সাহিত্য একাডেমির মাসিক আসর

প্রকাশ : ০৬-০৩-২০২৩ ০৩:৩১:৩৫ পিএম , অনলাইন ভার্সন

ঠিকানা রিপোর্ট : ‘সাহিত্য একাডেমি, নিউইয়র্ক’-এর মাসিক সাহিত্য আসর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের একটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। এবারের আসরটি দুটি পর্বে সাজানো ছিল।
প্রথম পর্বের শুরুতেই একুশে ফেব্রুয়ারির সকল শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে লেখক ও প্রাবন্ধিক এ বি এম সালেহ উদ্দিন এর সঞ্চালনায় বাঙালির চিরায়ত বিষয় অমর একুশের ওপর আলোকপাত করেন, লেখক ও সাংবাদিক মঞ্জুর আহমেদ, সাপ্তাহিক ঠিকানার প্রধান সম্পাদক ফজলুর রহমান ও কবি তমিজ উদদীন লোদী।
মঞ্জুর আহমেদ তার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনায় ১৯৫২ সম্পর্কে বলেন, আমি তখন চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। আন্দোলন বুঝি না। রাজনীতি বুঝি না। কিন্তু দেখতাম, মিছিল বের হচ্ছে। না বুঝেই মিছিলে শরীক হয়ে যাই। সেই থেকেই শেখার শুরু- ভাষা আন্দোলন কী, রাজনীতি কী, জনগণের অধিকার কী? বুঝতে পারি, ভাষা আন্দোলন এমন একটি আন্দোলন, যা বাঙালি সমাজকে একটি ধাক্কায় অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। সাহিত্য, সংস্কৃতি, সামাজিক মূল্যবোধ সর্বক্ষেত্রে এই আন্দোলনের একটা বিরাট অবদান রয়ে গেছে। তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে পৃথিবীজুড়ে যে প্রভাব পড়েছিল, তাকে কেন্দ্র করে মানবজাতির চিন্তা-চেতনা, শিল্প-সংস্কৃতি ও চলচ্চিত্রে যে অগ্রগতি; তা অস্বীকার করা যাবে না। আমাদের ভাষা আন্দোলনেরও এমন একটি অবদান আমাদের সমাজে বিদ্যমান। পরিশেষে তিনি তার লেখা কবিতা পড়ে শোনান।


নিউইয়র্ক : সাহিত্য একাডেমির আলোচনায় বক্তব্য রাখছেন আবেদীন কাদের ও মঞ্চে অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

মুহম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, পাঞ্জাব প্রভাবিত পাকিস্তানি শাসকবর্গের সেই রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে ১৯৫২ সালে ছাত্রসমাজ এবং সাধারণ মানুষ বুক পেতে দিয়েছিল পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সামনে। কোনো দাবিই আমরা বিনা রক্তপাতে বিনা আন্দোলনে অর্জন করতে পারিনি। একুশের শিক্ষা আমাদের সঙ্গে আছে। কোনো দুর্বৃত্তরাই আমাদের দমন করতে পারবে না।
কবি তমিজ উদদীন লোদী বলেন, বায়ান্নর বিষ্ফোরণ ঘটার সূত্রপাতটি হয়েছিল ৪৭-এর দেশ বিভাগের সাথে সাথে। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার জন্য প্রথম প্রস্তাব রেখেছিলেন। পরর্বতীতে জিন্নাহ এটিকে গ্রহণ করেন। পাকিস্তান হওয়ার সাথে সাথে মুদ্রায়, পোস্ট কার্ডে এবং রেলওয়ের টিকেটগুলোতে ইংরেজি ও উর্দু সন্নিবেশিত করা হয়েছিল। তৎকালীন পাবলিক সার্ভিস কমিশন ঘোষণা দিয়েছিল, এখন থেকে এটিই বহাল থাকবে। সূত্রপাতটা মূলত সেখান থেকেই। একুশে ফেব্রুয়ারি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এদেশে আমরা আছি, বুক ভরে যায়, যখন শুনি এখানকার অনেক কিছুতেই বাংলা ভাষাটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি ভাষাই সময়ের বিবর্তনে সমৃদ্ধ হচ্ছে। ইংরেজি ভাষার এতবেশি গ্রহণযোগ্যতা থাকার পরও ইংরেজিসহ বিভিন্ন ভাষার কিছু কিছু শব্দ তারা অকেজো করে দিচ্ছে এবং নতুন শব্দকে সেখানে প্রতিস্থাপন করছে। বাংলা ভাষাও তার বাইরে নয়। বুকের রক্ত ঢেলে পাওয়া এই ভাষাটিকে আমাদের লালন করে যেতে হবে।
আলোচনা, আবৃত্তি এবং স্বরচিত পাঠের জন্য দ্বিতীয় পর্বের পরিচালনায় ছিলেন একাডেমির পরিচালক মোশাররফ হোসেন।
এ পর্বে আবৃত্তি করেন, ভাষার মাসে আমন্ত্রিত নতুন প্রজন্মের কচিপ্রাণ আহনাফ ও আশফিয়া। এছাড়াও আবৃত্তি করেন পারভীন সুলতানা, নাসিমা আক্তার ও নাসরিন শাহানা।
স্বরচিত কবিতাপাঠে অংশগ্রহণ করেন, তাহমিনা খান, সুমন শামসুদ্দিন, মৃদুল আহমেদ, সুলতানা ফেরদৌসী, সৈয়দ মামুনুর রশীদ, মিয়া আছকির, সৈয়দ আহমেদ জুয়েদ এবং বেনজির শিকদার।
লেখক ও প্রাবন্ধিক আবেদীন কাদের বলেন, নিউইয়র্ক শহরে যেখানে বেঁচে থাকাটাই কঠিন সেখানে জীবন চালিয়ে সাহিত্য করা সহজ নয়; ভীষণ, ভীষণ কঠিন। লেখালেখির উন্নতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বেশ কিছু নারী লেখক খুব ভালো গল্প লিখছেন। আশা করি ঢাকা ও নিউইয়র্ক থেকে সামনের দিনগুলোতে বেশ ভালো কিছু হবে।
অধ্যাপক হুসনে আরা বলেন, আজ আমরা বিশ্ববাঙালি। প্রতি ১৪ দিনে একটি করে ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে। কাজেই আমাদের এখন করনীয় কী সেটাও মাথায় রাখতে হবে। ছোটো ছোটো ভাষা হারিয়ে যাক সেটা হতে দিতে পারি না। ভাষাই জীবন, ভাষাই গতি।
এছাড়াও আসরে বক্তব্য রাখেন নীরা কাদরী, মনিজা রহমান ও সাইদা উদিতা।
সমাপনী বক্তব্যে লেখক ফেরদৌস সাজেদীন বলেন, চলছে অমর একুশে বইমেলা। আমাদের মাথায়, শিরে আমরা ভাষার মুকুট পরে আছি। যে ভাষার শ্বাস আমাদের বাঁচার আশ তা নিয়ে সারা জীবন কথা বললেও শেষ হবার নয়।
আসরে আরও উপস্থিত ছিলেন কাজী আতীক, মিশুক সেলিম, রাহাত কাজী শিউলি, স্বপ্ন কুমার, লুৎফা শাহানা, নীলিমা বেগম, আমজাদ হোসেন, জাহেদ শরীফ, ভায়লা সেলিনা প্রমুখ।

M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041