বাংলাদেশের রাজনীতির বাজার জমিয়ে তুলেছিলেন চরমোনাই পীর রেজাউল করিম। হাতপাখায় ভোট দিলে তা আল্লাহ ও নবী করিম (স.)-কে ভোট দেয়া হবে। তা কিভাবে? নবীজি কি ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি বা আমীর ছিলেন? না, তা
ছিলেন না। তাহলে? সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মাওলানা রেজাউল করিম। তার জবাব- নৌকায় ভোট দিলে সেই ভোট পাবে আওয়ামী লীগ। লাঙলে দিলে পাবে জাতীয় পার্টি। আর হাতপাখায় ভোট দেয়া মানে ইসলামকে ভোট দেয়া। ইসলাম মানে আল্লাহ ও আল্লাহর নবী হজরত মুহাম্মদ (স.)। পীর চরমোনাইর এমন যুক্তি- ব্যাখ্যা বেশ জমেছিল ক’দিন। স্যোশাল মিডিয়া মাড়িয়ে তা মূলধারার গণমাধ্যমেও। কিন্তু, বাজারটা বরবাদ হয়ে গেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদেশ সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনের গরম বক্তব্য, বিদেশি কূটনীতিকদের সুযোগ-সুবিধা বাতিল বিষয়ক খবরে। তার ওপর তুরস্কের এরদোয়ান, পাকিস্তানে ইমরান খান ইস্যু বড় ফ্যাক্টর হয়ে গেল কিভাবে?
বাংলাদেশে তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে নিয়ে কেন এতো উত্তেজনা, উচ্ছ্বাস, আবেগ? কেউ কেউ এমনে করেন, এরদোয়ানের প্রতি বাংলাদেশের কিছু মানুষের এই ভালোবাসা নিঃস্বার্থ ও অকৃত্রিম। নিজের আত্মার প্রশান্তির জন্যই এই উচ্ছ্বাস তাদের। পাকিস্তানের ইমরান খানকে নিয়েই বা কেন এমন আকুতি?
পাকিস্তানের ইমরান খান বাংলাদেশেও একটা ক্রেজ। ক্রিকেট তারকা হিসেবেও। রাজনীতির তারকা হিসাবেও। পাকিস্তানের সেনাসহ বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থা পকেটবদ্ধ হলেও বিচার বিভাগ এখনো স্বাধীন- তা দেখা গেছে ইমরান খানের ঘটনায়। অথবা ইমরান খান তা দেখিয়ে দিতে পেরেছেন। এরদোয়ানের কী হয়েছে? তিনি কি খেলেন? খেলোয়াড় ছিলেন? তুরস্কের রাজনীতির ময়দানে তিনি খেলোয়াড়। সারাবিশ্বে পক্ষে-বিপক্ষে স্নায়ুযুদ্ধের মাঝেও তিনি একটি ঘটনা। কী আছে লোকটার মধ্যে? বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক মানুষের মাঝে ভিনদেশি এই নেতার প্রতি বিশেষ আকর্ষণের পেছনে কী কোনো দরবারি আয়োজন আছে?
দরবার-মাজার না থাকলেও মজার ব্যাপার হলো এ দেশের সরকার এবং বিরোধীপক্ষ উভয়ের সঙ্গেই এরদোয়ানের চমৎকার সম্পর্ক। চরমোনাই পীরের মতো হুজরতি কিছু থাক, না থাক; বাংলাদেশের মানুষেরও ধীরে-ধীরে আন্তর্জাতিক হয়ে ওঠার প্রমাণ মিলছে। আন্তর্জাতিক বলেই তো তারা এরদোয়ান-ইমরানদের খোঁজ রাখছে। ব্যাপারটা একবারে নতুনও নয়। বিশ শতকের বিশের দশকে কামাল আতাতুর্কের উত্থানে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম উচ্ছ্বাসের সঙ্গে লিখেছিলেন- ‘ওই ক্ষেপেছে পাগলা মায়ের দামাল ছেলে কামাল ভাই, কামাল তুনে কামাল কিয়া হ্যায়’। এখন সেই ক্ষেপাটে দামালেরা কোনদিকে, কোন কাজে ব্যস্ত? তুরস্কে এরদোয়ান, পাকিস্তানে ইমরান খানে খান খান হয়ে তারা আসল জিনিস ভুলে যাচ্ছে না তো?
লেখক : সাংবাদিক-কলামিস্ট; ডেপুটি হেড অব নিউজ, বাংলাভিশন, ঢাকা।
ছিলেন না। তাহলে? সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মাওলানা রেজাউল করিম। তার জবাব- নৌকায় ভোট দিলে সেই ভোট পাবে আওয়ামী লীগ। লাঙলে দিলে পাবে জাতীয় পার্টি। আর হাতপাখায় ভোট দেয়া মানে ইসলামকে ভোট দেয়া। ইসলাম মানে আল্লাহ ও আল্লাহর নবী হজরত মুহাম্মদ (স.)। পীর চরমোনাইর এমন যুক্তি- ব্যাখ্যা বেশ জমেছিল ক’দিন। স্যোশাল মিডিয়া মাড়িয়ে তা মূলধারার গণমাধ্যমেও। কিন্তু, বাজারটা বরবাদ হয়ে গেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদেশ সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনের গরম বক্তব্য, বিদেশি কূটনীতিকদের সুযোগ-সুবিধা বাতিল বিষয়ক খবরে। তার ওপর তুরস্কের এরদোয়ান, পাকিস্তানে ইমরান খান ইস্যু বড় ফ্যাক্টর হয়ে গেল কিভাবে?
বাংলাদেশে তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে নিয়ে কেন এতো উত্তেজনা, উচ্ছ্বাস, আবেগ? কেউ কেউ এমনে করেন, এরদোয়ানের প্রতি বাংলাদেশের কিছু মানুষের এই ভালোবাসা নিঃস্বার্থ ও অকৃত্রিম। নিজের আত্মার প্রশান্তির জন্যই এই উচ্ছ্বাস তাদের। পাকিস্তানের ইমরান খানকে নিয়েই বা কেন এমন আকুতি?
পাকিস্তানের ইমরান খান বাংলাদেশেও একটা ক্রেজ। ক্রিকেট তারকা হিসেবেও। রাজনীতির তারকা হিসাবেও। পাকিস্তানের সেনাসহ বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থা পকেটবদ্ধ হলেও বিচার বিভাগ এখনো স্বাধীন- তা দেখা গেছে ইমরান খানের ঘটনায়। অথবা ইমরান খান তা দেখিয়ে দিতে পেরেছেন। এরদোয়ানের কী হয়েছে? তিনি কি খেলেন? খেলোয়াড় ছিলেন? তুরস্কের রাজনীতির ময়দানে তিনি খেলোয়াড়। সারাবিশ্বে পক্ষে-বিপক্ষে স্নায়ুযুদ্ধের মাঝেও তিনি একটি ঘটনা। কী আছে লোকটার মধ্যে? বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক মানুষের মাঝে ভিনদেশি এই নেতার প্রতি বিশেষ আকর্ষণের পেছনে কী কোনো দরবারি আয়োজন আছে?
দরবার-মাজার না থাকলেও মজার ব্যাপার হলো এ দেশের সরকার এবং বিরোধীপক্ষ উভয়ের সঙ্গেই এরদোয়ানের চমৎকার সম্পর্ক। চরমোনাই পীরের মতো হুজরতি কিছু থাক, না থাক; বাংলাদেশের মানুষেরও ধীরে-ধীরে আন্তর্জাতিক হয়ে ওঠার প্রমাণ মিলছে। আন্তর্জাতিক বলেই তো তারা এরদোয়ান-ইমরানদের খোঁজ রাখছে। ব্যাপারটা একবারে নতুনও নয়। বিশ শতকের বিশের দশকে কামাল আতাতুর্কের উত্থানে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম উচ্ছ্বাসের সঙ্গে লিখেছিলেন- ‘ওই ক্ষেপেছে পাগলা মায়ের দামাল ছেলে কামাল ভাই, কামাল তুনে কামাল কিয়া হ্যায়’। এখন সেই ক্ষেপাটে দামালেরা কোনদিকে, কোন কাজে ব্যস্ত? তুরস্কে এরদোয়ান, পাকিস্তানে ইমরান খানে খান খান হয়ে তারা আসল জিনিস ভুলে যাচ্ছে না তো?
লেখক : সাংবাদিক-কলামিস্ট; ডেপুটি হেড অব নিউজ, বাংলাভিশন, ঢাকা।