বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠে অশুভ গুঞ্জনের কালো মেঘ

প্রকাশ : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩:২৯ , অনলাইন ভার্সন
বাংলাদেশের রাজনীতিকে সরল পথে চলতে দেখা যায় কমই। সব সময় একটা সংঘাত-সংঘর্ষ লেগেই থাকে। রাজনীতির ময়দান থেকে উত্তাপ কখনও দূর হয় না। রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা এর পেছনে যে কারণ আবিষ্কার করেন, তা এই যে- বাংলাদেশের রাজনীতিতে সহমর্মিতা, সমঝোতা, সংলাপ এসব নেই। শুধু অসহিষ্ণুতা, একজন আরেকজনের বিনাশ কামনা। সরকারী দল নির্বাচনে বিজয়ী হলেই ভাবতে শুরু করে দেয় যে সবকিছু তাদের, Winner takes all- এটাই প্রথম এবং শেষ কথা। 

পরাজিতদের জন্য কিছু নেই। ‘আমি জয়ী তো সব আমার। নাগরিক সমাজ ভোট দিয়ে আমাকে যথেচ্ছাচার করার লাইসেন্স দিয়ে দিয়েছেন। সেই ক্ষমতা নিয়ে আমি বিরোধীদের বিনাশ চাই। তাদের কোন দাবি জানানোর অধিকার নেই। বিরোধীরা যা বলছে, তা কিছুতেই শোনা যাবে না।’ তাই তো অনিবার্য সংঘাত, সহিংসতা। বিরোধী দল ডান বললে, সরকারী দল বাম দিকে চলে। বিরোধী দল সামনে বললে, সরকারী দল চলে পশ্চাতে।

নির্বাচন এলে এই শাপে-নেউলে সম্পর্ক আরও তীব্র হতে দেখা যায়। আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে। নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিরোধী দল প্রশ্ন তোলেÑ অবাধ হয়নি। সুক্ষ্ম কারচুপি বা স্থুল কারচুপি হয়েছে। মেনে নেয়া যায় না। সুতরাং আন্দোলনের ডাক। হরতাল, অবরোধ। বিজয়ী দলের বক্তব্য : পরাজিতরা এমনটাই বলে থাকে। তারা জনগণের রায় না মেনে দেশের মধ্যে একটা অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। এই সুযোগে বিদেশিরা আমাদের নির্বাচন নিয়ে নাক গলাতে শুরু করে। আমাদের দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, মর্যাদা এসবের কোন মূল্য দিতে চায় না। সুতরাং দুর্ভাবনার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হতে থাকে। সংকুচিত হওয়ার কোন পথ খোলা থাকে না।

দেশে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তাদের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৭ জানুয়ারি ২০২৪ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের দিন। এর মাঝে মনোনয়নপত্র বাছাই, মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার। এর মধ্যেই নানা অশুভ গুঞ্জন শুরু হয়ে গেছে। বিএনপিসহ কয়েকটি সমমনা দলের হরতাল, অবরোধ, আগুন, ভাঙচুর উচ্চমাত্রায় না হলেও, কমবেশি হচ্ছে। যানবাহন, মানুষ প্রয়োজনে রাস্তা-ঘাটে বের হতে বাধ্য হচ্ছে। দোকানপাটও খুলছে। এর মধ্যে বিএনপির ধর্মঘট, হরতালের পাশাপাশি হুমকি-ধামকিও চলছে।

এসব নিয়েই সংবাদপত্র সংবাদ প্রকাশ করেছে। অশুভ গুঞ্জন নিয়ে। রাজনীতিপাড়ায় এখন নাকি অশুভ সব গুঞ্জনের ছড়াছড়ি। ঠিকানা’র গত ২৯ নভেম্বর সংখ্যার প্রথম পাতায় ৩ কলামের লাল কালির শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে- ‘রাজনীতিপাড়ায় নানা অশুভ গুঞ্জন’। বিশেষ প্রতিনিধির পাঠানো সংবাদে বলা হয়েছে যে, ‘রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে ছাড়াই আগামী নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা জোরালো হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত কোন সমঝোতার চেষ্টা দৃশ্যমান হয়নি। নির্বাচনে অংশ নেয়া, না নেয়ার প্রশ্নে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো বিভক্ত। আওয়ামী লীগ ও তার মিত্ররা নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।’

রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার চাচ্ছে বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে। তারা নির্বাচনে এলে নির্বাচন কয়েকদিন পিছিয়েও দেয়া হতে পারে। পর্দার আড়ালে এ নিয়ে আলোচনাও হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার মনে করছেন, বিএনপি নির্বাচনে না এলে দেশের রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্থতো হবেই, অর্থনীতিরাও খুব বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। রাজনৈতিক বোদ্ধা গোষ্ঠী মনে করছেন, দেশে বর্তমানে ৩টি সংকট রয়েছে। একটি রাজনৈতিক, দুই. অর্থনৈতিক এবং তিন. বৈদেশিক সম্পর্কজনিত সংকট। এ সংকটগুলো ক্রমাগত ঘণীভূত হচ্ছে। নির্বাচন একতরফা হলে আমেরিকা কী পদক্ষেপ নেবে- তাও বলা যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে বিএনপি নির্বাচনে না এলে প্রকৃত অর্থেই দেশের সংকট ঘণীভূত হবে।

দেশের ১৭ কেটি মানুষ চায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অশুভ কোন কিছু ঘটে না যাক। তারা চান, যারা রাজনীতি করছেন, তারা দেশকে সব অশুভ কর্ম থেকে রক্ষা করবেন। কেননা, দেশের স্বার্থ দেখাই উচিৎ হবে তাদের প্রথম কাজ। সাধারণ মানুষ মনে করেন, তারা দেশের সেই স্বার্থকেই বড় করে দেখবে এবং দেশকে সংকটমুক্ত করতে সবাই ভূমিকা রাখবে।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041