ইউক্রেনে যা যুদ্ধাপরাধ, গাজার ক্ষেত্রে সেটি একই নয় কেন: জর্ডান

প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২৩, ১৫:০৭ , অনলাইন ভার্সন
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের চলমান সংঘাত আরও বাড়লে তা পুরো অঞ্চলের জন্য দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে বলে জানিয়েছে জর্ডান। এছাড়া ইউক্রেনে যেটি যুদ্ধাপরাধ, গাজার ক্ষেত্রেও সেটি একই কেন হবে না, সেই প্রশ্নও তুলেছে দেশটি। এমনকি ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে মিশরে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনাও ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে জর্ডান। ১৬ অক্টোবর (সোমবার) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাস-ইসরায়েল সংঘাত আরও বাড়লে  তা পুরো অঞ্চলের জন্য দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করেছেন জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি। তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে মিশরে সরিয়ে নেওয়া তার দেশের কাছে ‘অগ্রহণযোগ্য’ হবে।

বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে নিউজআওয়ারের সাথে কথা বলার সময় জর্ডানের এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জনসংখ্যা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দেওয়া হলে এবং স্থানান্তর করা হলে তা বিদ্যমান সমস্যার সমাধান করবে না’। আর তাই গাজার ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি।

সাফাদি বলেন, শান্তি ও মর্যাদার সাথে বেঁচে থাকার অধিকারের পক্ষে জনগণকে দাঁড়াতে হবে এবং ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি উভয় নাগরিকের হত্যার নিন্দা করা উচিত বিশ্বের। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘ইউক্রেনে খাদ্য ও পানীয় প্রবেশে বাধা দেওয়া হলে সেটি যুদ্ধাপরাধ, কিন্তু গাজার ক্ষেত্রে এটি একই নয় কেন?’

মূলত মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা লঙ্ঘন এবং অবৈধ বসতিস্থাপনকারীদের অত্যাচারের জবাব দিতে গত সপ্তাহে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামের একটি অভিযান চালায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। হামাসের এই অভিযানে কার্যত হতবাক হয়ে পড়ে ইসরায়েল।

হামাসের এই হামলায় নিহত ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১৪০০ জনে পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে ২৮৬ জন সেনাসদস্যও রয়েছে বলে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে। হামাসের হামলায় আহত হয়েছেন আরও হাজার হাজার ইসরায়েলি। এছাড়া আরও বহু মানুষকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস।

পরে হামাসের হামলার প্রতিশোধে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সীমান্ত প্রাচীরের কাছে অবস্থান নিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর শত শত ট্যাংক। গাজায় অব্যাহত বিমান হামলার মধ্যেই গত শনিবার ট্যাংকগুলো গাজার কাছে নিয়ে আসা শুরু হয়। আশঙ্কা করা হচ্ছে— যে কোনও সময় গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযান শুরু হতে পারে।

এছাড়া হামাসের হামলার পর থেকেই গাজায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি, খাদ্য, পানি ও  পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে ভূখণ্ডটি অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। পরিস্থিতি এতোটাই ভয়াবহ যে, গাজার হাসপাতালগুলো চালু রাখার জন্য মাত্র ২৪ ঘণ্টার জ্বালানি অবশিষ্ট আছে বলে জানিয়ে দিয়েছে জাতিসংঘ।

অর্থাৎ গাজার হাসপাতালগুলোতে থাকা জ্বালানির মজুদ আগামী ২৪ ঘণ্টা বা এর কিছু কম বা বেশি সময়ের মধ্যে ফুরিয়ে যেতে পারে। এতে করে ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে হাজার হাজার রোগীর জীবন।

অন্যদিকে গাজায় ডক্টরস উইদাউট বর্ডারে কর্মরত ব্রিটিশ-ফিলিস্তিনি সার্জন গাসান আবু সিত্তা সতর্ক করে জানিয়েছেন, অসুস্থ লোকদের সাহায্য করার জন্য তার হাসপাতালের কর্মীদের কাছে পর্যাপ্ত সরঞ্জাম নেই।

বিবিসি বলছে, হামাসের হাতে বন্দিদের ফিরিয়ে আনতে মিশর এবং কাতারসহ অন্যান্য আরব দেশের সঙ্গে কাজ করছে জর্ডান। বন্দি থাকা বয়স্ক ও শিশুদের মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাফাদি বলেন, পর্দার আড়ালে অনেক কাজ করা হচ্ছে। তার ভাষায়, ‘আমরা আশাবাদী, আমাদের এমন পর্যায়ে পৌঁছাতে হবে যেখানে সেই বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে ও চলমান উত্তেজনাও বন্ধ হবে এবং আমরা আরও সামনে এগিয়ে যেতে সক্ষম হবো।’

জর্ডানের এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিস্তৃত অঞ্চলে চলমান এই সংঘাত আরও বৃদ্ধির বিষয়েও সতর্ক করে দেন। তিনি বলেন, ‘যদি এই সংঘর্ষ বাড়তে থাকে এবং ক্রমবর্ধমানভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার সত্যিকারের হুমকি থাকে, তাহলে আমরা এমন একটি দুঃস্বপ্নের কথা বলবো যা পুরো অঞ্চলকে গ্রাস করবে।’

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041