যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কে টানাপড়েন বাংলাদেশেও প্রভাব ফেলতে পারে

প্রকাশ : ০৪-০৫-২০২৩ ০৭:২৭:৪৮ এএম , অনলাইন ভার্সন
নিজস্ব প্রতিনিধি : যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের সম্পর্কে কিছুটা টানাপোড়েন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অনেক দেশকে ভাবিয়ে তুলেছে। রাশিয়ার প্রতি ভারতের অধিক মাত্রায় নির্ভরতা, চীনের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি 
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সম্পর্কে প্রভাব বিস্তার করছে। এ অবস্থাটা বাংলাদেশের জন্য কতটা বৈরী প্রভাব সৃষ্টিকারী হতে পারে, তা নিয়ে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল দুর্ভাবনামুক্ত হতে পারছে না।
জানা যায়, ভারত বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত মিত্র। দুই দেশের মধ্যে উন্নত সম্পর্ক বিরাজ করছে। মহাশক্তিধর রাষ্ট্র চীনের সঙ্গেও বাংলাদেশের চমৎকার সম্পর্ক বিরাজমান। রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক মিত্রতার সম্পর্ক। ইউক্রেন থেকে গম, ভুট্টা আমদানিতে রাশিয়া বাধা হয়নি। বাংলাদেশে খাদ্যশস্য রফতানির সুযোগ দিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়া থেকেও তিন লাখ মেট্রিক টন গম আমদানি করেছে বাংলাদেশ। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টের মালামাল সরবরাহ করছে রাশিয়া। এর আগে অবশ্য নিষিদ্ধঘোষিত রাশিয়ার জাহাজ বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়নি বাংলাদেশ। বাংলাদেশের নেতৃত্বের এই ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতি এবং কোনো দেশের বৈরী না হয়ে নিজ দেশের স্বার্থ রক্ষাকারী কর্মকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, রাশিয়াও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। বাংলাদেশের নেতৃত্বের কূটনীতি ও রাজনীতির এই দক্ষতা, দূরদর্শিতা তারা প্রশংসার চোখেই দেখছে। ভারতের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টিকারী কিছু ঘটনা বাংলাদেশ ও এই অঞ্চলের এবং বাইরেরও অনেক দেশকে ভাবনায় ফেলেছে।
ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের নিন্দা করে জাতিসংঘের আনা প্রস্তাবে ভারত ভোট দিতে সম্মত হয়নি। ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে টানাপোড়েনের সূচনা এখান থেকেই। রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল সংগ্রহ; মালামাল, পণ্য, খাদ্যশস্য ক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ভারত রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণে জ্বালানি আমদানি করছে। অভ্যন্তরীণ জরুরি প্রয়োজনটাই গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে ভারত। ভারত রাশিয়া থেকে দৈনিক সাত লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল আমদানি করছে। যার মূল্য পরিশোধ করা হচ্ছে ভারতীয় রুপিতে। ভারত বাংলাদেশকে ১০ লাখ টন ডিজেল সরবরাহ করছে, যা বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদনে বিপুলভাবে উপকার করবে। রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণে ভারতের জ্বালানি ক্রয়ের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে, জ্বালানির দাম কমতে শুরু করেছে। ডলারের আধিপত্যও কমছে।
কোভিডের ভয়াবহ আক্রমণের সময় ভারত যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সহযোগিতা পায়নি। সে সময় যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে করোনার টিকার কাঁচামাল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এই সময় চীন ভারত, বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোকে টিকার সরবরাহ বিপুলভাবে বাড়িয়ে দেয়। এই ঘটনা ভূ-রাজনীতিতে মার্কিন প্রভাব ক্ষতিগ্রস্ত করে চীনের অবস্থান দৃঢ় করে। চীনের সঙ্গে ভারতের বৈরিতা কমে মৈত্রীর সম্পর্ক জোরদার হচ্ছে। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ভারত চীনের পক্ষে অবস্থান নিতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আশা করেছিল, চীনের পরিকল্পনার বিপক্ষে অবস্থান নেবে ভারত। ভারত কর্তৃক রাশিয়া থেকে রুশ এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স মিসাইল সিস্টেম ক্রয় যুক্তরাষ্ট্রকে ভাবিয়ে তোলে। তারা এতে আপত্তি জানায়। ভারত রাশিয়া থেকে বাণিজ্যের আকার পাঁচ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত করতে যাচ্ছে।
এসব ঘটনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে প্রভাব ফেলছে। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে আধিপত্য টিকিয়ে রাখার স্বার্থে ভারতকে হাতে রাখার জরুরি তাগিদও বোধ করছে যুক্তরাষ্ট্র। ভারতও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক অবনতিশীল করার পক্ষে নয়। ভারত সরকার যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় এক লাখ কোটি টাকার সমরাস্ত্র ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ঘটনা দুইয়ের মধ্যকার সম্পর্ক জোরদার করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে কূটনৈতিক মহল মনে করেন। তবে তারা এও মনে করেন, বিষয়টি পর্যবেক্ষণসাপেক্ষ। ভারত চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড থেকে সরে না এলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে বড় ধরনের পরিবর্তনের সূচনাও হতে পারে। আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক-সামরিক ক্ষেত্রে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা যেখানে লক্ষ্য, সেখানে লক্ষ কোটি টাকার সমরাস্ত্র ক্রয় চুক্তি একটা প্রভাব ফেলতেই পারে।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078