মার্কিন কোম্পানির লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ

প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৪, ১২:২২ , চলতি সংখ্যা
বঙ্গোপসাগরে তেল, গ্যাস, শৈবাল, মাছ, প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে লক্ষ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করবে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াও এখানে প্রায় সমপরিমাণ অর্থ, প্রয়োজনে আরও অধিক পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগে আগ্রহী। বিনিয়োগ বোর্ডসহ বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তারা বাংলাদেশে বিপুল বিনিয়োগ এবং উল্লেখযোগ্যসংখ্যক জনশক্তি নিয়োগের কথা বলেছে।
বঙ্গোপসাগরে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ মজুদ রাখার নিশ্চিত তথ্য পাওয়ার পরও বাংলাদেশ সেই সম্পদ আহরণ, উত্তোলন করতে পারছে না। অপরদিকে অভ্যন্তরীণভাবে গ্যাসের মজুদ উদ্বেগজনকভাবে কমে আসায় সরকার উদ্বিগ্ন। পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে গ্যাসের যে মজুদ রয়েছে, তা দিয়ে সর্বোচ্চ সাত থেকে আট বছর চলবে। এখনই গ্যাসের সংকট দেখা দিয়েছে। মাঝেমধ্যে তা তীব্র আকার নিলে সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়। অনেক জায়গায়, বিশেষ করে শিল্প-কারখানায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিপর্যয়াত্মক এই অবস্থা এবং অদূর ভবিষ্যতে বড় বিপর্যয় এড়ানোর জন্য বিদেশিদের ডেকে আনা হচ্ছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে মার্কিন কোম্পানিগুলো অনুসন্ধান কাজ শুরু করবে। গভীর সমুদ্রে, উপকূলীয় ব্লকেও তারা আগ্রহী। রিগ পরিবহন, বসানো, গভীর সমুদ্র থেকে পাইপ সাগরপাড়ে আনা ছাড়াও গভীর সাগরে ও উপকূলে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণে মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় হবে। স্থানীয়ভাবেও সরকার আগামী দুই বছরে ৫০টি কূপ খনন করবে। পরবর্তী দুই বছরে আরও প্রায় সমসংখ্যক কূপ খননের পরিকল্পনা রয়েছে। এতে ব্যয় হবে পাঁচ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এই অর্থের বড় অংশ আসবে বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে নিয়োজিত প্রধানত মার্কিন কোম্পানির কাছ থেকে। বঙ্গোপসাগরের উপকূলজুড়ে সিলিকন রয়েছে। বালুকারাশির মধ্যে থাকা এই মূল্যমান সম্পদ সংগ্রহে বিদেশি কোম্পানিগুলো গভীরভাবে আগ্রহী।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। প্রাকৃতিক গ্যাস, বিদ্যুৎ, সোলার এনার্জি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, ওষুধশিল্প, টেক্সটাইল ছাড়াও কয়েকটি খাতে বিদেশিরা বিনিয়োগে আগ্রহী। বিনিয়োগের অপরিহার্য পূর্বশর্ত হিসেবে তারা অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার বিষয়টি গভীর গুরুত্বের সঙ্গে দেখে। বাংলাদেশে বিদ্যমান পরিবেশ-পরিস্থিতি বিনিয়োগের অনুকূল বলেই তারা মনে করে। বিশেষ করে, বিদ্যুৎ, যোগাযোগব্যবস্থা, শ্রম সমস্যা তেমন একটা না থাকার বিষয় বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করছে। এ ব্যাপারে তাদের মধ্যকার ইতিপূর্বেকার ধারণা ও মন-মানসিকতায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। শ্রমিকদের স্বল্প মজুরি ও এখানকার শ্রমিকদের দক্ষতা, লভ্যাংশ এবং প্রয়োজনে বিনিয়োজিত অর্থ নিরাপদে নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ তাদেরকে উৎসাহিত করছে বলে জানা যায়। চীন, ভারতও বাংলাদেশে বিপুল বিনিয়োগ করছে। যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কয়েকটি দেশ বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছে। গার্মেন্ট, তথ্যপ্রযুক্তি, ওষুধ, জ্বালানি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, ডেইরি প্রডাক্ট, চামড়া, পাটজাত দ্রব্য উৎপাদন, অটোমোবাইল, কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণসহ আরও কয়েকটি খাতে তারা বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগের জন্য সরকার অবকাঠামো, সড়ক, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাসসহ প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে সরবরাহের নিশ্চয়তা দিয়েছে। বিভিন্ন দেশের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলও দেওয়া হয়েছে।
বিদেশিরা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে শুল্ক-সুবিধা পাওয়ার ওপর। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কয়েকটি দেশ বিনিয়োগের পূর্বশর্ত হিসেবে শুল্ক-সুবিধার নিশ্চয়তা চেয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শুল্ক-সুবিধা দেওয়ার মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ লাভবান হবে না। তবে ব্যাপক বিনিয়োগ, বাংলাদেশি বিপুলসংখ্যক জনশক্তির কর্মসংস্থান, তাদের উন্নত প্রশিক্ষণ ও ভালো মজুরির নিশ্চয়তা পাচ্ছে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে বিদেশি কোম্পানির উৎপাদিত পণ্যের একটা অংশ স্থানীয়ভাবে বিক্রি এবং বিদেশে বিক্রয়লব্ধ অর্থের একটা অংশ বাংলাদেশের প্রাপ্তির ব্যবস্থা থাকবে, যার ফলে বাংলাদেশ চূড়ান্তভাবে লাভবান হবে।





 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078