বাইডেনের চিঠি নিয়ে বাঙালিপনা

প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ১১:০৬ , চলতি সংখ্যা
বাংলাদেশের শত্রুরাষ্ট্র পাকিস্তানেও নির্বাচনের নামে যা হওয়ার হয়েছে। একের পর এক কৌশলে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) কোণঠাসা করার ভালো-মন্দের ফল এখন দেশটির প্রাপ্য। সরকারি দমন-পীড়নে পরিচয় গোপন করে প্রচার চালাতে হয়েছে ইমরানের দলকে। প্রশাসনিক বাধায় কৌশলগত কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়েছেন পিটিআই প্রার্থীরা। দলীয় মার্কা ক্রিকেট ব্যাটের পরিবর্তে ভিন্ন ভিন্ন মার্কায় লড়তে হয়েছে তাদের। তাই আসন ভেদে দলীয় প্রার্থী ও প্রতীকে বিভ্রান্তি এড়াতে  একটি অ্যাপস তৈরি করেছে পিটিআই। পাকিস্তানে এবারের নির্বাচনে ২৬৬টি আসনে লড়েছে পাকিস্তান পিপলস পার্টি, পাকিস্তান মুসলিম লীগ নওয়াজসহ ১৬৭টি নিবন্ধিত দল। এদিকে বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র প্রতিবেশী ভারতেও একই ধরনের নির্বাচনী নমুনা। টানা তৃতীয় মেয়াদে জয় নিয়ে সরকার গঠনের দৃঢ় আশা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। বিপরীতে আসন্ন নির্বাচনে কারসাজির আশঙ্কা বিরোধী দল কংগ্রেসের।

সরকারের মেয়াদপূর্তি ও লোকসভা নির্বাচনের আগে বাজেট অধিবেশনে পার্লামেন্টে শেষ ভাষণে বিরোধী দল কংগ্রেসে পরিবারতন্ত্রের সমালোচনা করেন নরেন্দ্র মোদি। কটাক্ষ করেন অধিবেশনে থাকা কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে নিয়ে। দৃঢ় আত্মবিশ্বাসী মোদির দাবি লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে কমপক্ষে ৪০০টিতে জয় পাবে বিজেপির নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন জোট এনডিএ। এতে শুধু বিজেপির পক্ষেই যাবে ৩৭০টি আসন। মোদির এই আত্মবিশ্বাসে ষড়যন্ত্রের সন্দেহ জানান কংগ্রেস নেতা অধীর। বলেন, অহংকারের উত্তাপে জনগণ কাকে ভোট দেবে, সেই পরোয়া করছেন না মোদি। অধীরের দাবি, ইভিএমে কারসাজির প্রস্তুতি না থাকলে এতগুলো আসনে জয়ের বিষয়ে এতটা নিশ্চিত থাকা অসম্ভব। মোদির ভাষণে সাবেক প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও ইন্দিরা গান্ধীর সমালোচনায় কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খড়গেসহ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে ‘হ্যাশট্যাগ বাই বাই মোদি’ আন্দোলন।

অন্যদিকে বাংলাদেশে নির্বাচনী ক্রিয়াকর্ম সেরে সরকার নির্ভার থেকেও নির্ভার নয়। স্থানিক সমস্যার সঙ্গে যোগ হচ্ছে পার্শ্ববর্তীসহ নানা আঞ্চলিক ও কূটনৈতিক সমস্যা। কোনো কোনোটি টেনে আনা হচ্ছে একেবারে হাতে ধরে। বিশেষ করে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের লেখা চিঠির অনুবাদ ও প্রচার নিয়ে নোংরামি কাণ্ড সামান্য কূটনীতি বোঝা মানুষের কাছেও হাস্যকর। তার চিঠির পুরোটাই ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ে। শেখ হাসিনাকে আবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় বা নির্বাচনে বিজয়ের কোনো কথাই নেই সেখানে। বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের কথা, যা তাদের নির্বাচন-পরবর্তী স্টেটমেন্টেও বলা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে প্রচার হচ্ছে ভিন্ন তরজমায়। সরকারি দল থেকে বলা হচ্ছে, বাইডেন শুভেচ্ছা-স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দিয়ে শেখ হাসিনা ও তার সরকারের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এ ধরনের আরও নানান কথা বলা হচ্ছে প্রতিদিন। যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পরপর দুটি গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানাননি। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটি। সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে বাংলাদেশের জন্য ভিসানীতি প্রয়োগ পর্যন্ত করেছে। ৭ জানুয়ারির নির্বাচন সুষ্ঠু-অবাধ হয়নি বলে ১২ ঘণ্টার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বিবৃতিও দিয়েছে। পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র কয়েক দফা নির্বাচন নিয়ে এক‌ই মন্তব্য করেছেন। রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তা প্রতিদিনই বলে আসছেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে চিঠি লিখেছেন মর্মে চাউর করে দেওয়া হয়। এমন বাঙালিপনার মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশস্থ দূতাবাস ফেসবুক পেজে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের চিঠিটি হুবহু পোস্ট করে।
Dear Madam Prime Minister,
As we embark on the next chapter of the US-Bangadesh partnership, I want to convey the sincere desire of my adminstration to continue our work together on regional and global security, economic development, climate change and energy, global health, humanitarian support specially for Rohingya refugees, and more. We have a long and successful history of working together to solve problems, and our strong people to people ties are the foundation of the relationship.
The United States is committed to supporting BangladeshÕs ambitious economic goals and partaining with Bangladesh on our shared vision for a free and open Indo-Pacific.
Sincerely
Joseph R. Biden.

চিঠিটির বাংলা অনুবাদ দাঁড়ায়-
প্রিয় ম্যাডাম প্রধানমন্ত্রী
ইউএস-বাংলাদেশ অংশীদারত্বের পরবর্তী অধ্যায় শুরু করার সময়, আমি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং জ্বালানি, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য, মানবিক সহায়তা, বিশেষ করে রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং আরও অনেক কিছুর জন্য কাজ চালিয়ে যেতে আমার প্রশাসনের আন্তরিক ইচ্ছা প্রকাশ করতে চাই। সমস্যা সমাধানের জন্য একসঙ্গে কাজ করার আমাদের একটি দীর্ঘ এবং সফল ইতিহাস রয়েছে এবং আমাদের শক্তিশালী জনগণের সঙ্গে জনগণের বন্ধুত্ব হলো এই সম্পর্কের ভিত্তি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উচ্চাভিলাষী অর্থনৈতিক লক্ষ্যে সমর্থন দিতে এবং একটি মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য আমাদের ভাগ করা ভিশনে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশ নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আন্তরিকভাবে 
জোসেফ আর বাইডেন।
যেখানে নিজেরা না চাইলেও পরাশক্তি দেশগুলো অজান্তেই স্নায়ুযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ছে, সেখানে বাংলাদেশ নিজ থেকেই আগ বাড়িয়ে সেখানে ঢুকে পড়ছে। বিগত স্নায়ুযুদ্ধের সময় এ ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা গেছে দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এবং এশিয়ার মধ্যে ভিয়েতনাম, লাউস, কম্বোডিয়াসহ অন্যান্য দেশে। এবারের স্নায়ুযুদ্ধের সময় ইউরোপের ইউক্রেনে, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে এবং এশিয়ার মিয়ানমারে পুরোনো স্নায়ুযুদ্ধের মতো উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছে। বিগত স্নায়ুযুদ্ধের সময় বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন উপায়ে পরাশক্তিগুলো ছোট ছোট দেশগুলোকে নিজ বলয়ে রাখার জন্য সরকারের উত্থান-পতন ঘটিয়েছে। সে ধরনের কিছু আলামত এবারও।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078