গাজায় এক বাড়িতে ৯০ জন, খাবার জোটে দিনে একবেলা

প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২৩, ১০:০৭ , অনলাইন ভার্সন
দক্ষিণ গাজার শহর খান ইউনুসে এক বাড়িতে দিন কাটছে ৯০ জনের। এর মধ্যে একটি পরিবার আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে বসবাসকারী ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত ইব্রাহিম আল আগা (৩৮), তার স্ত্রী হামিদা ও তাদের ছোট তিন সন্তান। তারা পরিবার নিয়ে ছুটি কাটাতে এসেছিলেন অঞ্চলটিতে। আর তখনই বাধে বিপত্তি। শুরু হয় ইসরাইলের অবরোধ। খান ইউনুসে তাদের পিতা-মাতার বাড়িতে আটকে পড়েন তারা। ইসরাইলের সম্ভাব্য স্থল হামলার আগে এই বাড়িতেই আশ্রয় নিয়েছেন জীবন বাঁচাতে উত্তর গাজা থেকে পালিয়ে আসা বিভিন্ন পরিবার। তাদের থাকার জায়গা না থাকায় কোনো পরিবারকেই ফিরিয়ে দেবে না বলে জানিয়েছেন ইব্রাহিম। বিবিসি। 

ইব্রাহিমের পরিবার চেয়েছিলেন ডাবলিনে জন্ম নেওয়া তাদের তিন সন্তান যেন ফিলিস্তিনি আত্মীয়দের সঙ্গে পরিচিত হয়। কিন্তু পারিবারিক মিলনের পরিবর্তে তাদের প্রতি মুহূর্ত এখন কাটছে মৃত্যুভয়ে। চার পাশে শুধু অবিরাম বোমাবর্ষণ। মিনিটে মিনিটে কেঁপে কেঁপে উঠছে পুরো বাড়ি। 

ইব্রাহিমের তিন সন্তানের বয়স আট, চার আর তিন বছর। তিনি বলেন, ‘বিস্ফোরণের শব্দ শোনামাত্রই তারা ভয় পায়। শব্দের কারণে তারা রাতে ঘুমাতে পারে না। চিৎকার করে জেগে ওঠে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত আমার বড় ছেলে সামি। কারণ কী ঘটছে তা সে বুঝতে পারে।

মাত্র চারটি শোবার ঘরের একটি বাড়িতে ৯০ জনের জীবনও খুব সহজ নয়। একই সময়ে একসঙ্গে এত মানুষের ঘুমানোও প্রায় অসম্ভব। তাই বাড়িতে থাকা সদস্যরা ঘুমাতে যান পালাক্রমে। প্রতিটি বিছানায় ঘুমান দুজন করে। 

ইব্রাহিম বলেন, ‘আমরা জেগে ওঠার পর থেকে ঘুমানোর সময় পর্যন্ত শুধুমাত্র বেঁচে থাকার চেষ্টা করছি।’ অঞ্চলটিতে পানি, খাদ্য, আর বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ। প্রতিদিন সকলে খাবার খাচ্ছেন একবেলা করে। প্রতিবেশীদের কাঠের চুলায় নিজেদের কাছে থেকে যাওয়া কিছু উপকরণ দিয়ে রুটি সেঁকে তা খেয়ে দিন পার করছেন। কেউ কেউ প্রতিদিন বাইরে গিয়ে দেখতে চেষ্টা করে টিনজাত খাবার বিতরণ হচ্ছে কিনা। 

ইব্রাহিম পেশায় একজন প্রকৌশলী। ইসরাইলের সম্ভাব্য ড্রোন হামলায় কাঁচ ভেঙে কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য ফ্রেম থেকে জানলাও সরিয়ে দিয়েছেন। 

স্বাস্থ্য সংকটেও রয়েছেন এই বাড়ির বর্তমান সদস্যরা। বসবাসকারীদের একজন গর্ভবতী নারী আর আরেকজন বয়স্ক ডায়াবেটিস পুরুষ।  শিগগিরই শেষ হয়ে যাবে তাদের ওষুধ। কেউ গুরুতর অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়ারও ব্যবস্থা নেই। 

বাড়িতে থাকা মোট ৩০ জন শিশুর মধ্যে ১০ জনের বয়সই পাঁচ বছরের কম। ইব্রাহিম বলেন, ‘বাচ্চারা সবসময় খাবার ও পানি চায়। আমরা যতটা সম্ভব তাদের দেওয়ার চেষ্টা করছি।’

গাজার পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার সময় ইব্রাহিমের পরিবার ডাবলিনে ফিরে যেতেও যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। যোগাযোগ করছেন আইরিশ দূতাবাসের সঙ্গে। গত শনিবার তারা খান ইউনুস থেকে মিসরের সঙ্গে রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং পর্যন্ত ‘ঝুঁকি নিয়ে’ যাত্রাও করেছিলেন। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের দূতাবাস তাদের ফিরে আসতে বলেছিলেন। এ বিষয়ে ইব্রাহিম বলেন, ‘আমি ক্রমেই আশা হারাতে শুরু করেছি। ভয় পাচ্ছি নিজেদের জীবনের জন্য। কারণ যে কেউ, যে কোনো জায়গায় ইসরাইলের লক্ষ্যবস্তু হতে পারে।

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041