অবরোধে চলছে না দূরপাল্লার বাস

প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৩, ১০:১৩ , অনলাইন ভার্সন
বিএনপি-জামায়াতের চতুর্থ দফার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু হয়েছে রোববার ভোর ৬টায়। গত তিন দফার অবরোধের মতো আজও গাবতলী থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। বেশিরভাগ কাউন্টার বন্ধ রয়েছে। কিছু বাস কাউন্টার খোলা থাকলেও যাত্রীর না থাকায় তারা অলস সময় পার করছেন। আজ ১২ নভেম্বর (রবিবার) সকালে গাবতলী ও শ্যামলী এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

উত্তরবঙ্গগামী বিভিন্ন বাস কাউন্টারের ম্যানেজার ও স্টাফরা জানান, অবরোধ শুরু হওয়ার পর থেকে সপ্তাহে দুই দিন বাস চলছে। তারা এই দুই দিনের বেতন পাচ্ছেন। বাকি পাঁচ দিন তাদের কোনো আয় নেই। তারা বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে একদিন ইনকাম না থাকলে সংসার চালানো দায়। সেখানে প্রায় ১৫ দিন ধরে ইনকাম নেই। সঞ্চয়ও শেষ, এখন ধারদেনা করে সংসার চালাতে হচ্ছে। আমাদের ইচ্ছা করে অবরোধের মধ্যেও বাস চালাতে। কিন্তু যাত্রী না থাকায় সেটিও পারছি না।

উত্তরবঙ্গগামী আলম ট্রাভেলসের কাউন্টার ম্যানেজার শরীফুল ইসলাম বলেন, রাস্তার আগুনের চেয়ে এখন পেটের ক্ষুধা বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাস বন্ধ মানে আমাদের কোনো মজুরি নেই,‌ ইনকাম নেই। পাঁচ সদস্যের সংসারে প্রতিদিন ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা খরচ। এভাবে চলতে থাকলে না খেয়ে মরতে হবে। তাই আমাদের দাবি, দ্রুত রাজনৈতিক সমাধান করে আমাদের বাঁচান।

রাজধানীতে কনস্ট্রাকশনের কাজ করতে বগুড়া থেকে এসেছিলেন মোহাম্মদ নাঈম। গতকাল (শনিবার) তার কাজ শেষ হয়েছে। তাই তিনি বাড়ি যাওয়ার জন্য গাবতলীতে আসেন। কিন্তু এসে দেখেন কোনো বাস ছাড়ছে না।

নাঈম জানান, রাজমিস্ত্রি কাজ করেন ১৫ দিন আগে ঢাকায় এসেছিলেন। কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় বগুড়া যেতে কাউন্টারে এসে দেখেন, কোনো বাস ছাড়ছে না। কাউন্টার থেকে সন্ধ্যার পর আসতে বলেছে। তারা বলেছে, তখন যাত্রী হলে যেতে পারবেন। না হয় আগামী শনিবার যেতে হবে।

ঢাকা থেকে রংপুর,‌ সৈয়দপুর, রানীরবন্দর, দিনাজপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া মিথিলা এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার হাসিব বলেন, সকাল থেকে আমাদের কাউন্টার খোলা আছে। ৫৪  সিটের বাসে অর্ধেক যাত্রী হলেও আমরা বাস ছাড়ব। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো যাত্রী পাইনি।

বগুড়া, নওগাঁ, গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী, গাইবান্ধা, নাগেশ্বরী, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও তেঁতুলিয়া যায় শ্যামলী পরিবহন। গাবতলী কাউন্টারের ম্যানেজার শাহ আলম জানান, আমাদের কাউন্টার সারা দিন খোলা থাকে। যারা রাতে যেতে চায় তাদের টিকিট অগ্রিম বুকিং অথবা ফোনো নম্বর রেখে দিই। সন্ধ্যার পর পর্যাপ্ত যাত্রী হলে ফোন করে জানিয়ে দেওয়া হয়‌ বাস ছাড়বে আপনার আসুন।

তিনি বলেন, অবরোধ শুরু হওয়ার পর এই কয়েকদিনে মাত্র চারটা বাস আমরা ছাড়তে পেরেছিলাম, তাও অর্ধেক যাত্রী নিয়ে। আজ মনে হয় না যাত্রী পাব।

ঢাকা থেকে মাগুরা, যশোর, সাতক্ষীরা, শ্যামনগরগামী এসপি গোল্ডেন লাইনের ম্যানেজার সুলতান বলেন, সকাল থেকে কাউন্টার খুলে রেখেছি। একজন যাত্রী তো দূরের কথা, একটা ফোনও পাইনি। একজন যাত্রী এসেছিল তাও অন্য রুটের, তাকে আমরা অন্য কাউন্টারে বসিয়ে রেখেছি। সন্ধ্যায় যদি যাত্রী পাই তাহলে তাকে ওই বাসে উঠিয়ে দেব।

তিনি বলেন, মালিক বলে দিয়েছে যাত্রী পেলে বাস ছাড়তে। কিন্তু সেই যাত্রী তো পাই না। আমরা খুব কষ্টে দিন পার করছি। মালিকের নির্দেশ, কমপক্ষে স্টাফদের খরচটা উঠাতে। সে কাউকে বেতন দিতে পারবে না।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশে হামলা, হত্যা, গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং সরকার পতনের এক দফা দাবিতে এর আগে ২৯ অক্টোবর হরতাল এবং ৩১ অক্টোবর, ১ ও ২ নভেম্বর মোট তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের শরিকরা। তারপর ৫ ও ৬ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায়, ৮ ও ৯ নভেম্বর তৃতীয় দফায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করে তারা। আর আজ থেকে শুরু হলো চতুর্থ দফায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ।

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041