বাংলাদেশ আজ কোন পথে?

প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৩:২৭ , অনলাইন ভার্সন
বাংলাদেশজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা। হরতাল-অবরোধ, জ্বালাও-পোড়াও। গাড়ি ভাঙাভাঙি। হত্যা-খুন। পুলিশের প্রাণহানি। স্টুডেন্টের মৃত্যু। দেশের এ রকম অবস্থার মধ্য দিয়ে মানুষের মনে আসতেই পারে, ‘কোন পথে দেশ?’ ‘সরকারের ফাঁদে বিএনপি’, ‘হরতাল-অবরোধে উত্তাল দেশ’, এর বাইরেও আরও বেশ কটি সংবাদ রয়েছে ঠিকানার একই সংখ্যায়। সব কটি সংবাদেরই মূল বক্তব্য একই ধারায় চলমান, অর্থাৎ দেশ আজ কোন পথে? যেসব মানুষ দেশকে ভালোবাসে, দেশ নিয়ে ভাবে, চিন্তা করে, তাদের মনেই এ প্রশ্ন অবশ্যম্ভাবীরূপে দেখা দেবে।

প্রতিদিন হরতাল-অবরোধ, আগুন, পুলিশের আক্রমণ, লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস। এক দফার আন্দোলন, শান্তি সমাবেশ। সব শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হচ্ছে দুই পক্ষেরই দাবি। অথচ দেশ অশান্ত হয়ে উঠছে। ২৮ অক্টোবর থেকে প্রতিদিন দেশ ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। দেশের মানুষের মনও আতঙ্কে অস্থির হয়ে উঠছে। যত দিন যাচ্ছে মানুষের মনের আতঙ্ক তত বাড়ছে। মানুষ অনুধাবন করতে পারছে, দেশ ক্রমাগত গাঢ় অন্ধকারের দিকে যাচ্ছে।
কোন পথে দেশ? শিরোনামের সংবাদটি শুরুই হয়েছে আশঙ্কার কথা দিয়ে। প্রথম বাক্যটিই এমন ‘কোনোভাবেই সংঘাত এড়ানো গেল না।’ বিএনপির ২৮ অক্টোবর শনিবারের মহাসমাবেশ নিয়ে সারা দেশ এখন উত্তপ্ত। বিএনপির সমাবেশে হামলা করেছে পুলিশ। বিএনপিও এর পাল্টা জবাব দিয়েছে। 

হামলা, পাল্টা হামলায় পুলিশসহ দুজন নিহত হয়েছেন। হামলা ও যুবদল কর্মী হত্যার প্রতিবাদে বিএনপি ২৯ অক্টোবর রোববার হরতাল পালন করেছে। সংবাদটিতে দাবি করা হয়েছে, হামলা, মামলা, ধরপাকড়ের মুখে হরতালের দিন বিএনপিসহ অন্যান্য দল মাঠে ছিল না তেমন। এর পরও সারা দেশেই হরতাল পালিত হয়েছে। রাস্তাঘাটে যানবাহন তেমন চলেনি। মানুষজনের চলাচলও ছিল কম। হরতালের পক্ষশক্তি মাঠে তেমন দেখা না গেলেও, নেতাকর্মীদের নিয়ে আওয়ামী লীগ মাঠে ছিল শান্তি সমাবেশের নামে। মানুষ কতটা শান্তি পেয়েছে, সে কথা বাংলাদেশের মানুষই ভালো বলতে পারবে।

স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর ‘দেশ কোন পথে?’- এ প্রশ্ন যেমন দুঃখজনক, তেমনি বেমানান। বাংলাদেশটা অবশ্যই কারও দয়ার দান নয়। কিংবা উপর থেকে টুপ করে পড়া কোনো বস্তু নয় যে পড়ল আর ঝোলায় ভরে নিলাম। অনেক দাম দিয়ে পাওয়া বাংলাদেশ। ৩০ লাখ বাঙালির জীবন, দুই লক্ষাধিক মা-বোনের সম্ভ্রম, কোটি কোটি মানুষের নিঃস্ব হওয়ার বিনিময়ে পাওয়া এই স্বাধীনতা। সেই স্বাধীনতা নিয়ে ৫৩ বছর পর এমন প্রশ্ন সত্যি কল্পনাতীত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সমগ্র বাঙালি জাতি যখন মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ল, তখনই তো স্বাধীন বাংলাদেশ কোন পথে যাবে তা ঠিক করা ছিল, ‘গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িকতা।’

এমনকি নব্বইয়ের গণ-আন্দোলনে তিন জোটের রূপরেখাতেও একটি ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষ খুব ভালোই জানে, যেকোনো একনায়ক স্বৈরশাসককে হটাতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। 
ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মুখে বাংলাদেশ কেন, পৃথিবীর সকল স্বৈরাচারের পতন ঘটেছে। বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য, সকল ক্ষমতার উৎস যে জনগণ, তাদেরকেই এমন মন্ত্রে বিভক্ত করে রাখা হয়েছে যে তাদের যেন আর কোনোভাবেই এক হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই যতই শান্তি সমাবেশ করা হোক, শান্তি আসবে না। এক দফাও বাস্তবে রূপ নেবে না। যেকোনো দাবি আদায়ে প্রথমে চাই জনতার ঐক্য।

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে মানুষের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ বিস্ফোরিত হওয়ার পূর্বেই সরকারি ও বিরোধী দলকে সমঝোতার একটি জায়গায় পৌঁছাতে হবে, যেখানে কারও অহংবোধ কাজ করবে না। বরং জনস্বার্থ ও দেশের মঙ্গলই সবার উপরে স্থান পাবে।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041