চীনে করোনাভাইরাসের নতুন একটি ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ছে। ‘এক্সবিবি’ নামক করোনার এই নতুন ভ্যারিয়েন্টটি জুনের শেষ দিকে এতটাই ব্যাপক সংক্রমণ ঘটাতে পারে যে সপ্তাহে সাড়ে ছয় কোটির বেশি মানুষ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশটির একজন জ্যেষ্ঠ স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর চীন ‘জিরো কোভিড’ নীতি থেকে সরে আসার পর নতুন ভ্যারিয়েন্টটি ইমিউন সিস্টেমকে দুর্বল করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যার ফলে দেশটিতে করোনার নতুন ঢেউ অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে।
স্বাস্থ্যবিদরা আশঙ্কা করছেন এক্সবিবির সংক্রমণে এই মাসের শেষ নাগাদ দেশটিতে সপ্তাহে ৪ কোটি সংক্রমণ ছাড়িয়ে যেতে পারে। আর জুনের শেষে সংক্রমণ সপ্তাহে সাড়ে ছয় কোটিতে পৌঁছাতে পারে। ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগে দেশটিতে একদিনে তিন কোটি সত্তর লাখ মানুষের আক্রান্ত হওয়ার রেকর্ড হয়েছিল। এটিই এখন পর্যন্ত একদিনে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের রেকর্ড। এক্সবিবি হলো ওমিক্রনের বিএ.২.৭৫ এবং বিজে.১ এর সাব-ভ্যারিয়েন্টের একটি হাইব্রিড সংস্করণ। এতে ইমিউনকে দুর্বল করে ব্যাপক সংক্রমণের ক্ষমতা রয়েছে।
স্পাইক প্রোটিনে এক্সবিবি’র সাতটি মিউটেশন রয়েছে। ইমিউন সিস্টেম এক্সবিবিকে চিনতে সময় নেয়। এটি ইমিউন কোষকে কৌশলে ধোকা দিয়ে শরীরের কোষে আরও সহজে প্রবেশ করতে পারে। গেল মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে নেয়। এর কয়েক সপ্তাহ না যেতেই চীনে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট। এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যে করোনার ধরন বিশ্লেষণ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, জরুরি অবস্থা শেষ হয়ে গেলেও মহামারি শেষ হয়নি।
চীনের গ্লোবাল টাইমস জানায়, চায়না সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (চায়না সিডিসি) অনুসারে, এক্সবিবি মিউট্যান্টের সংক্রমণের হার ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি ০.২ শতাংশ থেকে এপ্রিলের শেষের দিকে ৭৪.৪ শতাংশে পৌঁছে। তারপরে মে মাসের শুরুতে তা ৮৩.৬ শতাংশে বেড়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এক্সবিবির সংক্রমণক্ষমতা এবং ভ্যাকসিন প্রতিরোধের ক্ষমতা আগের ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে শক্তিশালী। তবে জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের মতে, এর প্যাথোজেনিসিটিতে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নেই।
চায়না সিডিসির সাপ্তাহিক প্রকাশিত ডেটায় দেখা যায় যে, ৩৬৮টি কোভিড-১৯ সংক্রমণের মধ্যে ১০৪ জন দ্বিতীয়বার সংক্রমিত হয়েছেন। যদিও এদের বড় একটি অংশ বুস্টার ডোজ পেয়েছেন। এর আগে সংক্রমণের ব্যাপক বৃদ্ধির সময় চীনে পণ্য মজুতের দিকে ঝুঁকেছিল মানুষ। এতে এক প্রকার সংকট তৈরি হয়। দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাও গুরুতর চাপের মধ্যে পড়েছিল। হাসপাতালগুলি রোগী দিয়ে ভরে যায় এবং ওষুধের ঘাটতিতে বিপাকে পড়ে দেশটির স্বাস্থ্যসেবা।
এবার করোনার নতুন সংস্করণকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে চীন। চীনের শীর্ষস্থানীয় শ্বাসযন্ত্রের রোগ বিশেষজ্ঞ ঝং নানশান আশা করছেন, চীন শিগগিরই দেশে কোভিড-১৯-এর সর্বাধিক প্রভাবশালী স্ট্রেনকে লক্ষ্য করার জন্য দুটি নতুন ভ্যাকসিন পাবে। গত সোমবার চীনের গুয়াংঝু প্রদেশে গ্রেটার বে এরিয়া সায়েন্স ফোরামকে তিনি বলেছিলেন, ওমিক্রনের সাবভেরিয়েন্টগুলিকে লক্ষ্য করে ভ্যাকসিনগুলি প্রাথমিক অনুমোদন পেয়েছে। শিগগিরই এগুলো বাজারে আসবে।
আরও চারটি নতুন ভ্যাকসিনও শিগগিরই অনুমোদন পাবে বলে আশা করা হয়েছিল। তবে সেগুলি কবে নাগার আসতে পারে বা অনুমোদন পাবে সে সম্পর্কে তিনি বিশদ কিছু জানাননি। পিকিং ইউনিভার্সিটি ফার্স্ট হাসপাতালের শ্বাস-প্রশ্বাস বিশেষজ্ঞ ওয়াং গুয়াংফা গ্লোবাল টাইমসকে বলেছেন, দ্বিতীয় ঢেউটি প্রথমটির মতো খারাপ হবে না, বা হাসপাতালগুলিকে অতিরিক্ত চাপে ফেলবে না। কারণ পুনরায় সংক্রমণ সাধারণত হালকা হয়। অর্থাৎ রোগীর অবস্থা গুরুতর করে না।
তবে ওয়াং সংক্রমণ প্রতিরোধে জটিল রোগে আক্রান্ত ও দুর্বল মানুষদের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। এই ধরনের মানুষের জন্য সংক্রমণটি ক্ষতির কারণ হতে পারে। চীন ক্সবিবি মোকাবিলায় দুটি ভ্যাকসিন অনুমোদন করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, শিগগিরই আরও তিন-চারটি অনুমোদন দেওয়া হবে। আরও কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরিতে আমরা অন্যান্য দেশের চেয়ে এগিয়ে চলেছি।
ঠিকানা/এম
স্বাস্থ্যবিদরা আশঙ্কা করছেন এক্সবিবির সংক্রমণে এই মাসের শেষ নাগাদ দেশটিতে সপ্তাহে ৪ কোটি সংক্রমণ ছাড়িয়ে যেতে পারে। আর জুনের শেষে সংক্রমণ সপ্তাহে সাড়ে ছয় কোটিতে পৌঁছাতে পারে। ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগে দেশটিতে একদিনে তিন কোটি সত্তর লাখ মানুষের আক্রান্ত হওয়ার রেকর্ড হয়েছিল। এটিই এখন পর্যন্ত একদিনে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের রেকর্ড। এক্সবিবি হলো ওমিক্রনের বিএ.২.৭৫ এবং বিজে.১ এর সাব-ভ্যারিয়েন্টের একটি হাইব্রিড সংস্করণ। এতে ইমিউনকে দুর্বল করে ব্যাপক সংক্রমণের ক্ষমতা রয়েছে।
স্পাইক প্রোটিনে এক্সবিবি’র সাতটি মিউটেশন রয়েছে। ইমিউন সিস্টেম এক্সবিবিকে চিনতে সময় নেয়। এটি ইমিউন কোষকে কৌশলে ধোকা দিয়ে শরীরের কোষে আরও সহজে প্রবেশ করতে পারে। গেল মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে নেয়। এর কয়েক সপ্তাহ না যেতেই চীনে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট। এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যে করোনার ধরন বিশ্লেষণ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, জরুরি অবস্থা শেষ হয়ে গেলেও মহামারি শেষ হয়নি।
চীনের গ্লোবাল টাইমস জানায়, চায়না সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (চায়না সিডিসি) অনুসারে, এক্সবিবি মিউট্যান্টের সংক্রমণের হার ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি ০.২ শতাংশ থেকে এপ্রিলের শেষের দিকে ৭৪.৪ শতাংশে পৌঁছে। তারপরে মে মাসের শুরুতে তা ৮৩.৬ শতাংশে বেড়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এক্সবিবির সংক্রমণক্ষমতা এবং ভ্যাকসিন প্রতিরোধের ক্ষমতা আগের ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে শক্তিশালী। তবে জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের মতে, এর প্যাথোজেনিসিটিতে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নেই।
চায়না সিডিসির সাপ্তাহিক প্রকাশিত ডেটায় দেখা যায় যে, ৩৬৮টি কোভিড-১৯ সংক্রমণের মধ্যে ১০৪ জন দ্বিতীয়বার সংক্রমিত হয়েছেন। যদিও এদের বড় একটি অংশ বুস্টার ডোজ পেয়েছেন। এর আগে সংক্রমণের ব্যাপক বৃদ্ধির সময় চীনে পণ্য মজুতের দিকে ঝুঁকেছিল মানুষ। এতে এক প্রকার সংকট তৈরি হয়। দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাও গুরুতর চাপের মধ্যে পড়েছিল। হাসপাতালগুলি রোগী দিয়ে ভরে যায় এবং ওষুধের ঘাটতিতে বিপাকে পড়ে দেশটির স্বাস্থ্যসেবা।
এবার করোনার নতুন সংস্করণকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে চীন। চীনের শীর্ষস্থানীয় শ্বাসযন্ত্রের রোগ বিশেষজ্ঞ ঝং নানশান আশা করছেন, চীন শিগগিরই দেশে কোভিড-১৯-এর সর্বাধিক প্রভাবশালী স্ট্রেনকে লক্ষ্য করার জন্য দুটি নতুন ভ্যাকসিন পাবে। গত সোমবার চীনের গুয়াংঝু প্রদেশে গ্রেটার বে এরিয়া সায়েন্স ফোরামকে তিনি বলেছিলেন, ওমিক্রনের সাবভেরিয়েন্টগুলিকে লক্ষ্য করে ভ্যাকসিনগুলি প্রাথমিক অনুমোদন পেয়েছে। শিগগিরই এগুলো বাজারে আসবে।
আরও চারটি নতুন ভ্যাকসিনও শিগগিরই অনুমোদন পাবে বলে আশা করা হয়েছিল। তবে সেগুলি কবে নাগার আসতে পারে বা অনুমোদন পাবে সে সম্পর্কে তিনি বিশদ কিছু জানাননি। পিকিং ইউনিভার্সিটি ফার্স্ট হাসপাতালের শ্বাস-প্রশ্বাস বিশেষজ্ঞ ওয়াং গুয়াংফা গ্লোবাল টাইমসকে বলেছেন, দ্বিতীয় ঢেউটি প্রথমটির মতো খারাপ হবে না, বা হাসপাতালগুলিকে অতিরিক্ত চাপে ফেলবে না। কারণ পুনরায় সংক্রমণ সাধারণত হালকা হয়। অর্থাৎ রোগীর অবস্থা গুরুতর করে না।
তবে ওয়াং সংক্রমণ প্রতিরোধে জটিল রোগে আক্রান্ত ও দুর্বল মানুষদের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। এই ধরনের মানুষের জন্য সংক্রমণটি ক্ষতির কারণ হতে পারে। চীন ক্সবিবি মোকাবিলায় দুটি ভ্যাকসিন অনুমোদন করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, শিগগিরই আরও তিন-চারটি অনুমোদন দেওয়া হবে। আরও কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরিতে আমরা অন্যান্য দেশের চেয়ে এগিয়ে চলেছি।
ঠিকানা/এম