ফিলিস্তিনের আগুন নিভবে কবে?

প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২৩, ০০:১৫ , অনলাইন ভার্সন
ফিলিস্তিন জ্বলছে। ইসরাইলী বোমায় বাড়িঘর ধ্বংস হচ্ছে। মানুষ মরছে। মানুষের আর্তনাদে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। বোমার কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকছে ফিলিস্তিনের আকাশ। ইসরাইলী বোমা হামলা থেকে কিছুই রেহাই পাচ্ছে না। যুদ্ধকালীন সব নিয়ম-কানুন, নীতি-নৈতিকতা সব বিসর্জন দিয়ে ইসরাইল যত্রতত্র একটার পর একটা বোমা ফেলে যাচ্ছে। স্কুল, কলেজ, মসজিদ, হাসপাতাল, গির্জা কিছুই ইসরাইলী আক্রমণ থেকে বাদ যাচ্ছে না। বাদ যাচ্ছে না শিশু-নারী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা কেউ। ফিলিস্তিনের সর্ববৃহৎ হাসপাতাল আল শিফা হাসপাতালে ইসরাইলী হামলায় সবচেয়ে বড় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। আল শিফা হাসপাতালে হামলায় শিশুসহ প্রায় ৭/৮ হাজার মানুষ মৃত্যবরণ করেছে। এ পর্যন্ত ইসরাইলী হামলায় প্রায় ৫ হাজার শিশু এবং সর্বমোট প্রায় ১২ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।

এবারের চেয়ে ফিলিস্তিনে মানবিক বিপর্র্যয় ইতিপূর্বে আর কখনো ঘটেনি। পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সার্বিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। হাসপাতালে জরুরি অস্ত্রোপচার বন্ধ রয়েছে। পানি সরবরাহ নেই। সেখানে পরিস্থিতির প্রতিদিন অবনতি ঘটছে। খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক নেই। প্রয়োজনের তুলনায় সরবরাহ খুব কম। গত ৮ নভেম্বরের ঠিকানায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ফিলিস্তিনি বন্দিদের ওপর কী অসহ্য নির্যাতনের কথা প্রকাশ পেয়েছে! প্রতিবেদনটির শিরোনাম ‘অমানবিক নির্যাতনের শিকার ফিলিস্তিনি বন্দিরা।’ বন্দিদের প্রতি যে আচরণ করা উচিৎ, যে আচরণ যুদ্ধের নিয়মে প্রত্যাশিতÑ সে নিয়মও ভঙ্গ করে চলেছে ইসরাইলী কর্তৃপক্ষ। তারা এতটাই দুর্বিনীত যে, কোন কিছুই মানতে নারাজ। প্রকাশিত সংবাদে বলা হচ্ছে যে, ‘ইসরাইলের হামলায় দিন দিন করুণ হচ্ছে গাজার পরিস্থিতি। একের পর এক হামলার অসহনীয় অবস্থায় দিন পাড় করছেন গাজার বাসিন্দারা। একদিকে গাজার বেসামরিক নাগরিক, অন্যদিকে ইসরাইলে ফিলিস্তিনি বন্দিরা।’

যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই বিশ^বাসী দেখে আসছে ইসরাইলী বর্বরতায় কীভাবে গাজায় মানবিক বিপর্যয় শুরু হয়েছে। কারাগারের বন্দিরা পর্যন্ত ইসরাইলী নির্মমতার শিকার হচ্ছে। পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। পশ্চিম তীরে গ্রেফতারও বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর আগে ইসরাইলী কারাগারে ২৩ জন বন্দি ছিল, যুদ্ধের পর তা দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায় যে, যুদ্ধের পর গাজা থেকে ইসরাইল প্রায় ৪ হাজার শ্রমিককে গ্রেফতার করেছে। পৃথকভাবে পশ্চিম তীরের পাশাপাশি পূর্ব জেরুজালেমে রাতারাতি সেনা অভিযানে আরো ১,০৭০ ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বন্দিদের ওপর ইসরাইলি নির্যাতন, মারধর, অত্যাচার সীমাহীনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্দি আইনজীবীদের একটি যৌথ বিবৃতিতে জানা যায় যে, ইসরাইলী সেনা অভিযানে নিয়মতান্ত্রিক বন্দিদের অপরাধের ভয়ঙ্কর তথ্য সব উঠে আসছে। নারীদের ওপর চালিত সহিংসতা আরো বেশি। অধিকাংশ সময় বন্দিদের কক্ষে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রাখা হয়। পানি ও খাবার থেকেও ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের বঞ্চিত রাখা হয়। ইসরাইলী সেনারা এই নির্যাতন চালাতে কুকুর, স্টাম গ্রেনেড, টিয়ার গ্যাস, লাঠিসোটা ব্যবহার করে। আন্তর্জাতিক নিয়মনীতির কোন ধারধারে না ইসরাইলী বাহিনী। রামাল্লায় সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তিনের বন্দি বিষয়ক কমিশনের প্রধান জানিয়েছেন, ‘বন্দিদের সঙ্গে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো অভূতপূর্ব ও বিপদজ্জনক। অনেক বন্দির হাত-পা, অন্যান্য অঙ্গ ভেঙে দেয়া হচ্ছে।’ তাদের ওষুধ, পানি, বিদ্যুৎ, খাদ্য বঞ্চিত রাখা হয়।

এদিকে যুদ্ধবিরতির আবেদনও বারবার প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে। কারো কথায় ইসরাইলী কর্তৃপক্ষ কর্ণপাত করছে না। তাই এই যুদ্ধের শেষ পরিণতি কী- তা কারো পক্ষে বলা মুশকিল। কিন্তু অবিলম্বে এই যুদ্ধ বন্ধ না হলে, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যে মানবিক বিপর্যয় দেখা দেবে, তা অনুমান করাও কঠিন হবে।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078