ফেব্রুয়ারি ২০২৩-এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ব্যানার কিছু সময়ের জন্যে অনেকের চোখে পড়েছে এবং তা নিয়ে কিছুটা আলোচনাও হয়েছে। ব্যানারে লেখা ছিল ‘গুম হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ!’ ঘটনা হচ্ছে, বাংলা একাডেমি এবার বইমেলায় কিছু বই ও প্রকাশনা সংস্থাকে নিষিদ্ধ করে। অভিযোগ এঁরা সরকারের সমালোচক। এর প্রতিবাদে ভার্সিটি শিক্ষার্থীরা, বিশেষত: চারুকলার ছাত্রছাত্রীরা রবীন্দ্রনাথের একটি প্রতিবাদী ভাস্কর্য বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে অস্থায়ীভাবে স্থাপন করে। এতে কবিগুরুর মুখ ‘টেপ বন্ধ’ এবং তাঁর হাতের গীতাঞ্জলিটি একটি পেরেক দিয়ে ঠোকা ছিল। ভার্সিটি কর্তৃপক্ষ সেটি ভেঙে দ্রুত সরিয়ে নেয়। এরপর শিক্ষার্থীরা ঐ জায়গায় ব্যানারটি টাঙিয়ে দেয়!
কবিগুরুর ভাস্কর্যটি স্থাপিত হয় ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, তিনি গুম হন ১৬ ফেব্রুয়ারি। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঘটে যাওয়া এ ঘটনার তাৎপর্য যথেষ্ট। এটি ষাটের দশকে ‘রবীন্দ্র-বর্জন’ ডাক প্রতিহত করতে ব্যাপক সাংস্কৃতিক আন্দোলনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। পূর্ব-বাংলায় রবীন্দ্রনাথ তখনো সমাদৃত, পাকিস্তানি প্রশাসন পিছু হটে। তখন সবার মুখে মুখে ছিল গভর্নর মোনায়েম খানের একটি কথা, ‘তোমরা রবীন্দ্রসংগীত লিখতে পারোনা?’ খানসাহেব নাকি বরিশাল ব্রজমোহন কলেজে ছাত্রদের একথা বলেছিলেন। ষাটের দশকের ওই সময় স্কুলে আমাদের ক্লাশে বাংলা শিক্ষক কিছুতেই এক ছাত্রকে পাস নম্বর দেননি, কারণ ছাত্রটি ‘রবীন্দ্রনাথ’ বানান ভুল লিখেছিল! শিক্ষকের যুক্তি ছিল যে ছাত্র ‘কবিগুরু’র নাম শুদ্ধ করে লিখতে জানেনা, তাঁর পাস করার যোগ্যতা নেই!
সত্যি বলতে কি, যৌবনে রবীন্দ্রসংগীত আমাদেরও ‘পানসে’ মনে হতো, তখন তো ছিল শুধু ট্রাঞ্জিস্টার, আমরা নব ঘুরিয়ে আকাশবাণীর আধুনিক প্রেমের গান শুনতাম। তবে, ‘সখি ভালবাসা কারে কয়’ নিয়ে উৎসাহ ছিল বটে। আবার হৃদমাঝারে গাঁথা ছিল, ‘তুমি মহারাজ সাঁধু হলে আজ ...’ অথবা ‘কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিলো সে মরে নাই-’। রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে আমি অজ্ঞ, শুধু ভাবি এক জীবনে তিনি এত্তোসব লিখলেন কখন, যা পড়তেই আমাদের পুনর্জন্ম দরকার! বঙ্গভাণ্ডারে তিনি যে অমূল্য সম্পদ রেখে গেছেন, তা সম্ভবত: ‘হিউম্যানলি ইম্পসিবল’, তাই মনে হয় তিনি হয়তো মানুষের চেয়ে বড়কিছু ছিলেন, হয়তো ‘ঈশ্বরের বরপুত্র’! রবীন্দ্রনাথ নিয়ে কথা বলার সাহস বা ধৃষ্টতা আমার নেই? কবিগুরু এক জীবনে যা লিখেছেন তা পড়তে আমাদের পুনর্জন্ম লাগবে।
আমার মনে হয় রবীন্দ্রনাথের মতো একই শেক্সপিয়ার, শেলী, বায়রন, জন কীটস আরও অনেকে। বাংলা সাহিত্যে তাঁর হাতের ছোঁয়া লাগেনি, এমন একটি শাখা দেখি না।
-নিউইয়র্ক
কবিগুরুর ভাস্কর্যটি স্থাপিত হয় ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, তিনি গুম হন ১৬ ফেব্রুয়ারি। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঘটে যাওয়া এ ঘটনার তাৎপর্য যথেষ্ট। এটি ষাটের দশকে ‘রবীন্দ্র-বর্জন’ ডাক প্রতিহত করতে ব্যাপক সাংস্কৃতিক আন্দোলনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। পূর্ব-বাংলায় রবীন্দ্রনাথ তখনো সমাদৃত, পাকিস্তানি প্রশাসন পিছু হটে। তখন সবার মুখে মুখে ছিল গভর্নর মোনায়েম খানের একটি কথা, ‘তোমরা রবীন্দ্রসংগীত লিখতে পারোনা?’ খানসাহেব নাকি বরিশাল ব্রজমোহন কলেজে ছাত্রদের একথা বলেছিলেন। ষাটের দশকের ওই সময় স্কুলে আমাদের ক্লাশে বাংলা শিক্ষক কিছুতেই এক ছাত্রকে পাস নম্বর দেননি, কারণ ছাত্রটি ‘রবীন্দ্রনাথ’ বানান ভুল লিখেছিল! শিক্ষকের যুক্তি ছিল যে ছাত্র ‘কবিগুরু’র নাম শুদ্ধ করে লিখতে জানেনা, তাঁর পাস করার যোগ্যতা নেই!
সত্যি বলতে কি, যৌবনে রবীন্দ্রসংগীত আমাদেরও ‘পানসে’ মনে হতো, তখন তো ছিল শুধু ট্রাঞ্জিস্টার, আমরা নব ঘুরিয়ে আকাশবাণীর আধুনিক প্রেমের গান শুনতাম। তবে, ‘সখি ভালবাসা কারে কয়’ নিয়ে উৎসাহ ছিল বটে। আবার হৃদমাঝারে গাঁথা ছিল, ‘তুমি মহারাজ সাঁধু হলে আজ ...’ অথবা ‘কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিলো সে মরে নাই-’। রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে আমি অজ্ঞ, শুধু ভাবি এক জীবনে তিনি এত্তোসব লিখলেন কখন, যা পড়তেই আমাদের পুনর্জন্ম দরকার! বঙ্গভাণ্ডারে তিনি যে অমূল্য সম্পদ রেখে গেছেন, তা সম্ভবত: ‘হিউম্যানলি ইম্পসিবল’, তাই মনে হয় তিনি হয়তো মানুষের চেয়ে বড়কিছু ছিলেন, হয়তো ‘ঈশ্বরের বরপুত্র’! রবীন্দ্রনাথ নিয়ে কথা বলার সাহস বা ধৃষ্টতা আমার নেই? কবিগুরু এক জীবনে যা লিখেছেন তা পড়তে আমাদের পুনর্জন্ম লাগবে।
আমার মনে হয় রবীন্দ্রনাথের মতো একই শেক্সপিয়ার, শেলী, বায়রন, জন কীটস আরও অনেকে। বাংলা সাহিত্যে তাঁর হাতের ছোঁয়া লাগেনি, এমন একটি শাখা দেখি না।
-নিউইয়র্ক