দেবী দুর্গার আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠুক এ ধরাধাম

প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ , অনলাইন ভার্সন
‘যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেন সংস্থিতা/ নমস্তসৈঃ নমস্তসৈঃ নমস্তসৈঃ নমোঃ নমোঃ’। চণ্ডীর মহাজাগরণী পবিত্র স্তবস্তুতিতে বর্ণিল দেবী দুর্গার রূপ। দেবী দুর্গার শতরূপ। এই রূপ নিয়ে শরতে শ্বেতশুভ্র মেঘের ভেলায় চড়ে দুর্গার আবির্ভাব ঘটে এই ধরাধামে। পবিত্র মহালয়ার পবিত্র মন্ত্রে শুদ্ধ হয়ে মন্দিরে মন্দিরে অধিষ্ঠিত হয়ে পূজিত হয়ে আসছেন মানবসমাজের কল্যাণী রূপে আর অসুর সংহারী। ঢাকের আওয়াজ আর ধূপধূনোর পবিত্র গন্ধে দেবী দুর্গার আগমনী সংবাদ পাওয়া যায় শরতের সুগন্ধ ছড়ানো ম-ম পরিবেশে। শরতে দুর্গার আবির্ভাব ঘটে বলে একে শারদীয় দুর্গোৎসবও বলা হয়। বনেদি সব বাড়ির পূজার বাইরে বিভিন্ন মন্দিরে বহুজনের সম্মিলিত উদ্যোগে দুর্গোৎসবের আয়োজন হয় বলে দুর্গাপূজাকে সর্বজনীন দুর্গাপূজা উৎসব বলেও জানে মানুষ।

শরৎকালের দুর্গাপূজাকে বলা হয় ‘অকালবোধন’। বসন্তকালে এই উৎসব পালন করা হলে তাকে বলা হয় ‘বাসন্তী পূজা’। শরতের পূজা বসন্তের আগেই হয় বলেই শরতের পূজাকে অকালবোধন বলা হয়ে থাকে। যাকে বলে অসময়ে আবাহন। দুর্গাপূজা বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। এই পূজা নিয়ে হিন্দুশাস্ত্রে আছে, অসুরকুলের নেতা মহিষাসুরের নেতৃত্বে একদা স্বর্গ থেকে সব দেবতাকে বিতাড়িত করে অসুরকুল স্বর্গের দখল নেয়। তখন সব দেবতার শক্তি নিয়ে দশ হাতে লড়াই করে মহিষাসুরকে স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করে স্বর্গ উদ্ধার করে দেবতাকুলকে ফিরিয়ে দেন দুর্গা। সে কারণে দুর্গাকে দশভুজাও বলা হয়।

আরেকদিকে দেবী দুর্গার আবির্ভাব তত্ত্বে বলা হয়, ত্রেতা যুগে অসুরকুলের দাপটে যখন সমগ্র মানবজাতি তটস্থ, তখন মানবকুলকে রক্ষা করতে ইহধামে আবির্ভাব ঘটে প্রভু রামচন্দ্রের। তিনি যখন পিতৃ আদেশে বনবাসে, তখন লঙ্কেশ্বর রাবণ তার প্রিয়তমা স্ত্রী সীতাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় লঙ্কায়। লঙ্কাপুরী থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে শক্তি সঞ্চয়ের উদ্দেশ্যে শ্রীরামচন্দ্র বসন্তকালের আগে শরৎকালে দেবী দুর্গাকে আহ্বান করেন। সেই থেকে শরৎকালে দুর্গাপূজাকে অকালবোধন বলা হয়।

সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের বিশ্বাস, অসুরশক্তির বিনাশী দেবী দুর্গার পূজার মধ্য দিয়ে সমাজ থেকে সব পাপ দূর হয়ে যাবে। অশুভ সব শক্তির বিনাশ ঘটবে। মানুষের মন থেকে সব পাপ-চিন্তা, অকল্যাণ চিন্তা, হিংসা-বিদ্বেষ, হীনতা দূর হবে। ধর্ম-বর্ণ, জাত-পাত নির্বিশেষে মানুষের পরিচয় কেবলই মানুষ। কোনো পাপ মানুষকে স্পর্শ করবে না। কিন্তু আজকের কলিযুগে সেই সৎভাবনা দেখা যায় না। মানুষরূপী অসুরদের দাপটে সবকিছু তছনছ। চারদিকে ঠগ, বাটপার, প্রতারক। হিংস্রতা, দস্যুতা, লাম্পট্য। আজকে মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু এই অসুরকুলকে বিনাশে অসুরবিনাশী শক্তির আবির্ভাব জরুরি। এবারের দুর্গোৎসবে মানুষের সর্বজনীন প্রার্থনা হোক, পরিবার-সমাজ-রাষ্ট্র থেকে অসুরশক্তির বিনাশ ঘটুক।

ইতিমধ্যেই দুর্গোৎসব নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে সাজ সাজ রব শুরু হয়ে গেছে। অন্যান্যবারের মতো বাংলাদেশ হিন্দু মন্দির, দিব্যধাম কুইন্স প্যালেস, গুলশান টেরেস, ওম শক্তি মন্দির, তাজমহল পার্টি হল, সত্যনারায়ণ মন্দিরসহ নিউইয়র্ক এবং নিউইয়র্কের বাইরের বিভিন্ন মন্দিরে দুর্গাপূজা উদ্্যাপনের উদ্যোগ শুরু হয়ে গেছে। বিভিন্ন শপিংমলে কেনাকাটার ধুমও পড়েছে।

সবার জীবনে দুর্গোৎসব সফল হোক। উৎসবের আনন্দ সঞ্চারিত হোক সবার জীবনে। সমাজ ও রাষ্ট্রজীবনকেও শুদ্ধ ও সুন্দর করে তুলুক দুর্গোৎসব। দুর্গোৎসবে সকলকে প্রীতি ও শুভেচ্ছা। 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041