যেসব বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় সরকার

৭ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন  টাকার নির্বাচনী বাজেট

প্রকাশ : ০৪-০৫-২০২৩ ০৭:৩৬:৪৫ এএম , অনলাইন ভার্সন
নিজস্ব প্রতিনিধি : চলতি অর্থবছরে লক্ষ কোটি টাকারও বেশি ঘাটতি থাকার পরও অর্থ মন্ত্রণালয় ৭ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার (৭ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ডলার) জাতীয় বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছেন। স্বাধীনতার পর অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ জাতীয় বাজেট ঘোষণা করেছিলেন। মাত্র কয়েক হাজার কোটি টাকার বাজেট যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনে বিশাল ভূমিকা রেখেছিল। স্বাধীনতার পর কোনো সময়েই    
আগামী অর্থবছরের মতো বিশাল অঙ্কের বাজেট প্রণয়ন করা হয়নি। লক্ষ কোটি টাকার, হাজার হাজার কোটি কোটি টাকারও নয়, এখন বাজেট প্রণয়ন করা হচ্ছে ট্রিলিয়ন ডলারের হিসাবে।
নির্বাচন সামনে রেখে উন্নয়নের গতি ঊর্ধ্বমুখী রাখার লক্ষ্যে বিশাল অঙ্কের বাজেট প্রণয়ন করা হলেও তা কতটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে, দরিদ্র, অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর, সাধারণ মানুষের ভাগ্যের কতটা পরিবর্তন সাধিত হবে, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। আইএমএফের শর্তানুযায়ী কর সংগ্রহের পরিমাণ ১৬ দশমিক ২০ শতাংশ হারে বাড়িয়ে ৪ দশমিক ৩৩ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে হবে। তার পরও বাজেট ঘাটতি থেকে যাবে ২ দশমিক ৬০ ট্রিলিয়ন ডলার। এই ঘাটতি মোকাবিলায় ৯৪০ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণের প্রয়োজন হবে। ১১০ বিলিয়ন ডলার অনুদান পাওয়ার আশা করা হচ্ছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রাক্কলন করা হলেও তা ৬ শতাংশে ধরে রাখা যাবে কি না তা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সংশয় রয়েছে।
আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত ৭ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজেট চলতি অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ৮১৮ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার বেশি। উচ্চাভিলাষী এই বাজেট পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহের ওপর সবিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে চলতি অর্থবছরের চেয়ে ১৫ শতাংশ বেশি, যা অসম্ভব বলে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন। অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ চলতি অর্থবছরের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশ পিছিয়ে আছে। আগামী অর্থবছরে তারা ট্যাক্স হার ও ট্যাক্সের আওতা বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে আসন্ন অর্থবছরে অতিরিক্ত ৪৫০ বিলিয়ন ডলারের রাজস্ব সংগ্রহ করতে হবে। অর্থাৎ বিভিন্ন খাতে দেশের মানুষের ওপর এই অতিরিক্ত ট্যাক্সের বোঝা চাপবে। জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত, সীমিত আয়ের মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। নতুন বছরে ট্যাক্সের বোঝা বাড়ানোর মাধ্যমে দ্রব্যমূল্যের ওপর নতুন করে আঘাত আসবে। ট্যাক্স বাড়ানো ও ট্যাক্সের খাত বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে আইএমএফ। তাদের শর্তানুযায়ীই এ পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে।
নির্বাচনের বছরে সরকার বিশাল অঙ্কের বাজেট ঘোষণার মাধ্যমে উন্নয়নের ডামাঢোল বাজিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রভাবিত করতে চায়। উন্নয়নের অগ্রযাত্রা বজায় রাখা দৃশ্যত সম্ভব হলেও মুদ্রাস্ফীতি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির চাপ সামাল দেওয়া সম্ভব হবে কি না, সে প্রশ্ন রয়েছে। তবে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ভর্তুকি, সামাজিক খাতে উপকারভোগীর সংখ্যা ও অর্থের পরিমাণ বাড়ানোর মাধ্যমে সরকার ভোটার সাধারণকে প্রভাবিত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।
সূত্র জানায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার হতে পারে ৭ লাখ কোটি টাকার বেশি। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা, যা সংশোধন করে হতে পারে ৬ লাখ ৫৪ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) হতে পারে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হতে পারে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। রাজস্ব ব্যয়ের মধ্যে সুদ ব্যয় থাকবে ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য রাখা হতে পারে ৬ শতাংশ।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, নতুন অর্থবছরে দেশের বাজেটে ভর্তুকির পরিমাণ বাড়বে। সরকার চাইলেও আগামী বাজেটে ভর্তুকি খুব বেশি কমাতে পারবে না। কারণ চাপে থাকা অর্থনীতিতে গতিসঞ্চার করতে হবে। সে ক্ষেত্রে কয়েকটি খাতে চাইলেও ভর্তুকি কমানো যাবে না। নির্বাচনের বছর হিসেবেও এ বিষয়ে সরকারকে চতুর দৃষ্টি রাখতে হবে।
বাজেট-সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, প্রতিবছরই সরকারের স্থির করা লক্ষ্যে রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। এর ওপর রয়েছে বাড়তি মূল্যস্ফীতি, ডলার সংকটসহ নানা চাপ। এর মধ্যেও সরকারকে নতুন বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। আবার আইএমএফের শর্ত মেনে রাজস্ব ও আর্থিক খাতের সংস্কারও করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমরা চেষ্টা করছি। তবে যত চ্যালেঞ্জই হোক না কেন, সরকারের বাজেট হবে জনবান্ধব। এ নিয়ে কোনো সংশয় থাকা উচিত নয়। শেখ হাসিনার সরকার মানবদরদি সরকার বলেও জানান তিনি।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041