষকে সফল হতে বেশ সহায়তা করে। দিন-রাতের ২৪ ঘণ্টা একরকম থাকে না। কখনো নিজেকে সফলতার অগ্রনায়ক হিসেবে মনে হয়, কিন্তু পরক্ষণেই নেতিবাচক চিন্তা আসে হতাশার বাণী শোনাতে। বলতে থাকেÑএত মানুষের মাঝে তুমি কি করতে পারবে? এসব চিন্তার পরিবর্তে ইতিবাচক চিন্তা জীবনকে অনেকটা এগিয়ে নিতে পারে। দৃষ্টিভঙ্গি বদলে ফেলুন। দেখবেন, আপনি সফলতার সিঁড়িতে এক ধাপ উপরে উঠে যাবেন।
তবে জীবনে সফল হতে হলে অবশ্যই আপনাকে কিছু অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। আজ থাক, কাল করব, সময় তো আছেই; আরে এটা তো একদম সহজ কাজ, বেশিক্ষণ সময় লাগবে নাÑএ ধরনের কথা ও কাজ পুরোপুরি বর্জন করতে হবে। শেষ মুহূর্তে আপনি হয়তো কাজটি করে ফেলবেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তের কাজ সব সময় ভালো হয় না। ছোটবেলায় পড়েছি, অলস মস্তিষ্কে শয়তানের বাস। কথাটি ভুল নয়।
কিছু মানুষ আছেন, যারা বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে থাকেন। কারণ তারা সব সময় অলীক কল্পনায় ডুবে থাকেন। কল্পবিলাসীরা মনে মনে সারা বিশ্ব ঘুরে এসে দেখে দাঁড়িয়ে আছে এক টুকরো হতাশার সামনে। তারা ভাবে, আরে সময় হলে আল্লাহই দেবে। হ্যাঁ! ঠিক আছে, আল্লাহ তো দেবে। কিন্তু আপনারও তো চেষ্টা করতে হবে। এখন আপনি যদি ওই আশায় বসে বসে হাওয়া খান, তাহলে তো কোনো দিনও সফলতার মুখ দেখবেন না। অলীক কল্পনার জগৎ থেকে বের হয়ে আসুন। বাস্তবতার মুখোমুখি হন, কারণ বাস্তবতা অনেক কঠিন।
কথা কম কাজ বেশিÑছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছেন এটা। আক্ষরিক অর্থেই সত্যি। সফল মানুষেরা কথা কম বলেন। চুপচাপ থাকলে মনের সঙ্গে সংযোগ বাড়ে, এর চেয়ে ভালো নিজের সঙ্গে কথা বলুন। আপনার কাজের মান বাড়বে। লোকে অনেক কথাই বলবে। কান দেবেন না। শুধু এটাই মনে রাখুন, সময় ও পরিস্থিতিই জানান দিয়ে দেবে, অন্যদের চাইতে আপনি কতটা সফল। অন্য কারও ইচ্ছের মতো নয়, নিজের ভালো লাগার কাজটি করুন।
জীবনের একটা উদ্দেশ্য খুঁজে বের করুন এবং বিশ্বাস করুন, আপনি ব্যতিক্রমী কিছু করতে সক্ষম। জীবনে ভালো কিছু সব সময় দেরিতেই আসে। সাফল্য ধরা দিতে সময় নেয়। তাই বলে কখনো তাড়াহুড়ো করবেন না এবং নিজের অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে চেষ্টা করুন। নিজের খারাপ সময়গুলোকে শিক্ষা হিসেবে গ্রহণ করুন। কারণ এটাই হয়ে উঠবে আপনার জন্য সফলতার গল্প। জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য হোঁচট খাওয়া একটা শিক্ষা।
হোঁচট খেলে আপনার আত্মবিশ্বাসের জায়গাটি আরও শক্তিশালী হবে। কারণ আপনি জানেন, আপনি আবার নিজ শক্তিতেই উঠে দাঁড়াতে পারবেন। নিজেকে এমনভাবে তৈরি করুন, যেন সব সময় অন্যদের কাছে আপনাকে আত্মবিশ্বাসী দেখায়। যখন কেউ নিজেকে ভালোভাবে জানে, তখন সহজাতভাবে নিজের আত্মবিশ্বাসের জায়গাটি আরও বেশি মজবুত হয়ে যায়। এটি এক জাদুকরি শক্তি, যা নিজের কর্মকাণ্ড এবং নিজের শক্তি-সামর্থ্যরে ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। তবে আন্তরিকতা ও নিজের কাজের প্রতি ভালোবাসা থাকতে হবে। যদি তা না থাকে, তবে আমরা কখনোই আমাদের কাজে সফল হতে পারব না। ভালোবাসা ও সৎ সাহস-এই দুটি জিনিস যখন বাড়ে, তখন মানুষ নিজেকে উজাড় করে দিয়ে সফলতার দিকে এগিয়ে যায়। এ তো ছিল সফল হওয়ার কিছু উৎসাহ। তবে সফল হওয়ার জন্য কিছু জিনিস আপনার ত্যাগ করতে হবে। এর মধ্যে প্রথমেই আপনি অন্যকে শক্তভাবে ‘না’ বলতে শিখুন। অপছন্দের মানুষ কিংবা অসৎ মানুষদের কাছ থেকেও দূরে থাকুন। অনেকেই অন্যদের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করেন। ফলে কখনো অহংকারী হন, আবার কখনো হীনম্মন্যতায় ভোগেন।
কিন্তু সফল মানুষেরা কখনোই সেটা করেন না। তারা তুলনা করেন, তবে অন্য কারও সঙ্গে নয়, নিজের সঙ্গেই। আজকের আপনি আর গতকালের আপনিকে তুলনা করুন। দেখুন গতকালের ভুল থেকে একটু হলেও এড়িয়ে আসতে পেরেছেন কি না আপনি। অন্যের নয়, নিজের খুঁতগুলো বের করার চেষ্টা করুন। তাহলেই সফলতা ধরা দেবে আপনার হাতে। আবার অনেকে কাজের চাপে কাছের মানুষদের অবহেলা করেন। অবহেলা করেন নিজের শখ আর ভালো লাগাকেও। এতে করে আমরা সফল হচ্ছি ঠিকই, কিন্তু হারিয়ে ফেলছি প্রিয় কিছু মানুষ। কাজের পাশাপাশি সব ব্যাপারকেই গুরুত্ব দিতে শিখুন।
মনে রাখবেনÑআজ যারা সফল, গতকাল তারা গতিশীল ছিলেন। আপনি যত বেশি সফল হবেন, আপনি তত বেশি সফল হতে চাইবেন, আর আপনি ততই সফল হওয়ার নতুন পথ খুঁজে পাবেন। একবার আপনি সফল হয়ে গেলে আপনার শত্রুও তখন আপনার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাইবে। তাই আজ থেকেই সাধনা শুরু করে দিন। একদিন সাফল্য আপনার হাতে ধরা দেবেই।
স্বপ্ন দেখতে জানলে জীবনের কাঁটাগুলোও ধরা দেয় গোলাপ হয়ে। তুমি যদি এখন থেকেই তোমার স্বপ্নগুলো সত্যি করার পেছনে ছুটে না চলো, একদিন তোমাকে কাজ করতে হবে অন্যদের অধীনে- তাদের স্বপ্নগুলো সত্যি করার জন্য। তোমার স্বপ্ন আর তোমার মাঝে দাঁড়িয়ে আছে কেবল একটি জিনিসÑসেটি হচ্ছে অজুহাত! যে মুহূর্ত থেকে তুমি নিজেকে অজুহাত দেখানো বন্ধ করে কাজ শুরু করবে, সে মুহূর্ত থেকে তোমার স্বপ্ন আর স্বপ্ন থাকবে না, সেটি বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করবে!
ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে প্রয়োজন যোগাযোগ কৌশল। জীবনকে ভালোবাসুন। ভালোবাসতে ভালোবাসুন। ভালোবাসায় কিছু উন্মাদনা থাকবেই। কিন্তু সব উন্মাদনায়ই কিছু আন্তরিকতা মিশে থাকে। দুঃসময়ের অন্ধকার কখনো কখনো আমাদের জীবনের সবচেয়ে উজ্জ্বল মুহূর্তটির দ্বার খুলে দেয়। জীবন মানে নিরন্তর ছুটে চলা... পদে পদে বাধা-বিপত্তি, প্রতিকূলতায় রক্তাক্ত-ক্ষতবিক্ষত হওয়া, সে ক্ষত মুছে আবার প্রবল আগ্রাসে ঝাঁপিয়ে পড়া... সংগ্রাম ও সাফল্য-এই তো জীবন! আমরা অনেক সময় ভুলে যাই একটু আন্তরিকতার ছোঁয়া, একটা প্রাঞ্জল হাসি, কিছু সুন্দর কথা, সুন্দর ব্যবহারের কী অসম্ভব ক্ষমতা রয়েছে একটা মানুষের জীবন বদলে দেওয়ার!
বাঁচার মতো বাঁচতে জানলে জীবনটা অসম্ভব রোমাঞ্চকর একটি অভিযান। আর একদম ঝুঁকিহীন জীবন সে তো মুরগির খোঁয়াড়ে ধুঁকে ধুঁকে টিকে থাকা। জীবনটা উপভোগ করতে হয় প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে, প্রতিটি ছোট্ট ছোট্ট স্মৃতি আনন্দ উপলক্ষে। যত বেশি হাসবে, যত কম অভিযোগ করবে, জীবনটা ততই ভরে উঠবে সুখে, পরিতৃপ্তিতে। প্রত্যেকের জীবনের একটা গল্প আছে। অতীতে ফিরে গিয়ে গল্পের শুরুটা কখনো পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, কিন্তু কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তুমি গল্পের শেষটা চাইলেই নতুন করে সাজিয়ে তুলতে পারো। লক্ষ্যের পেছনে অক্লান্ত পরিশ্রম করেও যখন ব্যর্থতার তিক্ত স্বাদ পেতে হয়, তাতে দুঃখের কিছু নেই। এই কঠোর পরিশ্রমের ভেতর দিয়ে তুমি হয়ে উঠেছ আরও শক্তিশালী, আরও অভিজ্ঞ, আরও দক্ষ-এটাই তো সত্যিকারের বিজয়। তোমার মেধার ঘাটতি থাকতে পারে, কিন্তু তোমার চেয়ে বেশি পরিশ্রম অন্য কেউ করবে, সেটি তো হতে দেওয়া যায় না-পরিশ্রম দিয়ে মেধার ঘাটতি অবশ্যই পুষিয়ে নেওয়া যায়, আমিই তার উদাহরণ!
তুমি ভুল করছ, এতে লজ্জার কিছু নেই। বারবার ভুল করা একটি জিনিসই প্রমাণ করে-তুমি হাল ছাড়োনি, তুমি চেষ্টা করে চলেছ। জীবনে আমি হাজার হাজার ভুল করেছি, হাজারবার হোঁচট খেয়েছি এবং সেটি নিয়ে আমি গর্বিত! প্রতিটি ভুল, প্রতিবার হোঁচট খাওয়া আমাকে গড়ে তুলেছে আরও শক্তিশালী এবং আরও পরিণত করে। কখনো ভেঙে পড়ো না। পৃথিবীর যা কিছু হারিয়ে যায়, অন্য কোনো রূপে সেটি ঠিকই আবার ফিরে আসে জীবনে।
জীবনে অনেক বিষয় আছে, যেগুলো তোমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং সেগুলো নিয়ে মাথা ঘামানোরও মানে হয় না, কারণ এর বাইরেও তোমার হাতে হাজার হাজার জিনিস রয়েছে, যেগুলো তুমি জয় করতে পারো। জীবনটাকে নতুন করে আবিষ্কার করার জন্য কখনো কখনো সব ছেড়েছুড়ে হারিয়ে যেতে হয়। সহজে জেতার আনন্দ কোথায়? বাধা যত বিশাল, বিজয়ের আনন্দও ততই বাঁধভাঙা! ভয় পাওয়ায় দোষের কিছু নেই। কিন্তু ভয় পেয়ে পড়ে থাকলে চলবে না, তোমাকে উঠে দাঁড়াতে হবে, ফাইট দিতে হবে, হেরে গেলে আবার নতুন উদ্যমে সব শুরু করার উদ্যম থাকতে হবে।
অন্যের ভালো দিকগুলো খুঁজতে গেলেই নিজের সেরাটা বের করে আনা যায়। অভিজ্ঞতা-এই জিনিসটি কেউ কাউকে শেখাতে পারে না। তোমাকে পৃথিবীর সবচেয়ে জ্ঞানী মানুষটি পরামর্শ দিতে পারেন, কিন্তু যতক্ষণ না নিজে অভিজ্ঞতাটি অর্জন করছ, বিষয়টি তুমি সত্যিকার উপলব্ধি করতে পারবে না। প্রতিটি জিনিসেরই একদম নিজস্ব একটি সৌন্দর্য আছে। তুমি কি সেটি অনুভব করতে জানো? এই ঝলমলে রোদ যত দিন হাসবে, এই পাখির কলকাকলি, এই গাছের পাতায় হাওয়ার দোলায় ঝিরঝির শব্দ যত দিন আমি শুনব, ভোরের খোলা হাওয়ায় বুকভরে শ্বাস নিতে পারবÑকী করে আমি জীবনকে ভালোবেসে না থাকতে পারি?
কখনো হাল ছেড়ে দিয়ো না! এখনকার এই দাঁতে দাঁত চেপে করা কষ্টগুলো তোমাকে বিজয়ীর খেতাব দেবে সারা জীবনের জন্য। খুব শিগগির অসম্ভব চমৎকার একটা কিছু ঘটতে চলেছে তোমার জীবনে, তুমি কি সেটি অনুভব করতে পারো? তুমি যখন সবাইকে ভালোবাসতে শিখবে, সবার কল্যাণে কাজ করে যাবে-জীবনের ক্রান্তিলগ্নে গিয়ে দেখবে, মানুষের ভালোবাসায় তুমি একদম আকণ্ঠ ডুবে আছ! বিশ্বাস করো, এর চেয়ে পরিতৃপ্তি জীবনে আর কিছুতে হতে পারে না! পৃথিবীর সুন্দরতম জিনিসগুলো হাতে ছোঁয়া যায় না, চোখে দেখা যায় না, সেগুলো একমাত্র হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে হয়-ভালবাসা, দয়া, আন্তরিকতা।
সম্ভাবনা আর বিপদ হাতে হাত রেখে চলে। তাই বলে সম্ভাবনার দ্বার না খুললে কি চলবে? পরিশ্রমকে হ্যাঁ বলো, জীবনে সাফল্য আনো! যার নেশা আর পেশা মিলে যায়, তার চেয়ে সৌভাগ্যবান আর কে হতে পারে? ‘কী বলা হচ্ছে’, সেটি হৃদয়ে ধারণ করো, ‘কে বলছে’, সেটি বিবেচ্য নয়। পথের ভিখারিও কখনো তোমাকে পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান পরামর্শ দিতে পারে। ব্যর্থতা মানে হচ্ছে ব্যর্থতাÑকেন হয়েছে, কার কারণে হয়েছে, সেগুলো কেউ জানতে চাইবে না।
তুমি ব্যর্থ হলে তার যন্ত্রণা তোমাকে একদম একাকী সইতে হবে, কেউ তোমার পাশে এসে দাঁড়াবে না। তাই কখনো অজুহাত বানাবে না, অন্যদের সুযোগ দেবে না তোমার জীবনটাকে নিয়ন্ত্রণ করার। জিততে তোমাকে হবেই। বিশাল মহাজগতে ক্ষুদ্র বালুকণার চেয়ে ছোট্ট এ পৃথিবী, তার মাঝে ক্ষণিকের এ জীবন-জগতের বুকে একটি আঁচড় না কেটেই হারিয়ে যাবে অতলে? দাম্ভিক হওয়া সহজ, বিনয়ী হতে হলে প্রয়োজন অসাধারণ আত্মসম্মান ও মানসিক শক্তিমত্তার। পৃথিবীর সবচেয়ে আনন্দের অনুভূতিটি হচ্ছে যখন তুমি একটি লক্ষ্য ঠিক করেছিলে সেই লক্ষ্যটি পূরণ করতে পারলে!