ফাঁদ

প্রকাশ : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:২৬ , অনলাইন ভার্সন
ফাঁদে পড়িয়া বগা কান্দে রে। কেউ বিপদে পড়লে এই গান আমরা ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি। হয়তো আমাদের পূর্বপুরুষেরাও বিপদগ্রস্ত, দুর্ভোগে পড়া মানুষের অবস্থা প্রকাশে এ গান তারা শৈশব থেকে শুনে এসেছেন। 

বিপদ যেমন নানা দিক থেকে নানাভাবে এসে হানা দেয়, মানুষও তেমনি নানা রকম ফান্দে পড়ে তড়পায়। আমরা কিশোরবেলায় দেখেছি, ফাঁদ পেতে বক পাখি ধরতে। একধরনের যন্ত্রে কায়দা করে মাছ লাগিয়ে তা পেতে রাখা হতো। বক বোকার মতো মাছের লোভে উড়ে এসে বসলেই তাতে আটকে যেত। তখন শত চেষ্টা করেও আর রক্ষা পেত না। তাই তো গান রচনা হতো, ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে রে।

এখন সময় পাল্টেছে। এখন গ্রামে-গঞ্জে বগাদের ধরতে ফাঁদ পাতা হয় কি না জানি না। এখন নানা অঞ্চলে মানুষ ধরার ফাঁদ পাতা হয়। আর সেই সব ফাঁন্দে পড়ে মানুষ কান্দে। কপাল চাপড়ায়। সর্বস্ব খুইয়ে হায় হায় করে। তখন ওই বগার মতো ফান্দে পড়ে কাঁদতে থাকে। কিন্তু করার কিছু থাকে না ডানা ঝাপটানো ছাড়া। সর্বশেষ একধরনের মানুষ ধরার ফাঁদের সন্ধান পাওয়া গেছে। বিদেশে পাঠানোর লোভের ফাঁদ। এই ফাঁদে পড়ে বাংলাদেশের হাজার হাজার যুবক জমিজমা সব বিক্রি করে নিঃশেষ হয়ে পথে পথে ঘুরছে। মানুষ ধরার জন্য নানা ধরনের ফাঁদ, গ্রামে-শহরে ফাঁদ। ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে কনসালট্যান্সির ফাঁদ। সহজে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার ভিসাপ্রাপ্তির চটকদার বিজ্ঞাপনের ফাঁদ। শেষ পর্যন্ত কাজ মেলে না, পারমিট মেলে না। মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হয়। ভুল পথে চলার খেসারত দিয়ে যেতে হয় জীবনভর।

এ রকম মর্মবিদায়ী একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে ঠিকানার ২০ ডিসেম্বর তারিখে পত্রিকার শেষ পাতায়। শিরোনাম : বিদেশযাত্রার লোভনীয় ফাঁদ। সংবাদটির শুরু হয়েছে ঠিক এভাবে : ইদানীং পত্র-পত্রিকায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কিছু লোভনীয় বিজ্ঞাপন সবার নজর কেড়েছে। তা হলো আমেরিকা এবং কানাডায় খুব সহজে ভিসা পাওয়ার খবর। 

বিশ্বের উন্নত দুটি দেশের ভিসাপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা দিয়ে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা কিছু এজেন্সি হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। দেশ দুটিতে যাওয়ার জন্য মরিয়া তরুণ ও যুবসমাজ সহায়-সম্পদ বিক্রি করে প্রতারকদের কাছে তুলে দিচ্ছে ২০ থেকে ৪০ লাখ টাকা। পরপর যথারীতি প্রতারণার শিকার হচ্ছে। কারও ভাগে ভিসা জুটলেও মিলছে না প্রতিশ্রুতি মতো কাজ। অনেকে দেশেও ফিরে যেতে পারছে না অর্থের অভাবে এবং লজ্জায় অনেকে বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছে।

অনেকটা প্রকাশ্যেই চলছে এ ধরনের প্রতারণামূলক ব্যবসা। কিন্তু কোনো সংস্থাই হস্তক্ষেপ করে এই প্রতারকদের হাত থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষায় এগিয়ে আসছে না। অথচ ঘটনাগুলো অনেকটা প্রকাশ্যে চোখের সামনে ঘটে চলেছে। এসব অচিরেই বন্ধ না হলে সমাজে তার বিরূপ প্রভাব পড়তে বাধ্য। গভীরভাবে লক্ষ করলে দেখা যাবে, সেই বিরূপ প্রভাব ইতিমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে। সেটার শেকড় সমাজে আরও গভীরভাবে জেঁকে বসবে। সেটা আমাদের জন্য মোটেও কল্যাণকর হবে না।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041