বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স এসোসিয়েশন, এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান, সোনালী ব্যাংকের সিইও ও এমডি মোঃ আফজাল করিম বলেছেন, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসীদের সেবার সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর জন্য আমরা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। ইতোমধ্যে অনেক সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। আমরা আরো নতুন নতুন বিষয় সম্পৃক্ত করছি। নিউইয়র্কে সোনালী এক্সচেঞ্জের সাতটি, অন্যান্য স্টেটে আরো দুটি, মোট তিনটি স্টেটে আমাদের নটি আউটলেট আছে। সেই সব আউটলেটের মাধ্যমে আমরা এখন সপ্তাহের সাতদিনই এমনকি বন্ধের দিনেও সেবা দিচ্ছি। পাশাপাশি আমরা এখন সেবার পরিধি আরো বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সোনালী এক্সচেঞ্জের এজেন্সী দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি। এই এজেন্সী দিলে মানুষ আরো সহজেই সার্ভিস পাবে। কারণ তখন আর কাউকে দূর দূরান্তে গিয়ে সেবা নিতে হবে না। এজেন্সীতে গিয়েই সেবা নিতে পারবেন। এই কথাগুলো ১৬ মে তিনি ঠিকানার সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন।
ঠিকানাকে সাক্ষাতকার দিচ্ছেন সোনালী ব্যাংকের সিইও ও এমডি মোঃ আফজাল করিম
বর্তমানে তিনি আমেরিকাতে অবস্থান করছেন। ২০ মে তার এখান থেকে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে সফরকালে ১৬ মে বিকেলে ঠিকানার অফিসে আসেন এবং ঠিকানার সাথে এক সাক্ষাৎকার দেন। এই সময়ে আফজাল করিমের সাথে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী এনায়েত সর্দার এবং সোনালী এক্সচেঞ্জর কর্মকর্তা নুরুল হক।
ঠিকানা অফিসে সোনালী ব্যাংকের সিইও ও এমডি মোঃ আফজাল করিম। সঙ্গে অন্যান্য অতিথি ও ঠিকানা পরিবারের সদস্যরা।
আফজাল করিম বলেন, নিউইয়র্কে সোনালী এক্সেচেঞ্জ-এর কোম্পানী আছে। এখানে সাবসিডিয়ারী আছে ৭টি। প্রতি বছর আমাদের বোর্ড মিটিং হয়, বাৎসরিক মিটিং হয়। আমাদের ম্যানহাটানের অফিসে এসব মিটিং হয়। এবার ওই সব বৈঠকে যোগদান করার জন্য এসেছি। বৈঠকে সব কিছু পর্যালোচনা হয়। এজিএম ছিল। সেই এজিএমএ আমরা অংশ নিয়েছি। এছাড়া প্রবাসীরা যারা এখান থেকে দেশে রেমিটেন্স পাঠান আমরা তাদের সুযোগ সুবিধাগুলো আরো বাড়ানোর জন্য কি কি করা যায় সেই বিষয়ে আলোচনা করছি। সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমরা নতুন নতুন সেবার পাশাপাশি সেবার মান বাড়ানোর ও পরিধি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েই সফল করতে চাই।
আমরা প্রবাসীদের দেশে রেমিটেন্স পাঠানোর জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম করেছি। তারা এখন বাইরে না গিয়েও ঘরে বসে অর্থ পাঠাতে পারবেন। নতুন একটি অ্যাপস আমরা ডেভেলপমেন্ট করার চেষ্টা করছি। এখনও এর নামকরণ ঠিক হয়নি। এটি হলে সেবার মান আরো বাড়বে। সহজও হবে।
যেমন আমাদের একটি ওয়ালেট আছে সোনালী ইওয়ালেট। সোনালী ব্যাংকে যাদের হিসাব রয়েছে, তারা সোনালী ইওয়ালেটের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের অ্যাপের মাধ্যমে তারা সারাদিন, রাত যে কোন সময়ে টাকা পাঠাতে পারছেন। সোনালীর সেবা ঘরে বসেই নিতে পারছেন, কোন সমস্যা হচ্ছে না। কারো যদি ভেরিফিকেশনের দরকার হয়, তাহলে তিনি নিজেই সব তথ্য দিয়ে করতে পারছেন। ঘরে বসেই এটি করতে পারেন। তবে কারো কোন সহায়তা লাগলে সেই সেবাও দিয়ে থাকি।
আমাদের সোনালী ইসেবা রয়েছে। এই ইসেবার মাধ্যমে ঘরে বসেই একজন তার ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবেন। আমরা সরকারী বিভিন্ন ধরণের বিল ই সেবার মাধ্যমে নিয়ে থাকি। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পেমেন্টও নেয়া হয়। প্রায় ২৫ লাখ গ্রাহককে এই সেবা দিচ্ছি।
তিনি বলেন, এখন আরো সুবিধা রয়েছে। আগে যেমন বন্ড কিনতে হলে এনআইডি লাগতো। আর এখন ডলারে বন্ড কেনা হলে এনআইডি লাগে না। ডলারে বিদেশ থেকে বসে কিনলে এনআইডি লাগছে না। তারা কেবল পাসপোর্ট এর কপি দিলেই হচ্ছে। পাসপোর্ট দেখালে ও কপি দিলে বন্ড কিনতে পারবেন। যারা দেশে থেকে টাকা দিয়ে বন্ড কিনছেন তাদেরকে এনআইডি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। আগামী দিনে হয়তো এই সব সমস্যা অনেক কম আসে। প্রবাসীরা এনআইডি পেলে তখন আরো সুবিধা হবে।
তিনি বলেন, আমরা পেপারলেস ব্যাংক চালু করেছি। এখন কেউ ব্যাংকে চেক বই না নিয়ে গেলেও টাকা তুলতে পারবেন। নভেম্বর থেকে এটি করা হয়েছে। কেউ যদি চেকের পাতা না নেন, তাহলেও তিনি তার কার্ড ছাড়াও টাকা তুলতে পারবেন। ব্যাংকে গেলেই হবে। ব্যাংকে যাবেন। কিওয়ার্ড স্ক্যান করবেন। তখন বিভিন্ন তথ্য চাইবে। ওই তথ্য দিলে তখন সব তথ্য সাবমিট করতে হবে। সেখানে কত টাকা তুলতে চান তা বলতে হবে। সব কিছু দেয়ার পর কোড আসবে। সেটি বললে তখন তিনি টাকা নিতে পারবেন। এখন নিয়ম হচ্ছে যেই মোবাইল ফোন দিয়ে এটি করবেন সেই মোবাইল নম্বরটি রেজিস্টার্ড হতে হবে ব্যাংকের সাথে।
সোনালী এক্সচেঞ্জের আরো কয়েকটি আউটলেট করতে চাইছি। এরমধ্যে ফ্লোরিডা, টেক্সাস, মেরীল্যান্ড, বাফেলো পরিকল্পনায় রয়েছে। আউট যেমন করতে চাইছি, এর পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে এজেন্সী দেব। মানুষ তাদের সেবা নিতে পারবে। বলা প্রয়োজন যে, এখানে একটি আউটলেট করতে গেলে অফিস করার জন্য অনেক খরচ আছে। সেই খরচের পরিমাণ না বাড়িয়ে আমরা একটি করে এজেন্সী দিলে, একই ধরণের সেবা গ্রাহককে দিতে পারবো। তাতে দেখা যাবে যে, মানুষ দূর দূরান্তে না গিয়েও সেবা নিতে পারবেন।
সোনালীল এজেন্সী পাওয়ার যোগ্যতা কি হবে তা জানতে চাইলে আফজাল করিম বলেন, এখনও আমরা সব নীতিমালা ঠিক করিনি। নীতিমালা ঠিক করবো। আমরা চাইছি একটি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় নথিপত্র থাকতে হবে। যিনি নিবেন তার সোশ্যাল সিকিউরিটি এবং অফিস থাকতে হবে।
আমরা নতুন যে অ্যাপটি করতে চাইছি এটির এখনও নামকরণ করিনি। তবে এখানে বলে রাখি, এই অ্যাপসের মাধ্যমে একজন দেশে যদি কারো কাছে যখন তখন টাকা পাঠাতে পারবেন। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকে ডলার আছে, সেই হিসাব থেকে সরাসরি অর্থ পাঠাতে পারবেন। তিনি নতুন অ্যাপসটি ডাউনলোড করে বেসিক ইনফরমেশন দিবেন। কার্ড আছে। কত টাকা দিবেন তা ঠিক করবেন। আর তা দিয়ে সাবমিট করবেন। এরপর চলে যাবে। বাংলাদেশে তিনি বিভিন্ন ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবে যেমন পাঠাতে পারবেন। এর পাশাপাশি তিনি বিকাশ, নগদসহ এই ধরণের প্রতিষ্ঠান এমএফএস এর মাধ্যমে টাকা দিতে পারবেন।
সোনালী ব্যাংকের এখন অপারেটিং প্রফিট ২৫০০ কোটি টাকা। ক্লাসিফাইড লোন বাড়ছিল ২০২১ সালে রেট ছিল ১৮.৫৪ , এখন তা কমিয়ে ১৪.৩২ এ দাঁিড়য়েছে।
এডি রেসিও ২০১৯ সালে ছিল ৮৭ ভাগ, এখন তা কমিয়ে ৬০ এ আছে। আমরা ক্রেডিট ব্যালেন্সও বাড়িয়েছি। এনআইএম- নেট ইন্টারেস্ট মার্জিন আগে ছিল মাইনাস ৯৭৯। এখন তা কমিয়ে গত বছর করেছি প্লাস ৩৩২। ফলে সব দিক থেকেই আমাদের সোনালী ব্যাংক ভাল করছে। আমি আসার পর অনেক কিছুতেই সফলতা এনেছি। আরো আসবে।
তিনি বলেন, গত বছর আমরা সোনালী এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১১৬ মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স দেশে পেয়েছি। ২০২৩ সালে ১৫৫ মিলিয়ন ডলার টার্গেট ধরে রেখেছি। আশা করছি টার্গেট পূরণ করতে পারবো।
আফজাল করিম বলেন, বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স এসোসিয়েশন, এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ-এ আমরা ডলারের একই রেট সব ব্যাংকের জন্য ঠিক করছি। মূলত আমরা বাজার রিভিউ করে এরপর ডলারের দাম নির্ধারণ করি। আমরা সব ব্যাংকের এমডিরা বসি। বসে আলোচনা করে করি। সেখানে পুরো পরিস্থিতি আলোচনা হয়। এই আলোচনার প্রেক্ষিতে দেশের ডলারের চাহিদা ও সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করেই দাম নির্ধারণ করা হয়।
তিনি বলেন, আসলে এর আগে দেখা যেত এক একটি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক এক এক রকম রেট দিতো। এই ভিন্ন ভিন্ন রেট দেওয়ার কারণে মানুষের মধ্যে এক ধরণের প্রতিযোগিতা ছিল। সবাই বেশি টাকা পাওয়ার জন্য তাদের কাছে যাচ্ছিল। যারা বেশি টাকা দিতো সেখানেই যেতো। আমরা সেটি বন্ধ করতে চেয়েছি। এই বন্ধ করার জন্য আমরা এমনভাবে দাম ঠিক করেছি যাতে তারা লাভবান হন, দেশেরও লাভ হয়। আগে দেশে এক ডলারে ১০৭ টাকা রেট ঠিক করা হয়েছিল এখন সেটি করা হয়েছে ১০৮ টাকা। এই রেটেই সবাই পাঠাবেন। সেই সাথে আছে প্রণোদনা। আগে দেশে রেমিটেন্স পাঠানোর জন্য ফি নিতাম, এখন আমরা ফি নেই না। ফলে ফি এর অর্থটাও আমরা নিচ্ছি না। আগে দুই ডলার থেকে ৮ ডলার পর্যন্ত ফি নেয়া হতো। এখন দেশে এক ডলারে প্রণোদনাসহ ১১০.৭০ ডলার দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, বেশি দামে দেশে ডলার পাঠানো হলে টাকার অবমূল্যায়ন হয়। এই অবমূল্যায়ন রোধ করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগে একজন এক ডলারে পেতো ৮০ ডলার। এখন তারা পাচ্ছে ১১০ । এটা দেশের জন্য তত ভাল না হলেও প্রবাসীরা অনেক সুবিধা পাচ্ছে।
মোঃ আফজাল করিম সোনালী ব্যাংকের সিইও এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর হওয়ার আগে বাংলাদেশ হাউজবিল্ডিং ফাইন্স্যান্স কর্পোরেশনের এমডি ছিলেন। এর আগে তিনি সোনালী ব্যাংকের ডিএমডি ছিলেন। তিনি ব্যাংিক সেক্টরে কাজ করছেন অনেক বছর। তিনি মূলত ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পাস করার পর, তিনি ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল মানেজমেন্টর উপর পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিগ্রি করেন। এরপর তিনি এমবিএ করেন। তিনি ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে কাজ করছেন। তিনি ব্যাংকিং সেক্টর ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিশেষ কাজের জন্য এবং তার ক্লিন, সফল, দক্ষ ইমেজের জন্য, পেশাগত দক্ষতার জন্য শুদ্ধাচার অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। তিনিই প্রথম যিনি গত ১৫ বছরের মধ্যে প্রথম এই পুরস্কার লাভ করেন। তিনি বলেন, এটি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন।
আফজাল করিম জানান, তারা ৫ ভাই, দুই বোন। তার স্ত্রী মিসেস মেহেলা আহমেদ এবং তাদের একমাত্র কন্যা সন্তান রয়েছে। কন্যার নাম সাদিয়া। তিনি এমবিএতে লেখাপড়া করছেন।
ঠিকানাকে সাক্ষাতকার দিচ্ছেন সোনালী ব্যাংকের সিইও ও এমডি মোঃ আফজাল করিম
বর্তমানে তিনি আমেরিকাতে অবস্থান করছেন। ২০ মে তার এখান থেকে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে সফরকালে ১৬ মে বিকেলে ঠিকানার অফিসে আসেন এবং ঠিকানার সাথে এক সাক্ষাৎকার দেন। এই সময়ে আফজাল করিমের সাথে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী এনায়েত সর্দার এবং সোনালী এক্সচেঞ্জর কর্মকর্তা নুরুল হক।
ঠিকানা অফিসে সোনালী ব্যাংকের সিইও ও এমডি মোঃ আফজাল করিম। সঙ্গে অন্যান্য অতিথি ও ঠিকানা পরিবারের সদস্যরা।
আফজাল করিম বলেন, নিউইয়র্কে সোনালী এক্সেচেঞ্জ-এর কোম্পানী আছে। এখানে সাবসিডিয়ারী আছে ৭টি। প্রতি বছর আমাদের বোর্ড মিটিং হয়, বাৎসরিক মিটিং হয়। আমাদের ম্যানহাটানের অফিসে এসব মিটিং হয়। এবার ওই সব বৈঠকে যোগদান করার জন্য এসেছি। বৈঠকে সব কিছু পর্যালোচনা হয়। এজিএম ছিল। সেই এজিএমএ আমরা অংশ নিয়েছি। এছাড়া প্রবাসীরা যারা এখান থেকে দেশে রেমিটেন্স পাঠান আমরা তাদের সুযোগ সুবিধাগুলো আরো বাড়ানোর জন্য কি কি করা যায় সেই বিষয়ে আলোচনা করছি। সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমরা নতুন নতুন সেবার পাশাপাশি সেবার মান বাড়ানোর ও পরিধি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েই সফল করতে চাই।
আমরা প্রবাসীদের দেশে রেমিটেন্স পাঠানোর জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম করেছি। তারা এখন বাইরে না গিয়েও ঘরে বসে অর্থ পাঠাতে পারবেন। নতুন একটি অ্যাপস আমরা ডেভেলপমেন্ট করার চেষ্টা করছি। এখনও এর নামকরণ ঠিক হয়নি। এটি হলে সেবার মান আরো বাড়বে। সহজও হবে।
যেমন আমাদের একটি ওয়ালেট আছে সোনালী ইওয়ালেট। সোনালী ব্যাংকে যাদের হিসাব রয়েছে, তারা সোনালী ইওয়ালেটের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের অ্যাপের মাধ্যমে তারা সারাদিন, রাত যে কোন সময়ে টাকা পাঠাতে পারছেন। সোনালীর সেবা ঘরে বসেই নিতে পারছেন, কোন সমস্যা হচ্ছে না। কারো যদি ভেরিফিকেশনের দরকার হয়, তাহলে তিনি নিজেই সব তথ্য দিয়ে করতে পারছেন। ঘরে বসেই এটি করতে পারেন। তবে কারো কোন সহায়তা লাগলে সেই সেবাও দিয়ে থাকি।
আমাদের সোনালী ইসেবা রয়েছে। এই ইসেবার মাধ্যমে ঘরে বসেই একজন তার ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবেন। আমরা সরকারী বিভিন্ন ধরণের বিল ই সেবার মাধ্যমে নিয়ে থাকি। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পেমেন্টও নেয়া হয়। প্রায় ২৫ লাখ গ্রাহককে এই সেবা দিচ্ছি।
তিনি বলেন, এখন আরো সুবিধা রয়েছে। আগে যেমন বন্ড কিনতে হলে এনআইডি লাগতো। আর এখন ডলারে বন্ড কেনা হলে এনআইডি লাগে না। ডলারে বিদেশ থেকে বসে কিনলে এনআইডি লাগছে না। তারা কেবল পাসপোর্ট এর কপি দিলেই হচ্ছে। পাসপোর্ট দেখালে ও কপি দিলে বন্ড কিনতে পারবেন। যারা দেশে থেকে টাকা দিয়ে বন্ড কিনছেন তাদেরকে এনআইডি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। আগামী দিনে হয়তো এই সব সমস্যা অনেক কম আসে। প্রবাসীরা এনআইডি পেলে তখন আরো সুবিধা হবে।
তিনি বলেন, আমরা পেপারলেস ব্যাংক চালু করেছি। এখন কেউ ব্যাংকে চেক বই না নিয়ে গেলেও টাকা তুলতে পারবেন। নভেম্বর থেকে এটি করা হয়েছে। কেউ যদি চেকের পাতা না নেন, তাহলেও তিনি তার কার্ড ছাড়াও টাকা তুলতে পারবেন। ব্যাংকে গেলেই হবে। ব্যাংকে যাবেন। কিওয়ার্ড স্ক্যান করবেন। তখন বিভিন্ন তথ্য চাইবে। ওই তথ্য দিলে তখন সব তথ্য সাবমিট করতে হবে। সেখানে কত টাকা তুলতে চান তা বলতে হবে। সব কিছু দেয়ার পর কোড আসবে। সেটি বললে তখন তিনি টাকা নিতে পারবেন। এখন নিয়ম হচ্ছে যেই মোবাইল ফোন দিয়ে এটি করবেন সেই মোবাইল নম্বরটি রেজিস্টার্ড হতে হবে ব্যাংকের সাথে।
সোনালী এক্সচেঞ্জের আরো কয়েকটি আউটলেট করতে চাইছি। এরমধ্যে ফ্লোরিডা, টেক্সাস, মেরীল্যান্ড, বাফেলো পরিকল্পনায় রয়েছে। আউট যেমন করতে চাইছি, এর পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে এজেন্সী দেব। মানুষ তাদের সেবা নিতে পারবে। বলা প্রয়োজন যে, এখানে একটি আউটলেট করতে গেলে অফিস করার জন্য অনেক খরচ আছে। সেই খরচের পরিমাণ না বাড়িয়ে আমরা একটি করে এজেন্সী দিলে, একই ধরণের সেবা গ্রাহককে দিতে পারবো। তাতে দেখা যাবে যে, মানুষ দূর দূরান্তে না গিয়েও সেবা নিতে পারবেন।
সোনালীল এজেন্সী পাওয়ার যোগ্যতা কি হবে তা জানতে চাইলে আফজাল করিম বলেন, এখনও আমরা সব নীতিমালা ঠিক করিনি। নীতিমালা ঠিক করবো। আমরা চাইছি একটি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় নথিপত্র থাকতে হবে। যিনি নিবেন তার সোশ্যাল সিকিউরিটি এবং অফিস থাকতে হবে।
আমরা নতুন যে অ্যাপটি করতে চাইছি এটির এখনও নামকরণ করিনি। তবে এখানে বলে রাখি, এই অ্যাপসের মাধ্যমে একজন দেশে যদি কারো কাছে যখন তখন টাকা পাঠাতে পারবেন। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকে ডলার আছে, সেই হিসাব থেকে সরাসরি অর্থ পাঠাতে পারবেন। তিনি নতুন অ্যাপসটি ডাউনলোড করে বেসিক ইনফরমেশন দিবেন। কার্ড আছে। কত টাকা দিবেন তা ঠিক করবেন। আর তা দিয়ে সাবমিট করবেন। এরপর চলে যাবে। বাংলাদেশে তিনি বিভিন্ন ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবে যেমন পাঠাতে পারবেন। এর পাশাপাশি তিনি বিকাশ, নগদসহ এই ধরণের প্রতিষ্ঠান এমএফএস এর মাধ্যমে টাকা দিতে পারবেন।
সোনালী ব্যাংকের এখন অপারেটিং প্রফিট ২৫০০ কোটি টাকা। ক্লাসিফাইড লোন বাড়ছিল ২০২১ সালে রেট ছিল ১৮.৫৪ , এখন তা কমিয়ে ১৪.৩২ এ দাঁিড়য়েছে।
এডি রেসিও ২০১৯ সালে ছিল ৮৭ ভাগ, এখন তা কমিয়ে ৬০ এ আছে। আমরা ক্রেডিট ব্যালেন্সও বাড়িয়েছি। এনআইএম- নেট ইন্টারেস্ট মার্জিন আগে ছিল মাইনাস ৯৭৯। এখন তা কমিয়ে গত বছর করেছি প্লাস ৩৩২। ফলে সব দিক থেকেই আমাদের সোনালী ব্যাংক ভাল করছে। আমি আসার পর অনেক কিছুতেই সফলতা এনেছি। আরো আসবে।
তিনি বলেন, গত বছর আমরা সোনালী এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১১৬ মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স দেশে পেয়েছি। ২০২৩ সালে ১৫৫ মিলিয়ন ডলার টার্গেট ধরে রেখেছি। আশা করছি টার্গেট পূরণ করতে পারবো।
আফজাল করিম বলেন, বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স এসোসিয়েশন, এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ-এ আমরা ডলারের একই রেট সব ব্যাংকের জন্য ঠিক করছি। মূলত আমরা বাজার রিভিউ করে এরপর ডলারের দাম নির্ধারণ করি। আমরা সব ব্যাংকের এমডিরা বসি। বসে আলোচনা করে করি। সেখানে পুরো পরিস্থিতি আলোচনা হয়। এই আলোচনার প্রেক্ষিতে দেশের ডলারের চাহিদা ও সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করেই দাম নির্ধারণ করা হয়।
তিনি বলেন, আসলে এর আগে দেখা যেত এক একটি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক এক এক রকম রেট দিতো। এই ভিন্ন ভিন্ন রেট দেওয়ার কারণে মানুষের মধ্যে এক ধরণের প্রতিযোগিতা ছিল। সবাই বেশি টাকা পাওয়ার জন্য তাদের কাছে যাচ্ছিল। যারা বেশি টাকা দিতো সেখানেই যেতো। আমরা সেটি বন্ধ করতে চেয়েছি। এই বন্ধ করার জন্য আমরা এমনভাবে দাম ঠিক করেছি যাতে তারা লাভবান হন, দেশেরও লাভ হয়। আগে দেশে এক ডলারে ১০৭ টাকা রেট ঠিক করা হয়েছিল এখন সেটি করা হয়েছে ১০৮ টাকা। এই রেটেই সবাই পাঠাবেন। সেই সাথে আছে প্রণোদনা। আগে দেশে রেমিটেন্স পাঠানোর জন্য ফি নিতাম, এখন আমরা ফি নেই না। ফলে ফি এর অর্থটাও আমরা নিচ্ছি না। আগে দুই ডলার থেকে ৮ ডলার পর্যন্ত ফি নেয়া হতো। এখন দেশে এক ডলারে প্রণোদনাসহ ১১০.৭০ ডলার দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, বেশি দামে দেশে ডলার পাঠানো হলে টাকার অবমূল্যায়ন হয়। এই অবমূল্যায়ন রোধ করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগে একজন এক ডলারে পেতো ৮০ ডলার। এখন তারা পাচ্ছে ১১০ । এটা দেশের জন্য তত ভাল না হলেও প্রবাসীরা অনেক সুবিধা পাচ্ছে।
মোঃ আফজাল করিম সোনালী ব্যাংকের সিইও এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর হওয়ার আগে বাংলাদেশ হাউজবিল্ডিং ফাইন্স্যান্স কর্পোরেশনের এমডি ছিলেন। এর আগে তিনি সোনালী ব্যাংকের ডিএমডি ছিলেন। তিনি ব্যাংিক সেক্টরে কাজ করছেন অনেক বছর। তিনি মূলত ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পাস করার পর, তিনি ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল মানেজমেন্টর উপর পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিগ্রি করেন। এরপর তিনি এমবিএ করেন। তিনি ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে কাজ করছেন। তিনি ব্যাংকিং সেক্টর ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিশেষ কাজের জন্য এবং তার ক্লিন, সফল, দক্ষ ইমেজের জন্য, পেশাগত দক্ষতার জন্য শুদ্ধাচার অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। তিনিই প্রথম যিনি গত ১৫ বছরের মধ্যে প্রথম এই পুরস্কার লাভ করেন। তিনি বলেন, এটি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন।
আফজাল করিম জানান, তারা ৫ ভাই, দুই বোন। তার স্ত্রী মিসেস মেহেলা আহমেদ এবং তাদের একমাত্র কন্যা সন্তান রয়েছে। কন্যার নাম সাদিয়া। তিনি এমবিএতে লেখাপড়া করছেন।