বাঁশ থেকে যখন কঞ্চি বড় হয়ে যায়! 

প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:৫৬ , অনলাইন ভার্সন

বাংলাদেশ থেকে বিদেশগামী অথবা প্রবাসীদের দেশে আসার সময় একটি বিষয় প্রায়ই সংবাদের শিরোনাম হয়-বিমানবন্দরে যাত্রীদের নানাভাবে হয়রানি করা। এ নিয়ে অনেক ভোক্তভোগি তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিমানবন্দরের সিন্ডিকেট দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে জোড়ালো প্রতিবাদ তুললেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বরং হরহামেশাই বিমানবন্দরে যাত্রীদের হয়রানির খবর ভয়ঙ্করভাবে সামনে আসছে। সাংবাদিক নজরুল মিন্টু তার ফেসবুকে ‘বাঁশ থেকে যখন কঞ্চি বড় হয়ে যায়!’এমন একটি শিরোনামে বিমানবন্দরে যাত্রী হয়রানির তথ্য তুলে ধরে  স্ট্যাটাস দেন। ঠিকানার পাঠকদের জন্য সাংবাদিক নজরুল মিন্টু র সেই স্ট্যাটাসটি হুবহু প্রকাশ করা হলো-


বাংলা ভাষায় বিখ্যাত একটি প্রবাদ ''বাঁশ থেকে কঞ্চি বড়''। অর্থাৎ আসল লোকের চেয়ে অনুচরের দাপট বেশি অর্থে এ বাক্যটি ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশের সমাজে ক্ষমতাধরদের অনুচর তথা চামচা তথা মোসাহেব তথা দালালদের দাপটে এ প্রবাদটি কতটুকু যথার্থ তা ভুক্তভোগী মাত্র জানেন। 
একসময় বাংলাদেশ থেকে গলাকাটা পাসপোর্ট দিয়ে হাজার হাজার মানুষ লন্ডন তথা ইউরোপে এসেছেন। সে সময়ের ইমিগ্রেশন অফিসাররা অনেক উদার ছিলেন। তারা মনে করতেন কোনোভাবে এ লোকটা সমুদ্র পাড়ি দিলে দেশের লাভ হবে। তাই তারা এ উদারতা প্রকাশ করতেন। 
আর আজ? আজ একজন লোককে কিভাবে আটকিয়ে অথবা আটকানোর ভান করে তার কাছ থেকে অর্থ আদায় করা যায় তার প্রতিযোগিতায় নেমেছে রক্ত চোষা বাদুড়ের দল। 
সম্প্রতি (৬ নভেম্বর ২০২৩) ঢাকা বিমানবন্দর থেকে কানাডার উদ্দেশ্যে আগত ৪২ জন যাত্রীকে আটক করে তাদেরকে বাড়িতে ফেরত পাঠিয়েছে বাংলাদেশ বিমানের এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অথচ এরা প্রত্যেকে কানাডার বৈধ ভিসা নিয়ে সিলেট ওসমানী বিমান বন্দরে তাদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ঢাকা এসে ট্র্যানজিট লাউঞ্জে টরন্টোগামী বিমানের কানেকটিং ফ্লাইটের অপেক্ষায় ছিলেন। 

বিমানের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন যে আমন্ত্রণপত্রের মাধ্যমে তারা ভিসা পেয়েছেন সেটা ছিল ভূয়া। এটা দেখার দায়িত্ব কি বিমানের, নাকি কানাডিয়ান হাইকমিশনের? হাই কমিশন যদি আমন্ত্রণপত্রটি বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করে ভিসা দিয়ে দেয় তাহলে বিমান কর্মকর্তাদের অসুবিধা কোথায়? আমরা জানি, ইন্টারন্যাশানাল ষ্টুডেন্ট ভিসা কিংবা ভিজিটর ভিসার জন্য আবেদন করতে গেলে ব্যাংক ব্যালেন্স দেখাতে হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ধার-কর্জ করে এ ফরমালিটিজ পূরণ করা হয়। একজন যাত্রী কার কাছ থেকে ধার নিয়েছে সেটাও কি তাহলে বিমানের কর্মচারীদের দেখাতে হবে? 

বিমানের লোকেরা বলছে বিয়ের আমন্ত্রণ পত্রটি ছিল ভূয়া। তারা আরও বলেন, যাদের ভিসা হয়েছে তাদের বেশিরভাগই এর আগে দেশের বাইরে কোথাও বেড়াতে যাননি। ধরে নিলাম যায়নি। এটাই তাদের প্রথম সফর। তাতে বিমান কর্তৃপক্ষের কি সমস্যা বুঝলাম না। এরকম কি কোনো আইন আছে যে আগে অন্যান্য দেশ ঘুরে এসে তবেই কানাডা যাওয়া যাবে? 

বিমান কর্তৃপক্ষ বলেছে, এর আগে যারা এভাবে গিয়েছেন তারা কানাডায় এসে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন। ধরে নিলাম কথা সত্য। সকলেই জানেন, সারা পৃথিবী থেকেই এভাবে লোকজন এসে কানাডায় আশ্রয় প্রার্থনা করে। অসুবিধা কোথায়? কার অসুবিধা? সব অসুবিধার দায়িত্ব কি বিমান একাই নিয়ে নিয়েছে? এসব যাত্রীরা তো অন্য এয়ারলাইন্সেও আসতে পারতো! তখন কি হতো? কার দায়িত্বের মধ্যে পড়তো?  শুনেছি বিমানের এসব অসাধু কর্মকর্তারা নাকি ঘুষ চেয়েছিলেন এবং যাত্রীরা সে টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় তারা এ কান্ডটি ঘটায়। আরও জঘন্য যে কান্ডটি বিমানের কর্মকর্তারা ঘটিয়েছে তাহলো তারা সিঙ্গাপুর ও দিল্লিস্থ কানাডিয় ভিসা অফিসে ইমেইল পাঠিয়েছে এসব যাত্রীদের ভিসা যাচাইয়ের জন্য। 
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশিদের জন্য সহজ প্রক্রিয়ায় ভিজিট ভিসা, ষ্টুডেন্ট ভিসার দ্বার উন্মুক্ত করেছে কানাডিয় হাইকমিশন। নিয়মিতভাবে এখন বাংলাদেশ থেকে শত শত মানুষ সুন্দর একটি স্বপ্ন নিয়ে কানাডায় আসছে। আজ বিমানের এসব অসাধু কর্মকর্তাদের কারনে কেবল ওই ৪২ জন যাত্রী নয়; লাখ লাখ বাংলাদেশি তরুনের সেই স্বপ্ন নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বিমানের এ উস্কানির ফলে কানাডিয় কর্তৃপক্ষ যদি ভিসা প্রক্রিয়া কঠিন করে তুলে তাহলে ক্ষতিটা কার হবে? 

মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাননীয় বিমান প্রতিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি- অবিলম্বে বিষয়টি তদন্ত করে বিমানের সংশ্লিষ্ট দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনা হোক। আরও দাবী জানাচ্ছি যে, অবিলম্বে সিলেটের ভুক্তভোগী ওই ৪২ জন যাত্রীকে বিনা ভাড়ায় টরন্টো পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হোক।

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078