নির্বাচনী সংবাদ : পজিটিভ নিগেটিভ

প্রকাশ : ২১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:২৬ , চলতি সংখ্যা
বাংলাদেশে নির্বাচন যখন আসে, তখন বানের জলের মতো ভেসে আসে আরও কিছু অনুষঙ্গ। বাংলাদেশটাই একটা বিস্ময়ে ভরা দেশ। যেকোনো দেশে নির্বাচন হলে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে একটা উত্তেজনা দেখা যায়। ক্ষমতায় যারা থাকেন, তাদের মধ্যে উত্তেজনা, ক্ষমতা ধরে রাখা যাবে তো! যারা বিরোধী দলে থাকেন, তাদের ভাবনাÑগতবার ব্যর্থ হয়েছি, এবার শিকে ছিঁড়বে তো! কিন্তু বাংলাদেশে যখন নির্বাচন আসে, তখন উত্তেজনার সঙ্গে সঙ্গে আতঙ্কও ঘিরে ধরে। সে আতঙ্ক এতটাই যে, সবাই আতঙ্ক নিয়ে ভাবতে থাকে, এবার কত বাড়ি-ঘর, গাড়ি-ঘোড়া পুড়বে? কতজন আগুনে ঝলসে প্রাণ হারাবে? কতজনের প্রাণ যাবে পুলিশের গুলিতে। কতগুলো পোলিং বুথ দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে পুড়ে ছাই হবে। কতজন পুলিশ প্রাণ দেবে। হরতাল-অবরোধে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি হবে কতটা। আমার সন্তান ঘরের বাইরে পা বাড়ালে, ঘরে ফিরে আসবে তো!

এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে। ৭ জানুয়ারি পূর্বঘোষিত তারিখ। ইতিমধ্যেই মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে। নির্বাচন ঠিকমতো হবে তো? মনোনয়নপত্র জমাদান, প্রত্যাহারের কাজ শেষ। এমনকি মিত্র শক্তির মধ্যে আসন বণ্টনের কাজও শেষ হয়েছে। বাংলাদেশের নির্বাচনে এই এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। যেসব দলের ইউনিয়ন পর্যায়ের নির্বাচনেও একটি আসনে জয়লাভের নিশ্চয়তা নেই, তারাও জোট বা মিত্রশক্তির বলে এমপি হতে চান। এমনকি মিত্র দলের যদি জয় হয়, তবে সেই দলের পার্লামেন্টারি পার্টির যিনি নেতা নির্বাচিত হন, সেই নেতার কৃপাদৃষ্টি লাভ করলে গুরুত্বপূর্ণ পদে মন্ত্রিত্বও পেয়ে যেতে পারেন। এ রকম দৃষ্টান্ত বাংলাদেশে অনেক আছে।

দলীয় সরকারের অধীনে এবারও দেশের অন্যতম একটি বড় দল, যে দলটিকে মনে করা হয় পার্লামেন্টের বাইরে, সেই দলটিই রাজপথের প্রধান বিরোধী দল, সেই দল বিএনপিÑবাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি এবারও নির্বাচনের বাইরে রয়েছে। তাদের দাবি, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া তারা আর কারও অধীনে নির্বাচনে যাবে না। সে দাবি পূরণ হওয়ার বিষয়ে দেশের মানুষ দ্বিধাবিভক্ত। রাজনীতির বিশ্লেষকেরা মনে করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে আসা ‘দিল্লি দূরস্ত’, তবু ‘একবার না পারিলে দেখো শতবার’, বিএনপি যেন তেমন চেষ্টাই করে যাচ্ছে।

এ রকম ‘ইয়েস’ এবং ‘নো’ পরিস্থিতির মধ্যে যখন একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সে নির্বাচন এ রকম আতঙ্ক-উৎকণ্ঠার মধ্যে হওয়ার আশঙ্কাই বড় হয়ে দেখা দেয়। আর দলের জয়-পরাজয়ের চেয়ে বড় হয়ে দেখা দেয় দেশ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। মনে রাখা খুব জরুরি, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের নির্বাচনে জয়-পরাজয়ই শেষ কথা নয়। দেশের অর্থনীতি একটি দেশের জন্য সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর। নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক ডামাডোলের মধ্যে অর্থনীতি যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তবে তা আবার ঠিকঠাকমতো মেরামত করা কঠিন হয়ে যাবে। আমাদের নির্বাচনী অস্থিরতার মধ্যে অর্থনীতির সে রকম অবস্থা হয়ে যাওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে।

এ রকমই একটি সংবাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই সম্পাদকীয়টি শেষ করব বলে ভাবছি। সংবাদটির শিরোনাম দেওয়া হয়েছে : ‘দেশে উঁকি দিচ্ছে অর্থনৈতিক সংকট’। সংবাদটি জানান দিচ্ছে, দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান খাত রপ্তানি ও রেমিট্যান্স দুটোই কমছে। নভেম্বরে রেমিট্যান্স আগের মাসের চেয়ে কম এসেছে।’ টানা দুই মাস পতন হয়েছে রপ্তানি খাতে। রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের পতনে বৈদেশিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বিরাজমান। জানা গেছে, এই আশঙ্কাকে আরও ঘনীভূত করে তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোর ক্রমাগত বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার হুমকি। ইতিমধ্যে রাজনৈতিক সংকট সমাধানের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র সব দলকে সংলাপের জন্য চাপ দিয়েছিল। বিরোধী দল এতে সাড়া দিলেও সরকারি দল সাড়া দেয়নি। নানা দিক থেকেই অর্থনৈতিক চাপ বাড়ছে বাংলাদেশের ওপর। সামনে নির্বাচন হয়তো হয়ে যাবে। কিন্তু নির্বাচনই তো একটি দেশের জন্য শেষ কথা নয়। অতঃপর?
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078