প্রাণীর রং দেখার ধরন দেখাল নতুন ভিডিও ক্যামেরা 

প্রকাশ : ২৭ জানুয়ারী ২০২৪, ১৩:১৫ , অনলাইন ভার্সন
সামাজিক মাধ্যম টিকটক যখন তাদের ‘ডগ ভিশন’ ফিল্টার নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে ঠিক তখনই বিজ্ঞানীরা এমন এক দুর্দান্ত প্রযুক্তি নিয়ে ব্যস্ত, যার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রাণীর চোখে পৃথিবীটা আসলে কেমন, তা দেখা যায়।

বিজ্ঞানীরা এমন এক ক্যামেরা সিস্টেম বানিয়েছেন, যেখানে প্রাণীরা আসলে কী ধরনের রং দেখতে পায়, তা শনাক্ত করা যায়। আর এর নির্ভুলতা ৯২ শতাংশের বেশি বলে উঠে এসেছে পিয়ার-রিভিউভিত্তিক জার্নাল ‘পিএলওএস বায়োলজিতে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে।

“নতুন ক্যামেরা সিস্টেম ও এর সহায়ক সফটওয়্যার প্যাকেজ থেকে পরিবেশবিদরা পরীক্ষা চালাতে পারেন, কীভাবে প্রাণীরা বিভিন্ন রঙের ভিত্তিতে চলাফেরা করে থাকে বা কীভাবে প্রাকৃতিক আলোর ওপর নির্ভর করে তাদের গতিবিধি পরিবর্তিত হয়। এমনকি প্রযুক্তির অভাবে এ সম্পর্কিত যেসব প্রশ্নের জবাব এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি সেইসব বিষয়াদি নিয়েও অনুসন্ধান চালানোর সুযোগ মিলবে এতে।” — প্রকাশিত পেপারে লিখেছেন বিজ্ঞানীরা।

প্রাথমিকভাবে গবেষণা দলটি বিশেষ এক ধরনের ক্যামেরা ও সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিভিন্ন রঙের আলো, যেমন নীল, সবুজ, লাল ও অতিবেগুনি (ইউভি) দিয়ে ভিডিও তৈরি করেছেন। পরবর্তীতে, প্রাণীদের চোখ নিয়ে বিজ্ঞানীদের প্রচলিত ধারণার ভিত্তিতে তাদেরকে বিভিন্ন রং দেখাতে ভিডিওগুলো পরিবর্তন করা হয়। এর পর প্রতিটি প্রাণী কীভাবে রং দেখে, সে তথ্যগুলোকে ভিডিও’তে রূপান্তর করেছেন তারা।

“প্রতিটি প্রাণীর নিজস্ব ‘ফটোরিসেপ্টর সেল’ (চোখে মৌলিক আলো প্রক্রিয়াকরণের একক) থাকে। অতিবেগুনী থেকে ইনফ্রারেড আলোক রশ্মি এমন বেশ কিছু রঙের ওপর নির্ভর করে এর সংবেদনশীলতা, যা প্রাণীদের পরিবেশগত চাহিদার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রেও সহায়ক। আর অনেক প্রাণী পোলারাইজড বা ফিল্টারযুক্ত আলো শনাক্ত করতে পারে। ফলে তাদের অনুভব করার পদ্ধতিও ভিন্ন হয়ে থাকে।” — উল্লেখ রয়েছে গবেষণাপত্রে।

বিজ্ঞানীরা আরও বলছেন, যেহেতু মানুষের চোখ বা বাজারে প্রচলিত ক্যামেরার মাধ্যমে প্রাণীদের আলো দেখার অবিকল ধরনটি ধারণ করা যায় না, তাই এ নতুন প্রযুক্তির সহায়তায় বিজ্ঞানীরা আরও ভালভাবে বুঝতে পারবেন যে কীভাবে বিভিন্ন প্রাণী অন্য প্রাণীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ও পৃথিবীতে ঘুরে বেড়ায়।

ক্যামেরাটি কীভাবে কাজ করে?
বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রথাগত ক্যামেরা সিস্টেমে একটি বিশেষ অংশ রয়েছে, যার নাম ‘বিম স্প্লিটার’। এটি ইউভি আলোকে গতানুগতিক আলো থেকে আলাদা করে প্রতিটিকে দুটি ভিন্ন ক্যামেরায় পাঠিয়ে থাকে। একই সময়ে এর সকল রং রেকর্ড করেন বিজ্ঞানীরা, যার মাধ্যমে এর ভিডিও রেকর্ডিং করা সম্ভব হয়। রেকর্ডিংয়ের পর প্রাণীরা কীভাবে বিভিন্ন রং দেখে, তার ভিত্তিতে রংগুলো সামঞ্জস্য করা হয়।

এ ক্ষেত্রে ‘লিনিয়ারাইজেশন অ্যান্ড ট্রান্সফর্মেশন’ নামের প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয়, যেখানে ‘ফটোরিসেপ্টর কোয়ান্টাম ক্যাচ’ নামের ব্যবস্থার ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন রং তৈরি হয়ে থাকে।

উদাহরণ হিসেবে, নিচে দেখানো ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে কীভাবে চারটি ভিন্ন প্রাণী (যথাক্রমে ময়ূর, মানুষ, মৌমাছি ও কুকুর) নিজ চোখে ময়ুরের পালক দেখে থাকে। 

“প্রাণীরা কীভাবে বিশ্ব দেখে, সে ধারণা দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের আগ্রহের কেন্দ্রে। আর এমন আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে আমরা ধারণা পেয়েছি, প্রাণীরা কীভাবে বিভিন্ন স্থির দৃশ্য দেখতে পায়। ‘মুভিং টার্গেট’ বা গতিশীল লক্ষ্যবস্তু নিয়ে প্রায়শই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হয় বিভিন্ন প্রাণীকে (উদাহরণ হিসেবে, খাবার শনাক্ত করা, সম্ভাব্য সঙ্গী মূল্যায়ন করা ইত্যাদি)।” — বলেছেন এ গবেষণার লেখক ও ‘জর্জ মেসন ইউনিভার্সিটি’র সহকারী অধ্যাপক ড্যানিয়েল হ্যানলি।

“এখানে আমরা পরিবেশবিদ ও চলচ্চিত্র নির্মাতাদেরকে ক্যামেরার বিভিন্ন এমন হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার টুলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই, যেগুলো গতিবিধির ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রাণীর রং ধারণ করতে ও দেখাতে পারে।”

ক্যামেরাটি এখনও বাজারে না এলেও বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি বানানো হয়েছে প্রচলিত ক্যামেরা ও থ্রিডি প্রিন্টারে তৈরি ‘মডিউলার কেসিং’ থেকে। এর সফটওয়্যার অবশ্য ‘ওপেন সোর্স’ হিসেবেই রাখা হয়েছে। এর মানে, অন্যান্য গবেষকও এটি ব্যবহার করে নিজেদের প্রয়োজন অনুসারে নতুন প্রযুক্তিও তৈরি করতে পারেন।”

ঠিকানা/এসআর
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041