মানি লন্ডারিংয়ে প্রবাসী নেটওয়ার্ক

প্রকাশ : ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ১২:৪২ , চলতি সংখ্যা
মানি লন্ডারিং আন্তর্জাতিকভাবে গুরুতর অপরাধ হিসাবে স্বীকৃত। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। কিন্তু তারপরও থেমে নেই মানি লন্ডারিং। বিশ্বের মধ্যম আয়ের দেশ হয়েও বাংলাদেশ থেকে বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। ছোটখাটো ঘটনা ধরা পড়লেও ঠেকানো যাচ্ছে না মানি লন্ডারিং। তীব্র ডলার সংকটের পরও বাংলাদেশ থেকে মোটা অংকের ডলার পাচার হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন দেশে। 
গত ২৬ জানুয়ারি শুক্রবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এক লাখ ডলারসহ দুই জন প্রবাসী বাংলাদেশিকে আটকের ঘটনা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই দুই প্রবাসী যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্টধারী। এনর্ডোসমেন্ট ছাড়া ডলার নেওয়ার সময় বিমানবন্দরের ৫ নম্বর  আইএনএস গেটের স্ক্যানিং থেকে তাদের আটক করে অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটির (এভসেক) সদস্যরা। তারা হলেন- মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন (৩৯) ও মোহাম্মদ রেজাউল (৫৯)। যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ঠিকানা প্রকাশ করেনি পুলিশ। 
জানা গেছে, বিমানবন্দরের প্রি-বোর্ডিং চেকে দুই জনকে ১ লাখ ইউএস ডলারসহ আটক করে এভসেক। তাদের এসব ডলার বহনের কোনো অনুমতি ছিল না। আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে আটককৃতদের কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আটক দুই প্রবাসীর বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। 
এদিকে গ্রেপ্তারকৃত দুই প্রবাসী বাংলাদেশিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে ১০ দিনের রিমান্ড চান তদন্তকারী কর্মকর্তা। অন্যদিকে গ্রেপ্তারকৃতদের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। গত ২৭ জানুয়ারি শনিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেন তাদের রিমান্ড ও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলগেটে দুদিন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।  
একাধিক সূত্র জানায়, আগে থেকেই গ্রেপ্তারকৃতদের ব্যাপারে তথ্য ছিল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মীদের কাছে। ওই তথ্য অনুযায়ী দুই প্রবাসী বাংলাদেশিকে আটক করা হয়। এর আগেও তারা বাংলাদেশ থেকে ডলার পাচার করেছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। এমনকী তারা বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি ও প্রবাসীর নাম বলেছেন। এখন তাদের ওপর নজর রাখছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। 
তদন্তকারী একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশে মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের বহু প্রবাসী বাংলাদেশি জড়িত। তাদের রয়েছে বড় একটি সিন্ডিকেট। প্রবাসে সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যবসা বা আয়ের উৎস না থাকলেও বিদেশের মাটিতে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে চক্রটি। প্রবাসে একাধিক দামী গাড়ি ও বাড়ি রয়েছে তাদের। একটি ফোন কলেই তারা কোটি কোটি টাকা বাংলাদেশকে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করছেন। 
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) তথ্য অনুযায়ী- বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষস্থানীয়। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে প্রধানত হুন্ডির মাধ্যমে এই অর্থ পাচার হয়। জিএফআই’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২০ বছরে বাংলাদেশ থেকে কমপক্ষে ১৭ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। কী পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে তার নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে। তবে নিঃসন্দেহে পাচার করা অর্থের পরিমাণ অস্বাভাবিক, অভাবনীয়। 
এদিকে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন বলছে- দেশে যত ডলার ঢুকছে তার চেয়ে বেশী টাকা দেশ থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে। সারা বিশ্বের হুন্ডি ব্যবসায়ীরা এজন্য টার্গেট করেছে এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশ। তবে তাদের মূল টার্গেট উন্নয়নশীল দেশ থেকে স্বল্পোন্নত বাংলাদেশ। দুদকের কাছে বাংলাদেশের কিছু হুন্ডি ব্যবসায়ীর তালিকা রয়েছে, যারা আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশিদের অনেকেই এই চক্রের সক্রিয় সদস্য। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে তাদের ধরার চেষ্টা চলছে। 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078