বিদ্যুৎ আসে-যায়? নাকি যায়-আসে?

প্রকাশ : ১১ এপ্রিল ২০২৪, ১৭:৩২ , চলতি সংখ্যা
এই জোনালে বিদ্যুতের চাহিদা ২৭ মেগাওয়াট। পাচ্ছি ৭ মেগাওয়াট। মাঝে মাঝে ৯ মেগাওয়াট পাই। এ কারণেই জনদুর্ভোগ- এটি গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ কাপাসিয়া জোনাল অফিসের ডিজিএম রুহুল আমীনের বক্তব্য। কী কারণে বিদ্যুতের এই বেহাল দশা? এ প্রশ্নের জবাবের জন্য আর কোথাও জানা লাগে? অথচ বাকাওয়াজে এবং কাগজে কলমে হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বেড়েছে। লাফিয়ে লাফিয়ে দামও বেড়েছে। সরবরাহ বেড়েছে? তার চেয়ে বড় কথা- বিদ্যুৎ কি নিজে লাফায়, তার দাম বাড়ানোর জন্য?
বিদ্যুতের পেছনের লোকগুলোকে সবাই চেনে। যারা দাম বৃদ্ধির জন্য বিদ্যুতকেই দায়ী করে। বলে, লাফিয়ে লাফিয়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ে। লোডশেডিং যাদুঘরে চলে যাওয়ার বাহারি কথাও এরাই বানিয়েছেন, রটিয়েছেন। ঘরে ঘরে শতভাগ বিদ্যুতায়নের কতো কথাই না শুনিয়েছেন। আবার ধমকাচ্ছেন, বেশি কথা বললে সব বন্ধ করে দেবেন বলে! কোথায় আছি আমরা? 
স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদনের পাশাপাশি প্রতিবেশী ভারত থেকে আমদানির মাধ্যমে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাচ্ছে বাংলাদেশ। দেশের মোট বিদ্যুৎ সরবরাহের ১২ শতাংশই করা হচ্ছে আমদানির মাধ্যমে। গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) বিদ্যুৎ আমদানিতে ব্যয় হয়েছিল ৯ হাজার ২২৩ কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ বাবদ ব্যয় হতে পারে ১৭ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। সেক্ষেত্রে এবার দেশে বিদ্যুৎ আমদানিতে ব্যয় বাড়তে পারে প্রায় ৮ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা বা ৯০ শতাংশের বেশি। তাহলে একবছর আগে কেন বলা হয়েছিলÑ ‘বিদ্যুৎ উৎপাদন, চাহিদার চেয়ে বেশি রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে?  এখন?
কথার কোনো দাম থাকতে নেই? কথাগুলো শরীরের কোন ফুটো দিয়ে বের হয়? নাকি তাদের বলা কথাগুলো মনে রাখাই অপরাধ? নানা ঘটনায় এখন মাঝেমধ্যে কিছু সত্য তো বেরিয়ে পড়ছে। কাগজে উৎপাদন যত বেশি, ততো ঢুকছে কিছু কিছু পকেটে। এর নামই স্মার্টনেস? এই বুঝি বুঝলে সোনার লতা, আর না বুঝলে তেজপাতা? কেন এখন লোডশেডিং, বিদ্যুতের আইলাম-গেলাম তাও বোঝার অসাধ্য?
আমপাবলিকের বুঝলে কী? না বুঝলেই বা কী? ঠেলায় কিন্তু মাফ নেই। সাধারণ কাণ্ডজ্ঞানের মানুষও বোঝে উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে শুরু হয়েছে লোডশেডিং। তা শহরাঞ্চলের চেয়ে বেশি গ্রামাঞ্চলে। গত ক’দিন রীতিমতো এক আজাব। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি, বাংলাদেশের (পিজিসিবি) অফিসিয়াল পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মার্চের মধ্যভাগ থেকে এ ছিদ্দত বাড়ছে তো বাড়ছেই। শীতের পর দেশে প্রথম বড় ধরনের লোডশেডিং হয় ২৫ মার্চ। সেদিন মধ্যরাতে প্রায় ২০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হয়। এরপর ১ এপ্রিল রাত ২টায় লোডশেডিং ৮৫০ মেগাওয়াট অতিক্রম করে। পিজিসিবির তথ্যে দেখা যায়, ২ এপ্রিল বিকাল ৫টায় সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬৭৮ মেগাওয়াট লোডশেডিং রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় ১৩ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ১১ হাজার ৯৭৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এসব হিসাব কি সরকারের দুশমনেরা তৈরি করেছে?
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা পূর্বাভাস দিয়েছেন, এই গ্রীষ্মে দেশের চাহিদা ১৮ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যেতে পারে। সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে লোডশেডিং বেশি বাড়বে। কী হবে তখন? বিদ্যুৎ তখন আসবে আর যাবে? নাকি যাবে, আর আসবে? এর জন্য দুশমন পক্ষের কিছু মাথাওয়ালাকে নাশকতার অভিযোগে ফাঁসিয়ে মামলা ঠুকে দেয়ার বুদ্ধি ঘুরছে না তো কারো মাথায়?
লেখক : সাংবাদিক-কলামিস্ট; ডেপুটি হেড অব নিউজ, বাংলাভিশন, ঢাকা।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078