গোলাম রববানীর সাতটি কবিতা

প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারী ২০২৪, ১৪:০২ , অনলাইন ভার্সন
বোধ
সমস্ত অপবাদ পৃথিবী থেকে ধীরে ধীরে মুছে যেত
মুছে যেত পৃথিবীর সমূহ নষ্টামি—যদি ‘ভালো’ প্রতিষ্ঠিত হতো
পৃথিবীর বিবেকের বোধে—পৃথিবীর বোধ জ্ঞানহীন
যা না বুঝে শুরু হয়, বুঝে বিনাশের বিশাল বিজয় হয়

মূর্খতা বলছি না মোটেও, ঠিক জাগ্রত বোধের অপচয়
যেন বুঝ-অবুঝের খেলা; জেনেশুনে আগুনে ঝাপ দেওয়া
হয়তো পোড়ানো নয়তোবা পুড়ে পুড়ে কয়লা হওয়া...
শীতের হাড়কাঁপানো হিমে জবুথবু হয়ে বলে যাবো আমি
বোধের জন্মস্থান কোথায়—মানুষ, অমানুষে জড়ানো;
সামলাতে পারি না নিজেকেই, নৈতিকতাও দাঁত কেলান।

**** 
বোধ- দুই
যদি মানুষের জন্ম না হতো—
তাহলে বিবেক শব্দটি আসতো না;
যুদ্ধ শব্দটি অথর্ব মুখ থুবড়ে পড়ে থাকতো না কখনো।

এই শান্তি সমৃদ্ধির কিংবদন্তি সুখ বিলাসিতা মৃতমাত্র
হিংসার ওপরে হিংসা স্তরে স্তরে বিছিয়ে এখানে
হিংসা-প্রতিহিংসার রমরমা মহা অট্টালিকা নির্মিত হয়—
অযথা মিথ্যার সংগঠন গড়ে ওঠে, কলাগাছের মতো
ফুরফুরে বেড়ে ওঠে কলা দেখানো সব ব্যবসায়ীর দলবল
গরিবের রক্তে স্নান সেরে, পৃথিবীর মুখে বুলি ফোটে
 
আমার বোধে বারোটা বেজে গেছে,
অথচ আমি বুঝতে পারছি না মোটেও, কেমন মানুষ আমি?

****
বোধ- তিন 
আইল ঠেলা মানুষদের সাথে পেরে উঠতে পারিনি;
সব মানি, সব বুঝি—যা বলবে তাই—তালগাছটা আমার

বোধের আইল কাটতে কাটতে ক্লান্ত পৃথিবীর শ্রেষ্ঠপ্রাণী
কেবল খামখেয়ালি সাদা কাগজের সেই পৃষ্ঠাগুলো—
কালো কালিতেই লেপটানো খালি খালি নিয়মকানুন
বোধের ঘরবাড়ি শূন্যতা—ঠোঁটে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল।

ধ্বংসযজ্ঞের কাণ্ডারী প্রকৃতি বিবেকবোধের হাত নেই
কী সুন্দর নৈতিকতার পাঁচমিশালি গল্প বলছি;
নৈতিকতার গল্প কথকেরাই এ সময়ের শ্রেষ্ঠ ভিলেন।
আমার বিবেকের আদালতে আমি কি ন্যায়বিচার পাবো?
 
****
বোধ- চার
জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে লড়তে আসছি আমি
সময়ের শ্রেষ্ঠ সেবক আমাকে হতে হবে বলে;
কিন্তু, ‘কিন্তু’ শব্দটির পেট কতো মোটা আমি কী জানি?
পাগলামো কথাবার্তা ছাড়ো, আবালবৃদ্ধবনিতা জানে।

****
বোধ-পাঁচ
বিবেকের উঠোনকে পিচ্ছিল কর্দমাক্ত মনে হয়

যত হাঁটি তত বেশি আরও পিছলে পিছলে পড়ি
আবার লোকলজ্জার ভয়ে হামাগুড়ি দিয়ে ঠেলে উঠি
শৈশব শিশুর মতো ব্যথায় চিৎকার করে উঠি
কিছুক্ষণ কাঁদি—কাঁদতে কাঁদতে ব্যথা ভুলি, পথ চলি

বিবেকের উঠোনজুড়ে আজও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ
নিজেকে কেমন করে গড়ে তুলি? বিবেকের মাগো, জাগো
বিবেকের বোধ তলাহীন ব্রেন যেন, থাকে না অবিশিষ্ট
কিছুই, খসে পড়ে মূল্যবোধ, নৈতিকতা আরও জগৎ

মানুষকে মানুষ হিসেবে ভাবাও অতটা সহজ না
মানুষকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা অতটা কঠিন না
মানুষ আজ বিবেকে অধঃপতিত, বোধ অগ্রযাত্রা করে...

****
বোধ- ছয়
ক্ষমতার দুই হাতে ডালি ভরা বিশ্বাস ভরসা
ভেঙে গেলে রোদেরা কি থাকে আর পাতায় পাতায়
চিতায় চিতায় চিত হয়ে যায় ছাইভস্ম উড়ে;
অবেলা হাতের রেখা দেখে দেখে ভাগ্যদোষ খোঁজে।

মাটির মধ্যেই মাটি একাকার হয়ে যায় মিশে
কাদামাটি, ধুলোবালি ও বাতাস ওড়াউড়ি দেখে
মধ্যে মধ্যে ধাক্কা খায়, সামলাতে পারে কি কখনো
যে যার মতো যেদিকে—শূন্যতার বসবাস ব্রেনে।

ব্রেন তো নয় নর্দমা—তবু ফেলি, ফেলি তো নাকি, না
নানান তাল লেলিয়ে দিয়ে যায় শুভ্র তুলো হয়ে
বোঝার আগেই দেখি কালো কালো হে কালনাগিনী
কালের হাট-বাজারে কী সওদা করে যাও, ফিরে...

বোধের বাজার বিক্রি হলে এসো বিগার খাটি হে
আমার বোধের স্থান ঠেকে গেছে বিশ্ববোধের দেওয়ালে
খুচরো পয়সা দিয়ে কিনে নেবো বোধ বিক্রি হলে
অবোধের বোধ না, হে নির্বোধ! আমি বোধহীন।

****
বোধ- সাত
নির্বোধের বোধ থাকে যতটুকু দরকার ঠিক
ততটুকু, আর বোধ—শূন্য হাতে বোধের বৈরাগী
মানা, না মানা একান্ত ব্যাপারটা কিন্তু যার তার—
দেখেছি বোধ সাগরে খেলা করে হাবুডুবু খেয়ে!

বোধের সিস্টেম থাকে, নির্বোধেরা সিস্টেমে থাকে না
নির্বোধের দলে আমি, ইচ্ছেমতো যাচ্ছেতাই করি—
কথা দিই না কাউকে, কেউকেটা, মেঘ ভাঙা বৃষ্টি:
নেমে পড়ি অশ্রুবন্যা হয়ে চোখ ফসলের মাঠে...

চোখের অশান্তি খরা ভেবে দেখো জলেই জোসনা
এহেন লোকের চোখে নীলজল—রক্তজলে লাল
হয়ে গেছে বিষাক্ততা, পবিত্রতা পরদেশি পূজা
বোধের সংসারে ঢুকে গেছে যত সু-বদমায়েশি!
 
ঘৃণ্য চাষাবাদ হয় এখানেই না বোঝার ভানে,
তবু বোধের বোতল তো নিঃশেষ নিগূঢ় আগুনে।
জ্বলে না পোড়ে না—অগ্নিসহ—নির্বোধের মনে
একদিন আপনার তাগিদেই ফাটবে চৌচিরে।

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041