বাংলাদেশে নির্বাচনী পরিবেশ : সংকট উত্তরণের পথ

প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৩, ১১:২৪ , অনলাইন ভার্সন
বাংলাদেশে বর্তমানে রাজনৈতিক যত সংকট তার মূলে রয়েছে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন না হওয়া। রাজনীতিতে-রাজনীতিতে, দলে-দলে আস্থাহীনতা, অবিশ্বাস, অসহযোগিতার কারণেই বাংলাদেশে সুষ্ঠু, অবাধ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে পারছে না বলেই প্রাজ্ঞজনদের অভিমত। তারা মনে করেন, ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার জন্যই এ রকম অবস্থা। প্রাজ্ঞজনেরা এর সঙ্গে সঙ্গে মনে করেন, এই অবিশ্বাস, আস্থাহীনতার অবসান যত দিন না ঘটবে, তত দিন এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ লাভের কোনো উপায় নেই।

বাংলাদেশের স্বাধীনতাপ্রাপ্তির পর থেকেই বিদেশি শক্তি, বিশেষ করে পশ্চিমা শক্তি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বাংলাদেশের রাজনীতি এবং এ দেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে অধিক আগ্রহী দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। এ নিয়ে চলে আমেরিকা, ইইউসহ ইস্ট-ওয়েস্টের তাবৎ তাবৎ দেশের সরকারি-বেসরকারি সংস্থার শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা, প্রতিনিধি দলের বারবার আসা যাওয়া, বৈঠক, কথা চালাচালি। নির্বাচনের ময়দানের প্রধান দুই শরিক আওয়ামী লীগ-বিএনপির মান ভাঙানো, রাজি-গররাজি নিয়ে দেন-দেনবার। দুই দলের মধ্যে জমাটবাঁধা বরফ গলানোর ব্যবস্থা নিয়ে তারা মরিয়া।

এদিকে বিদেশিদের দৌড়াদৌড়ির কাঁটা ওঠানামায় দুটি দলের টেম্পারেচারও ওঠানামা করছে। এ দৌড়াদৌড়ির মাঝখানে জাতিসংঘও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যেমন তাদের অবস্থানের কোনো নড়চড় হয়নি, জাতিসংঘও জানিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে তাদের অবস্থানেও কোনো পরিবর্তন হয়নি। মজার বিষয় হচ্ছে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বিভিন্ন জনসমাবেশে দাপটের সঙ্গে বলে বেড়াচ্ছে, তাদের উভয়ের রাজনীতির লক্ষ্য বাংলাদেশের মানুষ। জনগণের সন্তুষ্টিই তাদের রাজনীতির সাফল্য। তারা কেউই বিদেশের প্রেসক্রিপশন নিয়ে রাজনীতি করে না। কোনো বিদেশি এসেই ভোট দিয়ে তাদের বিজয়ী করবে না। বাংলাদেশের মানুষের ভোটেই তাদের জিততে হবে এবং ক্ষমতায় যেতে হবে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সব সময়ই কথাগুলো বলে। বলার কারণ, তারা জনগণকে বোকা এবং আহাম্মক জ্ঞান করে। জনগণ যে তাদের সকল রকম ভাষারই অর্থ বোঝে, এটাই আসলে রাজনীতিবিদেরা বুঝতে পারেন না। বুঝতে পারেন না যে জনগণ তাদের চেয়ে ভালো বোঝেন। তাই তো কেউ কেউ বলেন, তলে তলে সব ভুল-বোঝাবুঝি শেষ হয়ে গেছে। কেউবা বলেন, বিপরীত কথা। কিন্তু প্রকাশ্যে ঠিক উল্টোটা বলে আত্মতৃপ্তি পেতে চান।

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হয়েছে ৭ অক্টোবর থেকে। ইতিমধ্যেই উভয় পক্ষে কয়েক হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়ছে। নারী, শিশু, বৃদ্ধ কেউই যুদ্ধাস্ত্রের আঘাত থেকে রক্ষা পায়নি। রক্ষা পায়নি গির্জা, মসজিদ, চার্চ, স্কুল, হাসপাতাল। আসলে গোলা-বারুদ, কামান-বন্দুক কখনো পক্ষ-বিপক্ষ জানে না। শুধু ধ্বংস করতে জানে। সেই যুদ্ধে আমেরিকা খোলাখুলি ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান ফিলিস্তিনের পক্ষে। এ নিয়েও বাংলাদেশে এখন রাজনীতি চলছে দুই দলের মধ্যে। সমাধানে কারও কোন ভূমিকা নেই। 

বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক সংকটের মূলে রয়েছে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ধনুকভাঙ্গা পণ নিয়ে দুই মেরুতে অবস্থান করছে। বিএনপির দাবি নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। আওয়ামী লীগের এক কথা, সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই।

এই জটিলতার জট তো খুলছেই না, বরং গিট্টুটা যেন জটিল থেকে জটিলতরই হচ্ছে। এই দাবি মানা-না মানার রশি টানাটানি করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের প্রাণ যাচ্ছে, গাড়ি পুড়ছে। বার্ন ইউনিটে দগ্ধ মানুষের চিৎকারে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। প্রতিবছর একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। সমাধান নেই। এবার সেই সমাধান খুঁজে পেতে চারদিক থেকে দৌড়ঝাঁপ। শেষে সমাধান যে কোথায় মিলবে, কে জানে। তবে বাংলাদেশের মানুষ অচিরেই এর সমাধান প্রত্যাশা করেন। রাজনীতিবিদদের মধ্যে আস্থা-বিশ্বাস ফিরে পেলে সমাধান মিলবেÑএমনটাই বিশ্বাস সকলের মধ্যে।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041