জামায়াতের রহস্যময়তা 

প্রকাশ : ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ১০:২৮ , চলতি সংখ্যা
বিএনপির শক্তিধর প্রধান রাজনৈতিক শক্তি জামায়াতে ইসলামী দীর্ঘদিন যাবৎ নিষ্ক্রিয়, নিষ্পৃহ হয়ে অছে। কেবল জামায়াতই নয়, তাদের সহযোগী অপরাপর ধর্মীয় দলগুলোও নিশ্চুপ। তাদের নির্লিপ্ততা ক্ষমতাসীন দলসহ রাজনৈতিক মহলে নানা প্রশ্ন, সংশয়, শঙ্কার জন্ম দিয়েছে।
বিএনপির সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে প্রধান সহযোগী ছিল জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন, চরমোনাইর পীরের সংগঠন ইসলামী শাসনতান্ত্রিক আন্দোলনসহ ধর্মভিত্তিক ইসলামি দলগুলো। তারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে জোটগতভাবে সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির শরিক হয়। নির্বাচনের আগে থেকেই তাদের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত সমঝোতার ভিত্তিতে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হয়। জামায়াত ছিল বিএনপির এক দফা আন্দোলনের প্রধান শক্তি। বোমাবাজি, অগ্নিসংযোগ, বাস-ট্রেনসহ যানবাহনে হামলা, ধ্বংসাত্মক ও নাশকতামূলক কার্যকলাপের মাধ্যমে নির্বাচন ভণ্ডুল করতে মুখ্য ভূমিকার দায়িত্ব দেওয়া হয় মহানগর জামায়াত, খেলাফত এবং বিএনপির মহানগর, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নির্দিষ্ট সংখ্যক নেতাকর্মীকে। জামায়াতের দায়িত্বপ্রাপ্ত শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক রহমানের সরাসরি যোগাযোগ ও নিয়মিত কথাবার্তা হয়। ঢাকাস্থ একটি দূতাবাসের একজন কূটনীতিকের সঙ্গে বিএনপির অত্যন্ত প্রভাবশালী এক নেতার নিয়মিত যোগাযোগ ও কথাবার্তা হয়। চট্টগ্রামের অধিবাসী ওই নেতা তারেক রহমানের সর্বাধিক বিশ্বস্ত বলে পরিচিত। তারেকের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যত তিনিই দল পরিচালনায় সিদ্ধান্ত নেন। জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় চৌদ্দগ্রামের অধিবাসী এক নেতা ও বিএনপির উল্লিখিত নেতা ঢাকাস্থ কূটনৈতিক মহলে নিয়মিত ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ করে পরামর্শ ও ক্ষেত্রবিশেষে নির্দেশনা নিতেন বলে জানা যায়। এ ব্যাপারে সরকারের হাতে বিশ্বাসযোগ্য কিছু তথ্য-প্রমাণও এসে যায়। বিএনপির একজন নেতা জানান, জামায়াতের একজন প্রতিনিধির সঙ্গে তারেক রহমানের সাক্ষাৎ ও একান্ত বৈঠক হয়।
নির্বাচনের আগে যাত্রীবাহী বাস, ট্রেন, সরকারি-বেসরকারি যানবাহনে অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার পরিকল্পনা ছিল বিএনপি-জামায়াতের। নির্বাচন ভণ্ডুল করে সংবিধানবহির্ভূত শক্তির ক্ষমতার পথ প্রশস্ত করাই ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য। মধ্যপ্রাচ্যের সর্বাধিক শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থার পরিকল্পনা অনুযায়ী বিএনপি-জামায়াতের কাজ করার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জামায়াত সরে দাঁড়ায়। বিস্ময়করভাবে তারেক রহমানের লন্ডন থেকে আসা পরিকল্পনা সরকারের সংশ্লিষ্টদের হাতে সময়মতোই চলে আসে। মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা এবং জামায়াত-বিএনপি সূত্রেই সরকার সমস্ত গোপন সংবাদ পেয়ে যায়। ফলে জামায়াত নাশকতা, ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেওয়ার নীতি নেয়। তাদের এ সিদ্ধান্ত বিএনপিকে দিশেহারা করে তোলে। দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা ছাড়াও সরকারবিরোধী কার্যকর কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য নির্ধারিত নেতাকর্মীরা গ্রেফতার হয়ে যাওয়ায় বিএনপি নেতৃত্ব তাদের কথিত সরকার পতনের আন্দোলন এগিয়ে নিতে পারেনি। তাদের আন্তর্জাতিক মুরব্বিও সতর্কে নিজেদের আপাতত গুটিয়ে নেওয়ার নীতি নেয়।
জামায়াতের সরকার পতনের আন্দোলনে নিস্পৃহতা বিএনপিকে বিস্মিত করলেও নেপথ্যের কারণ তাদের অনেকেরই অজানা রয়ে গেছে। একটি প্রভাবশালী সূত্রে জানা যায়, জামায়াতের বর্তমান নেতৃত্ব সরকারের সঙ্গে গভীর সমঝোতায় কাজ করছে। দলীয় প্রতীক হারালেও এবং দলের অনেক নেতা আটক থাকলেও সমঝোতা ক্রিয়াশীল রয়েছে। সংগঠনগতভাবে জামায়াত নিষিদ্ধ হচ্ছে না। যদিও আইনমন্ত্রীসহ সরকারের একাধিক মন্ত্রী, প্রভাবশালীরা বেশ কয়েকবারই প্রকাশ্যে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হবে বলে ঘোষণা দেন। কিন্তু তা কার্যকর হয়নি, হওয়ার সম্ভাবনাও নেই। তবে জামায়াত গঠনতান্ত্রিক বেশ কিছু সংশোধনী আনবে।
বিএনপি সরকারবিরোধী বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে হতাশ কর্মীদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে। একপর্যায়ে বড় কর্মসূচি দেবে। রাজনৈতিক কারণে জামায়াত ও আরও কয়েকটি ধর্মীয় সংগঠন রাজপথে আসবে। তবে বিএনপির সহযোগী হিসেবে নয়।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078